শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঘণ্টাখানেক লাইনে দাঁড়ালে মিলছে ৪৫ টাকার পেঁয়াজ

যাযাদি রিপোর্ট
  ১২ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১২ নভেম্বর ২০১৯, ০০:১৪
দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করে স্বল্পমূল্যে টিসিবি থেকে পেঁয়াজ কিনছেন সাধারণ মানুষ। ছবিটি সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে তোলা -যাযাদি

বেড়েই চলছে পেঁয়াজের দাম। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম সব রেকর্ড ভেঙেছে। খুচরা বাজারে এখন পেঁয়াজের কেজি ১১০ থেকে ১৫০ টাকা। তাই ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ কিনতে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘলাইনে অপেক্ষা করে ৪৫ টাকায় কিনছেন টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) পেঁয়াজ। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা যায়, পেঁয়াজ কিনতে মানুষের লম্বা সারি। প্রায় এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ালে মিলছে পেঁয়াজ। তবে পেঁয়াজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্রেতারা। ঘণ্টাখানেক লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর দুই কেজি পেঁয়াজ কিনতে পেরেছেন প্রেসক্লাব এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দীন। তিনি বলেন, 'দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো সমস্যা হয়নি। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা দরে কেনা যাচ্ছে। কিন্তু দুই কেজি পেঁয়াজ নিলে ১০০ টাকা নিচ্ছেন তারা। তবে দুই কেজির চেয়ে কিছু বেশি পেঁয়াজ দিয়ে দিচ্ছেন।' পেঁয়াজের মান ভালো নয় বলে দাবি করছেন ক্রেতারা। পেঁয়াজ কেনা শেষে এক ক্রেতা বলেন, 'পেঁয়াজের মান আছে মোটামুটি, তবে অত ভালো না। দোকান থেকে তো হাতে বেছে নেয়া যায়, কিন্তু এখানে তো সেই সুযোগ নেই। পচা-ভালো সব একবারেই দিয়ে দেয়। এটা বাজারে হয়তো ১০০ বা ৯০ টাকা হবে। এখানে ৪৫ টাকায় পাচ্ছি। ৫০ বা ৫৫ টাকা সঞ্চয় হচ্ছে আমার। এই আর কী।' পেঁয়াজ কিনতে আসা সেগুনবাগিচার বাসিন্দা আয়শা বেগম বলেন, পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করা যায় না। এটি প্রতিদিনই লাগে। বাজারে পেঁয়াজের কেজি দেড়শ টাকা। এত টাকা দিয়ে পেঁয়াজ কেনা আমাদের মতো গরিবের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই লাইনে দাঁড়িয়েছি। এখানে ৪৫ টাকা দরে ১০০ টাকার পেঁয়াজ কিনলাম। ২ কেজি ২০০ গ্রাম দিয়েছে। তবে পেঁয়াজের মান খুব ভালো না। তারপরও কিছু করার নেই, কিনতেই হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিসিবির মুখপাত্র মো. হুমায়ুন কবির বলেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে ৩৫টি ট্রাকে ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। একজন ডিলার কেজিপ্রতি ৪৫ টাকা দরে প্রতিদিন এক হাজার কেজি (এক টন) পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। পেঁয়াজের মান নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে টিসিবির এ কর্মকর্তা জানান, দেশি ও আমদানি দুই ধরনের পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়। দেশি পেঁয়াজের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। আমদানি পেঁয়াজ দেশির চেয়ে কিছুটা নিম্নমানের। তবে টিসিবির পক্ষ থেকে বাজারের সবচেয়ে ভালো আমদানি পেঁয়াজ সরবরাহ করা হচ্ছে। এদিকে টিসিবির ডিলার প্রতিষ্ঠান লাভলী এন্টারপ্রাইজের বিক্রেতা সফিক বলছিলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্য ৪৫ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করছি। প্রতিজন ক্রেতার কাছে এক কেজি বিক্রির কথা থাকলেও পাঁচ টাকা খুচরা সবসময় থাকে না; তাই ৫০ টাকার অর্থাৎ এক কেজি ১০০ গ্রাম পেঁয়াজ বিক্রি করছি। সকাল থেকেই দীর্ঘলাইন। ক্রেতার চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি। পচা পেঁয়াজ দেয়া হচ্ছে ক্রেতাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কয়েকটি বস্তায় কিছু পেঁয়াজ নষ্ট থাকে, এতে আমাদের কিছু করার থাকে না। গত মাসে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয় প্রতিবেশী দেশ ভারত। এর পরপরই হু হু করে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। আমদানি করা পেঁয়াজ আজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি। মিয়ানমারের পেঁয়াজ কেজি ৯০-১০০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১৪০-১৫০ টাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে