শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইংল্যান্ড এখন এক সুখী পরিবার!

আমরা সবাই সবার সঙ্গে আছি, যে কারণে আমরা ভালো করতে পারছি। সবাই প্রস্তুত, এখানে কোনো ভেদাভেদ নেই, নেই কোনো চক্র। এখন আমরা একটা পরিবারের মতো এবং আমাদের মধ্যে রয়েছে দৃঢ়বন্ধন
ক্রীড়া ডেস্ক
  ০৩ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
জেসে লিনগাডর্

প্রথমবার রোলারকোস্টার রাইড নাকি রূপকথাকেও হার মানায়। সত্যিই তাই। বিষয়টার সত্যতা প্রমাণে সেন্ট পিটাসর্বাগের্ গত শুক্রবার ইংল্যান্ডের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন। কোচ গ্যারেথ সাউথগেট বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া এই ইংল্যান্ড স্কোয়াডে সত্যিই বিশেষ মাত্রা যোগ করেছেন। বড় টুনাের্মন্টে ইংল্যান্ড ব্যথর্, রাশিয়া বিশ্বকাপে এমন অপবাদ দূরে সরিয়ে রেখে ইংলিশ ফুটবলাররা বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। দলটি যেন এক সুখী পরিবার!

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল আর আসের্নালকে অন্যপথে নিয়ে গেছেন ড্যানি ওয়েলব্যাক, ট্রেন্ট অ্যালেক্সান্ডার-আরনল্ড, জডার্ন হেন্ডারসন, মাকার্স রাশফোডর্রা। জেসে লিনগাডর্ জানিয়েছেন, রোলারকোস্টার রাইডে তার সঙ্গে ছিলেন এরাও। রাইডের শব্দটা রীতিমতো হাস্যকর ঠেকেছে তাদের কাছে। তবে সবাই বেশ মজা পেয়েছেন। সময়টা উপভোগ করেছেন একসঙ্গে। অথচ রিও ফাদির্নান্দ, স্টিভেন জেরাডর্, ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পাডের্দর ‘সোনালি প্রজন্ম’ ইংল্যান্ডের ড্রেসিংরুম থেকে ক্লাব ফুটবলের দ্বৈরথটাকেই দূরে ঠেলতে পারেননি এবং সেটাই বারবার দলের ব্যথর্তার কারণ হয়ে দঁাড়িয়েছে।

এই দলটা ভিন্ন। এই দলের খেলোয়াড়রা একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রোববার লিংগাডর্ যে দলটাকে ব্যাখ্যা করলেন ‘পরিবার’ বলে। তরুণ ফরোয়াডর্ জানালেন, তারা এখন ‘নব বিপ্লবের’ অংশ। বললেন, ‘আমার মতে, ক্লাবের দ্বৈরথটাকে একটা পাশে সরিয়ে রাখতে হবে। আমরা সবাই সবার সঙ্গে আছি, যে কারণে আমরা ভালো করতে পারছি। সবাই প্রস্তুত, এখানে কোনো ভেদাভেদ নেই, নেই কোনো চক্র। এখন আমরা একটা পরিবারের মতো এবং আমাদের মধ্যে রয়েছে দৃঢ় বন্ধন।’

গ্রæপ পবের্র দুই ম্যাচে ভালোই আলো ছড়িয়েছেন লিংগাডর্। বেলজিয়ামের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে তাকে বিশ্রাম দিয়েছিলেন সাউথগেট। আজ শেষ ষোলোয় কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। ওই ম্যাচে লিংগাডের্র খেলা নিশ্চিতই। এই ম্যাচেও ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চাইবেন তিনি। তার মতে ম্যাচে আলো ছড়াতে পারেন অ্যাশলে ইয়ংও, ‘ম্যাচের আগে আমি শুধু নিজের বিষয়ে কথা বলতেই পছন্দ করি, এটা এজন্যই। তবে বাম প্রান্তে অ্যাশলে ইয়ং প্রথমেই আলোচনায় আসবে। তার বঁা পা তাকে দ্রæত শট নিতে সহায়তা করে, বাম হাত থাকে শীষের্। বাম প্রান্তে সে সবই করতে পারে।’

কলম্বিয়ার মতো বিপক্ষে ভালো করতে নিজেদের পারফরম্যান্সে আরও উন্নতি ঘটানোর প্রয়োজনীয়তা বোধ করছেন লিংগাডর্। নিজেদের খেলার মান আরও একধাপ উপরে তোলার তাগিদ দিয়েছেন এই মিডফিল্ডার, ‘আমরা অবশ্যই আরেকধাপ এগিয়ে যেতে পারি। উন্নতি ছাড়া সেখানে যেতে চাইলে আমরা মানিয়ে নিতে পারব না। সেটা আরেকটা পযার্য়। অনুশীলনে সবাইকে উজ্জ্বলই দেখা গেছে। সবাই ১০০ ভাগ দিচ্ছে এখানে। কলম্বিয়া একটি গ্রেট দল। শারীরিকভাবেও একটা কঠিন দল এবং ফ্যালকাও একজন গ্রেট ফিনিশার। বক্সের আশপাশে সে ভয়ঙ্কর।’

তাই বলে ভয় পাচ্ছে না ইংল্যান্ড। কলম্বিয়াকে কীভাবে সামলাতে হবে, কীভাবে রুখতে হবে ফ্যালকাওকে, সেটা বেশ ভালো করেই জানা আছে সাউথগেটের শিষ্যদের। এমন দাবিই করলেন লিংগাডর্, ‘আমাদের দলেও তাকে (ফ্যালকাও) সামলানোর মতো খেলোয়াড় আছে। আমাদের কোয়ালিটি এবং আক্রমণও সমস্যার কারণ হতে পারে। আমরা জানি, আমরা তৈরি এবং আমাদের আরও একটি ধাপ আছে।’

বাছাইপবের্ দারুণ পারফরম্যান্স দেখানোর পরও এই ইংল্যান্ড নিয়ে এতটা মাতামাতি ছিল না। তাদের কেউ ফেভারিটের তালিকাতেই রাখেনি। তবে গ্রæপের প্রথম দুই ম্যাচেই পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছে হ্যারি কেনের নেতৃত্বাধীন দলটি। দলীয় কোচ সাউথগেট তাই জোর গলাতেই বলে দিলেন, ‘যেভাবে ইংল্যান্ড দল পারফমর্ করছে, তাতে সবার উপলব্ধিটাই পাল্টে গেছে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে