টেস্ট সিরিজের প্রথম চার ম্যাচের তিনটিতে জিতে সিরিজ আগেই নিশ্চিত করে রেখেছিল জো রুটের ইংল্যান্ড। ওভালে সিরিজের শেষ ম্যাচের যা গুরুত্ব ছিল দলের সাবেক অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুকের বিদায়ী টেস্ট হওয়ায়। কুকের বিদায়টাও জয় দিয়েই উদযাপন করার প্রায় সব প্রস্তুতিই সেরে ফেলেছে ইংলিশরা। ৪৬৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৬৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে সিরিজের চতুথর্ পরাজয়ের মুখে বিরাট কোহলির ভারত। যদিও সফরকারী দলের ওপেনার লোকেশ রাহুলের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে কিছুটা হলেও প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। ওভালে পঞ্চম দিনের লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার আগে লোকেশ ১০৮ রানে ঋষভ পান্ত ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগারে পা রাখা হয়নি অ্যালেস্টার কুকের। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে তাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারলেন না । বিদায়ী টেস্টে সেঞ্চুরি তুলে নিলেন কুক। এমনকি তিন অঙ্কের দেখা পেলেন ইংলিশ অধিনায়ক জো রুটও। তাদের ব্যাটে ভর করে ওভালে পঞ্চম টেস্টে জয়ের পথে রয়েছে ইংল্যান্ড। কারণ আগের দিনে সফরকারী ভারত ৫৮ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলে প্রথমসারির তিন ব্যাটসম্যানকে। যেখানে তাদের জয়ের লক্ষ্যটা ছিল ৪৬৪! আর তাই জয়ের জন্য পঞ্চম ও শেষ দিন আরও ৪০৬ রান চাই ভারতের। অপরদিকে নিজেদের সফলতম ব্যাটসম্যানকে জয় দিয়ে বিদায় জানাতে ইংলিশদের চাই শেষ ৭ উইকেট।
এমন সমীকরণকে সামনে রেখে খেলতে নেমেছিল লোকেশ রাহুল-আজিঙ্কা রাহানে। লোকেশকে নিয়ে ভালোই প্রতিরোধও গড়ে তোলেন ভারতীয় সহ-অধিনায়ক। কিন্তু ব্যাক্তিগ ৩৭ রানে মঈনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাঝঘরে ফিরে যান রাহানে। এরপর হনুমা উইকেটে এসে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি। বেন স্টোকসের বলে শূন্য রানে আউট হলে দলীয় ১২১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে ভারত। এরপরই ঋষভ পান্তকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান লোকেশ। এমনকি টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরিটিও তুলে নিলেন সফরকারী দলের এই ডানহাতি ওপেনার। লাঞ্চ বিরতিতেক যাওয়ার আগে লোকেশ-ঋষভ জুটিতে এসেছে মূল্যবান ৪৬ রান। ভারতকে জিততে হলে এখনো ২৯৭ রান করা চাই। অপরদিকে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন আর মাত্র ৫টি উইকেট।
এর আগে ওভালে চতুথর্ দিনে মাত্র ১ রানে দুই উইকেটের পতনে উইকেটে আসেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহিল। লক্ষ্য পাহাড় সমান, সান্ত¡নার জয় পেতে করতে হবে ৪৬৪ রান। ইতিহাস গড়ে জয় না পেলেও কোহলির ব্যাটে ঘুরে দঁাড়ানোর আশাই করছিল ভারত। কিন্তু স্টুয়াটর্ ব্রডের করা মুখোমুখি প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বসেন কোহলি। দীঘর্ ৪ বছর পর ফেরেন ইনিংসের প্রথম বলেই। সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারের তৃতীয় গোল্ডেন ডাক এটি কোহলির। এর আগে ক্যারিয়ারের সবশেষ গোল্ডেন ডাকটাও ইংল্যান্ড সফরেই পেয়েছিলেন তিনি। সেবার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে লডের্স লিয়াম প্লাংকেটে বোলিংয়ে ফিরেছিলেন প্রথম বলেই। আর ২০১০ সালে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ম্যাচে বেন হিলফেনহাসের ওভারে প্রথমবারের মতো গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান কোহলি।
সাত বছর ও ৭১ টেস্টের ক্যারিয়ারে কোহলি সবমিলিয়ে শূন্য রানে ফিরেছেন ৭ বার। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টেই ধরা পড়েছিলেন শূন্য রানে। এরপর কোহলিকে শূন্য রানে ফেরানো হয়ে পড়ে কঠিনতম কাজের একটি। যার ফলে বাকি টেস্টে তিনি শূন্য রানে আউট হন মাত্র ৬ বার। ওভালে চলতি টেস্টের আগে সবশেষবার শূন্য রানে ফিরেছিলেন ১০ টেস্ট আগে শ্রীলংকার বিপক্ষে।