শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মেট্রোরেলে ৭০ কোটি টাকা সাশ্রয়

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৪ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ২৪ জানুয়ারি ২০২০, ০০:১১
দ্রম্নত এগোচ্ছে মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ -ফাইল ছবি

সড়কজুড়ে দৃশ্যমান হচ্ছে স্বপ্নের মেট্রোরেল। অধিকাংশ পিলারের উপরে বসছে স্প্যান। প্রকল্পটি ৮টি প্যাকেজে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্যাকেজ-১ এর আওতায় ডিপো এলাকায় ভূমি উন্নয়নকাজ শুরু হয় গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে। চলতি বছরেই এ কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। প্যাকেজ-১ এ ৭০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। মেট্রোরেলের ডিপো এলাকায় ভূমি উন্নয়নের কাজটি শতভাগ শেষ করে এ টাকা সাশ্রয় করেছে জাপানের টোকিও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। এ কাজে মোট ব্যয় ছিল ৫৮০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ টাকার মধ্য থেকে ৭০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা সাশ্রয় করেছে জাপানি কোম্পানি। সব চ্যালেঞ্জ জয় করে প্রতিনিয়তই এগিয়ে যাচ্ছে মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন বর্ষ ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মেট্রোরেল প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে। বর্তমানে সাড়ে ৮ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে স্বপ্নের মেট্রোরেল প্রকল্প। এক প্যাকেজ শতভাগ শেষ করে টাকা সাশ্রয়ের নতুন নজির তৈরি করেছে জাপানি কোম্পানি। এতে সংশ্লিষ্টরাও স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। এর আগেও টাকা ফেরত দেওয়ার নজির ?সৃষ্টি করেছে জাপানি কোম্পানি। দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু নির্মাণ এবং বিদ্যমান সেতু পুনর্বাসন প্রকল্প ব্যতিক্রমী একটি নজির তৈরি করেছে। জাপানি কোম্পানির বাস্তবায়িত প্রকল্পটি যেমন নির্ধারিত সময়ের ৬ মাসের বেশি সময় আগে শেষ হয়েছে, তেমনি প্রকল্প দুটির বরাদ্দ থেকে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। জাপানি কোম্পানি সাশ্রয় হওয়া টাকা সরকারকে ফেরতও দিয়েছে। একইভাবে জাপানি কোম্পানি মেট্রোরেলে সাশ্রয় হওয়া টাকা প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দিয়ে দেবেন, যা দিয়ে নির্মিত হবে মেট্রোরেলের বাড়তি রুট। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার বাড়ছে। এ কাজে ১ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা বাড়তি ব্যয় হতে পারে। জাপানি কোম্পানির সাশ্রয় হওয়া টাকা মেট্রোরেলের বাড়তি রুটে ব্যয় করা হবে। একটি মাত্র প্যাকেজের আওতায় ৭০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। মেট্রোরেল মোট ৮টি প্যাকেজে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অন্যান্য প্যাকেজেও টাকা সাশ্রয় হতে পারে। এই সাশ্রয় হওয়া টাকা দিয়ে বাড়তি রুট নির্মিত হয়ে যাবে। তাই মতিঝিল থেকে কমলাপুর রুট নির্মাণের জন্য নতুন করে প্রকল্পের আওতায় ব্যয় বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে মেট্রোরেল প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) খান মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, প্যাকেজ-১ এর কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। এ কাজে জাপানের টোকিও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ৭০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা সাশ্রয় করেছে। এটা অত্যন্ত খুশির খবর। আমরা আশা করছি অন্যান্য প্যাকেজেও টাকা সাশ্রয় হবে। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পযর্ন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য বাড়ছে। এখানে বাড়তি খরচ হবে। আশা করছি অন্যান্য প্যাকেজ থেকে সাশ্রয় হওয়া টাকা দিয়েই বাড়তি রুটের কাজ করতে পারব। তাই মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য বাড়লেও নতুন করে মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় বাড়বে না। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার মেট্রোরেলের কাজ চলমান। এর সঙ্গে আরও ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার বাড়তি রুট যুক্ত হবে। ফলে মেট্রোরেলের মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়াচ্ছে ২১ দশমিক ২১ কিলোমিটার। ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে। সার্বিক অগ্রগতি ৪০ দশমিক ০২ শতাংশ প্রথম পর্যায়ে নির্ধারণের জন্য উত্তরা তৃতীয় ফেইজ থেকে আগারগাঁও পযর্ন্ত অগ্রগতি ৬৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৩৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম এবং রোলিং স্টক (রেল কোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি ২৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। সাড়ে ৮ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট দৃশ্যমান হয়েছে। মেট্রোরেলের মক আপ (গড়পশ টঢ় ) ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর উত্তরা ডিপোতে এসে পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসরণে মতিঝিল থেকে কমলাপুর বর্ধিত করার জন্য সোশ্যাল সার্ভে চলছে। চলতি বছরের ফেব্রম্নয়ারি মাসে সার্ভে কাজ শেষ হবে। তবে বাড়তি রুট সাশ্রয় হওয়া টাকা দিয়েই নির্মিত হবে। ঢাকার যানজট নিরসন ও নগরবাসীর যাতায়াত আরামদায়ক, দ্রম্নততর ও নির্বিঘ্ন করতে ২০১২ সালে গৃহীত হয় মেট্রোরেল প্রকল্প। এই এলাকায় বসবাসকারী লাখো নগরবাসী মেট্রোরেল ব্যবহার করে গন্তব্যে যাতায়াত করতে পারবেন। প্রকল্পে ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রত্যেকটি ট্রেনে থাকবে ৬টি করে কার। যাত্রী নিয়ে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ছুটবে এ ট্রেন। উভয় দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহনে সক্ষমতা থাকবে মেট্রোরেলের। প্রকল্পের মোট ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার মধ্যে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে