শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তারেকের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য উচ্চ আদালতে যাব : কাদের

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণ
যাযাদি রিপোর্ট
  ২২ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ২২ আগস্ট ২০১৯, ১০:৫৮
একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ী বেদীতে দলীয় প্রধানের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্যরা -সংগৃহীত

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার 'মূল পরিকল্পনাকারী' তারেক রহমানের সর্বোচ্চ সাজার আবেদন নিয়ে আওয়ামী লীগ উচ্চ আদালতে যাবে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে তৈরি বেদিতে বুধবার সকালে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানান ওবায়দুল কাদের। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। গ্রেনেড হামলার ঘটনায় যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমানের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য আওয়ামী লীগ উচ্চ আদালতে যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'অবশ্যই আমরা উচ্চ আদালতে যাব, উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ আমাদের আছে।' পনের বছর আগের ওই হামলার ঘটনায় গত বছর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃতু্যদন্ড এবং খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় দেন আদালত। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তারেকের সর্বোচ্চ সাজার দাবি থাকলেও যাদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে, ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের ব্যাপারে কোনো আপিল রাষ্ট্রপক্ষ করেনি বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। পেপারবুক তৈরির পর মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের 'দ্রম্নত' শুনানির জন্য আবেদন করার কথা জানিয়েছেন তিনি। দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে ১৬ জন এখনো পলাতক। তারেক এক দশক ধরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন সপরিবারে। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এই হত্যাকান্ড যারা সংঘটিত করেছে, সেই হরকাতুল জেহাদ নেতা মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে আছে, তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনেই তারা সেদিন অপারেশন পরিচালনা করেছে। কাজেই এই হত্যাকান্ডের বিচার হতে হলে, এই হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ডের বিচার হওয়া উচিত।' তিনি আরও বলেন, '১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা ও ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলের নেতা আমাদের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে প্রাইম টার্গেট করে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে সেদিন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে রক্তস্রোত বইয়ে দিয়েছিল তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।' 'ইতিহাসের এই দুটি ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা, একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা, আমরা সেভাবেই বিষয়টিকে দেখি।' ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমরা মনে করি বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে কর্মসম্পর্ক থাকা দরকার, সরকারি দল-বিরোধী দলের মধ্যে, সেই কর্মসম্পর্কের ভিত এই দুটি ঘটনার মধ্যদিয়ে চিরদিনের মতো বিনষ্ট হয়ে গেছে।' এর আগে ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে গ্রেনেড হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মহিউদ্দীন খান আলমগীর, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফরউলস্নাহ, সাহারা খাতুন, আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, একেএম এনামুল হক শামীম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপস্নব বড়ুয়া প্রমুখ। প্রতিবছর এই দিনটিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হলেও এবার তিনি বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে যাননি। তার অনুপস্থিতির কারণ দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারাও কিছু বলতে পারেননি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়াসহ চৌদ্দ দলের নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিকলীগ, যুব মহিলালীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষকলীগ, তাঁতীলীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শাখা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনও শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে