যাযাদি ডেস্ক
হাসিনা মহিউদ্দিনকে প্রতিনিধি সভার মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়ার পর ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলার মধ্যেই আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, ছোট একটি ঘটনাকে বড় করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার প্রথম প্রহরে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, একটা 'জিরোকে একশ বানানোর অপচেষ্টা' করা হচ্ছে।
রোববার চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের এক প্রতিনিধি সভার মঞ্চে নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিনসহ কয়েকজন উঠার পর তাদের নামিয়ে দেওয়া হয়।
মঞ্চে কারা বসবেন, তা আগেই নির্ধারিত ছিল বলে তখন বলেছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র নাছির।
হাসিনা মহিউদ্দিন চট্টগ্রামের তিনবারের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী।
হাসিনা মহিউদ্দিনকে নামিয়ে দেওয়ার ওই ঘটনায় রোববার রাতে বিক্ষোভ করে মহিউদ্দিন সমর্থকরা। সোমবার তারা সমাবেশ করে হাসিনার কাছে ক্ষমতা চাইতে নাছিরকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হয়।
তার প্রায় সাত ঘণ্টা পরই ফেসবুকে ভিডিও বার্তা নিয়ে আসেন নাছির। ৩ মিনিট ২১ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যর ভিডিওটির সঙ্গে কয়েক লাইন লিখিত বক্তব্যও আছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, 'অপরাজনীতি থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। আসলে যে বিষয়টাতে ফোকাস করা হয়েছে, সেখানে তেমন কিছুই ঘটেনি। সভা মঞ্চে কারা বসবে, তা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাথে কথা বলেই ঠিক করা হয়েছে। এখানে আমি বা মহানগর আওয়ামী লীগের কোনো কিছু করার ছিল না। প্রটোকল অনুযায়ী সবকিছু করা হয়েছে।'
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে নাছির বলেন, 'আমি সাংবাদিক ভাইদের অনুরোধ করব, আপনারা আমাদের দেশ ও সমাজের দর্পণস্বরূপ। কোনো কিছু নিয়ে নিউজ করার আগে ভালোভাবে যাচাই করে নেবেন, যাতে পরবর্তীতে কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয়।'
ভিডিও বার্তার শুরুতে নাছির বলেন, 'আসলে এখানে কোনো কিছুই হয় নাই। একটা জিরোকে একশ বানানোর একটা অপচেষ্টা বলব এটা। যারা করেছে, কেন করেছে, কী কারণে করেছে... '
'আমি তো মনে করি গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা স্বাভাবিক। অহেতুক যে সংবাদটা... এটা সমাজের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।'
প্রতিনিধি সভার মঞ্চে কারা বসবেন সে বিষয়ে পূর্ব সিদ্ধান্ত ছিল দাবি করে তিনি বলেন, 'যেভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কেন্দ্র থেকে বলা হলো, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বসবেন। মাননীয় মন্ত্রীবর্গ, মাননীয় সংসদ সদস্যরা বসবেন, আর এখানে ছয়টা জেলার সংসদ সদস্য, ছয়টা জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বসবেন।'
'সেখানে আমাদের তিনটা জেলার (নগর, উত্তর, দক্ষিণ) পক্ষ থেকে আবেদন করা হলো-আমাদের যারা সহ-সভাপতি উনারা জ্যেষ্ঠ নেতা, যেহেতু সংসদ সদস্যরা উপরে বসবেন অনেকে বিব্রত বোধ করেন, কয়েকজন সহসভাপতিও সংসদ সদস্য আছেন, তখন কেন্দ্র থেকে বলা হলো- ঠিক আছে। আর আমাদের মধ্যে আবার কথা হলো যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তিনটা জেলার আসন থাকা সাপেক্ষে তারা বসবেন। আবার দক্ষিণ থেকে বলা হলো যে যুগ্ম সম্পাদক, এটা যদি তোমরা বসাতে চাও, বসাও। এই সিদ্ধান্ত।'
'আর সিদ্ধান্ত হলো যে স্টেজ নিয়ন্ত্রণ, এখানে সম্পাদকমন্ডলীর কেউ দায়িত্ব পালন করবেন। তারা করেছেন। আমার দায়িত্ব তো সভা পরিচালনা করা।'
ওই সভার প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের সোমবার ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি যদি ঘটনা ঘটার সময় জানতেন, তাহলে প্রয়াত নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রীকে সম্মান জানিয়ে সভামঞ্চে বসাতেন।