শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভাগ্যের ছেঁায়াতেই এই জয়: অ্যাকিনফেভ

ক্রীড়া ডেস্ক
  ০৩ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
রাশিয়াকে কোয়াটার্র ফাইনালে তোলার পর এভাবেই উচ্ছ¡াসে মাতেন গোলরক্ষক ইগর অ্যাকিনফেভ Ñওয়েবসাইট

বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবার কোয়াটার্র ফাইনালে উঠেছে রাশিয়া। অথচ ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ৭০ নাম্বারে থাকা দলটির দ্বিতীয় পবের্ ওঠা নিয়েই সন্দিহান ছিলেন সবাই। লুঝনিকি স্টেডিয়ামে তারাই নিশ্চিত করে ফেলল শেষ আটে খেলা। নতুন এক ইতিহাসই রচনা করেছেন স্তানিসলাভ চেরচেশভের শিষ্যরা। সেটাও স্পেনের মতো পরাক্রমশালী দলকে হারিয়ে! রুশদের এমন কীতির্র মূলে ছিলেন গোলরক্ষক ইগর অ্যাকিনফেভ। তিনি অবশ্য এই জয়ে নিজের কৃতিত্ব দেখছেন না! তার মতে, ভাগ্যের ছেঁায়া পেয়েই কোয়াটার্র ফাইনালে উঠেছে রাশিয়া।

টাইব্রেকার মানে গোলরক্ষকের কঠিন এক পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় কখনো কখনো গোলরক্ষক নিজেই হয়ে যান পরীক্ষক, চরম এক পরীক্ষায় ফেলে দেন প্রতিপক্ষের হয়ে শট নিতে আসা ফুটবলারকে। তখন দেখা যায়, যিনি শট নিতে আসেন তিনি হয়ে যান বিভ্রান্ত। গোলরক্ষক তখন নিজে তো কঠিন পরীক্ষায় পাস করে ফেলেনই, একই সঙ্গে দলকেও বাঁচিয়ে দেন কঠিন বিপদের হাত থেকে। স্পেনের বিপক্ষে রোববার রাশিয়ার গোলরক্ষক ইগর অ্যাকিনফেভ তেমনই এক পরীক্ষক হয়ে উঠলেন। যার সামনে পরাস্ত হয়েছে ২০১০ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেন।

শেষ ষোলোর ম্যাচে স্পেনের বিপক্ষে নিধাির্রত সময়ে খেলা ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। পরে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। আর সেখানে নিজের সামথের্্যর প্রমাণ দিলেন অ্যাকিনফেভ। টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে জয় পায় বিশ্বকাপ আয়োজকরা। স্পেনের বিপক্ষে পেনাল্টি শ্যুটআউটে দুদার্ন্ত দুটি সেভ করে অপ্রত্যাশিত এমন অজের্ন সৃষ্টিকতাের্ক ধন্যবাদ দিয়ে আকিনফেভ বলেছেন, ‘সৃষ্টিকতাের্ক অশেষ ধন্যবাদ। আমরা ভাগ্যবান ছিলাম, শেষ পযর্ন্ত এটাই আমাদের কাজে দিয়েছে। ভাগ্যের ছেঁায়াতেই এসেছে এই জয়।’

নিধাির্রত সময়ে একবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই খেলেছে রাশিয়া। ইসকো-কস্তা-অ্যাসেনসিওদের নিয়ে গড়া আক্রমণভাগকে তারা কোনো গোল করতে দেয়নি। নব্বই মিনিটে স্কোরলাইন ১-১ হয়েছে শুধু রাশিয়ার কল্যাণে! অথচ ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর প্রথম দল হিসেবে এক ম্যাচে (অতিরিক্ত সময়সহ) হাজারের ওপর পাস খেলেও গোল পায়নি স্প্যানিশ আক্রমণভাগ।

স্বাগতিক ডিফেন্ডার সেগের্ই ইগনাশেভিচের আত্মঘাতী গোলের সুবাদে ১২ মিনিটে এগিয়ে যায় স্পেন। কিন্তু এর ২৮ মিনিট পর পেনাল্টি থেকে আতের্ম জিউবার গোলে সমতায় ফিরেছে রাশিয়া। এরপর আর কোনো গোল না হওয়ায় নকআউট পবের্র এই ম্যাচ দিয়ে প্রথমবারের মতো খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও স্পেনকে বেঁধে রাখে রাশিয়া। দারুণ কিছু সেভ করে রদ্রিগো-আসপাসদের হতাশায় ডুবান অ্যাকিনফেভ। নিজের দলের রক্ষণাত্মক কৌশল নিয়ে এই গোলরক্ষক বলেছেন, ‘দ্বিতীয়াধের্ আমরা ডিফেন্ড করার চেষ্টা করছিলাম। আশা করছিলাম যেন ম্যাচটি টাইব্রেকারে যায়। এটাই হলো শেষ পযর্ন্ত। তাইতো সৃষ্টিকতাের্ক ধন্যবাদ।’

রাশিয়ার ফুটবল বিশ্লেষকদের অনেকেই এই অ্যাকিনফেভকে সোভিয়েত ইউনিয়নের ষাট কিংবা আশির দশকের লেভ ইয়াছিন বা রেনাত দাসায়েভের যোগ্য উত্তরসূরি বলে মনে করেন। তিনি যখন আলো ছড়াচ্ছেন তখন তাকে নিয়ে রুশদের এমন উল্লাস করাটাই স্বাভাবিক। একই সঙ্গে রুশরা স্বস্তিতে বিশ্বকাপের সুষ্ঠু আয়োজন নিয়েও। অ্যাকিনফেভই যেমন বলে দিলেন, ‘আমরা চমৎকারভাবে ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন করেছি। আমার বিশ্বাস, শুধু রুশরাই না, বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ফুটবল-ভক্তদেরও আমাদের আতিথেয়তা ভালো লেগেছে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে