ইয়াসির শাহর ডেলিভারিটা কাভারে করতে চেয়েছিলেন জন হল্যান্ড। কিন্তু বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ল দ্বিতীয় ¯িøপে দঁাড়ানো হারিস সোহেলের হাতে। অস্ট্রেলিয়া হারাল নবম উইকেট। তবে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা ততক্ষণে জয়ের আনন্দে মেতে উঠেছেন। কারণ, চোটের কারণে ব্যাট হাতে নামতে পারেননি উসমান খাজা, হল্যান্ডই ছিলেন অজিদের শেষ ব্যাটসম্যান।
হারতে হারতে দুবাই টেস্টে ড্র করে ফেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে সিরিজ নিধার্রণী আবুধাবি টেস্টে চার দিনও পার করতে পারেনি সফরকারীরা। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মাদ আব্বাস। এই ডানহাতি পেসারের দারুণ বোলিংয়ে ১৬৪ রানেই গুটিয়ে গেছে টিম পেইনের দল। তাতে ৩৭৩ রানের বড় জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে পাকিস্তান। রানের হিসেবে টেস্টে এটিই পাকিস্তানের সবথেকে বড় জয়। চার বছর আগে এই আবুধাবিতে এই অস্ট্রেলিয়াকেই ৩৫৬ রানে হারিয়ে আগের রেকডির্ট গড়েছিল পাকিস্তান।
ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন আব্বাস। ২০০৬ সালে মোহাম্মদ আসিফের পর এই প্রথম কোনো পাকিস্তানি পেসার ম্যাচে ১০ উইকেট পেলেন। আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত কোনো টেস্টে ১০ উইকেট নেয়া প্রথম পেসারও আব্বাস। অসাধারণ বোলিং নৈপুণ্যে ম্যাচসেরা ও সিরিজসেরা, দুটো পুরস্কারই জিতে নিয়েছেন ডানহাতি পেসার। এই অজর্নটা জন্মদিনের উপহার হিসেবে নিজের মেয়েকে উৎসগর্ করেছেন তিনি।
মাত্র ১০ টেস্টেই ৫৯ উইকেট হয়ে গেছে আব্বাসের। এই সিরিজে নিয়েছেন ১৭ উইকেট। বলা যায় আবুধাবিতে তার কাছেই হেরে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ৫৩৮ রানের পাহাড়সম টাগের্ট তাড়া করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে ১ উইকেটে ৪৭ রান তুলেছিল দলটি। শুক্রবার চতুথর্ দিনের প্রথম সেশনটা ভালোভাবেই পার করছিলেন অ্যারন ফিঞ্চ আর ট্রাভিস হেড। কিন্তু আব্বাসের এক বিধ্বংসী স্পেলে মুহূতের্ই ১/৭১ থেকে ৫/৭৮ হয়ে যায় অজিদের স্কোরবোডর্। হেডকে (৩৬) ফিরিয়ে শুরু আব্বাসের। এরপর একে একে এই পেসার তুলে নিয়েছেন মিচেল মাশর্ (৫), ফিঞ্চ (৩১) আর অধিনায়ক টিম পেইনকে (০)।
নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে মারনাস ল্যাবুশানে আর মিচেল স্টাকের্র ব্যাটে ব্যবধানটা কিছুটা কমাতে পেরেছে অস্ট্রেলিয়া। দলের পক্ষে সবচেয়ে বড় জুটিটি (৬৭) গড়েছেন তারা। স্টাকের্ক (২৮) এলবির ফঁাদে ফেলে এই জুটি ভাঙেন ইয়াসির শাহ। এরপর পিটার সিডলকেও (৩) তুলে নেন তিনি। সিডল ফেরার ৫ ওভার বাদেই সবোর্চ্চ ইনিংস খেলা ল্যাবুশানেকেও (৪৩) হারায় অস্ট্রেলিয়া। তাকে সরফরাজ আহমেদের বদলি হিসেবে কিপিং করা রিজওয়ানের ক্যাচ বানিয়ে পঞ্চম উইকেটের দেখা পান আব্বাস। এরপর হল্যান্ডকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে আনন্দে ভাসান ইয়াসির।
এর আগে ৯ উইকেটে ৪০০ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৮২ রান করেছিল সরফরাজ আহমেদের দল। আর অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় ১৪৫ রানে।