শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
অজয় রায়ের মৃতু্যবার্ষিকী

সমাজটা অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে: মেনন

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, অজয় রায়ের সারা জীবনের সংগ্রাম ছিল সহিষ্ণু সমাজের নির্মাণ। এই পরিস্থিতির মধ্যে অজয় রায় আমাদের অনুপ্রেরণা জোগান প্রতিনিয়ত
নতুনধারা
  ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ০০:১১
রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার হলে বৃহস্পতিবার আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তৃতা করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন -যাযাদি

যাযাদি রিপোর্ট বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, 'বাংলাদেশের সমাজটা ক্রমাগত অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। সামাজিক মূল্যবোধের বিপর্যয় ঘটছে। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের চেহারাটা কেমন হবে, তা ভেবে পাচ্ছি না।' মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অজয় রায়ের তৃতীয় মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মেনন। রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার হলে বৃহস্পতিবার সকালে এ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। আয়োজক তার প্রতিষ্ঠিত সংগঠন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন। ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর প্রয়াত হন বাংলাদেশের বাম-প্রগতিশীল আন্দোলনের পুরোধা-ব্যক্তিত্ব অজয় রায়। ১৯২৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জে তার জন্ম। তার বাবা প্রমথ নাথ রায় ভারতের বারানসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি ভাষার অধ্যাপক ছিলেন। ছাত্রজীবনের মার্ক্সবাদে দীক্ষিত হন অজয় রায়। জড়িয়ে পড়েন কমিউনিস্ট আন্দোলনে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন তিনি। পার্টির মুখপত্র সাপ্তাহিক 'একতা'র সম্পাদক ছিলেন অনেক দিন। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন স্নাতকে। কারাবন্দি অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অর্জন করেন মাস্টার্স ডিগ্রি। তার লেখা অনন্য একটি বই 'বাংলা ও বাঙালি'। ইতিহাস, অর্থনীতি ও রাজনীতির এমন অনেক গ্রন্থের লেখক তিনি। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর কমিউনিস্ট পার্টি বিভক্ত হয়। ১৯৯৮ সালে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন তিনি। আমৃতু্য সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন অজয় রায়। ২০১০ সালে 'সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চ' প্রতিষ্ঠা করেন। আজ অজয় রায়ের মৃতু্যবার্ষিকীতে তার অসাম্প্রদায়িক আদর্শের কথা স্মরণ করেন গুণমুগ্ধ ভক্ত, রাজনীতি ও সামাজিক নানা ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা। শুরুতেই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানস্থলে রাখা তার ছবিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। স্মরণ অনুষ্ঠানে বর্তমান বাংলাদেশের সামাজিক অবস্থা নিয়ে হতাশার নানা চিত্র তুলে ধরে রাশেদ খান মেনন বলেন, 'অজয় রায়ের সারা জীবনের সংগ্রাম ছিল সহিষ্ণু সমাজের নির্মাণ। এই পরিস্থিতির মধ্যে অজয় রায় আমাদের অনুপ্রেরণা জোগান প্রতিনিয়ত।' অজয় রায়ের স্মৃতিচারণা করেন তার বন্ধুভাজন সহযোগী সাবেক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক। সমাজের দরিদ্র মানুষের বিপদে-আপদে অজয় রায় কীভাবে প্রত্যক্ষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন, সেসব ঘটনা তুলে ধরেন তিনি। এবাদুল হক বলেন, মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল অকৃত্রিম। অনেক রাজনৈতিক নেতাকেই দেখেছি, ক্ষমতায় গিয়ে মানুষের জন্য কিছু করার কথা বলতেন সবসময়। অজয় রায় ক্ষমতায় না থেকেও মানুষের কল্যাণে ব্রতী ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, মুক্তিযোদ্ধা মুকুল চৌধুরী প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে