নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে টাইগাররা মোট ব্যাটিং করে ১১৭ ওভার। দিনের হিসাবে সর্বোচ্চ সোয়া দিন। যার ফল হচ্ছে, বৃষ্টিতে দুদিনেরও বেশি সময় খেলা না হওয়ার পরও পৌনে একদিন হাতে রেখে ইনিংস হারের লজ্জা। প্রথম টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে জয়ী স্বাগতিক কিউইরা দ্বিতীয় টেস্টেও বাংলাদেশকে হারায় ইনিংস ও ১২ রানের ব্যবধানে। তাই তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে সিরিজ নিজেদের করে নেয় নিউজিল্যান্ড।
আগামী শনিবার দুই দেশের মধ্যে ক্রাইস্টচার্চে শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট। এই ম্যাচ হারলে ওয়ানডে সিরিজের পর টেস্টেও ধবলধোলাইয়ের বড় লজ্জায় ডুববে টাইগাররা। সঙ্গে নিউজিল্যান্ডে পঞ্চম সফরের গল্পটাও শেষ হবে আগের চার সফরের একই স্ক্রিপ্ট দিয়ে।
পুরো সফরে ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি হতাশ করেছেন বোলাররাও। নিউজিল্যান্ডের পেস স্বর্গে স্বাগতিক পেসাররা যখন আগুন ঝরিয়েছেন, তখন বাংলাদেশের পেসারদের পানির মতোই সহজভাবে খেলেছেন কিউই ব্যাটসম্যানরা। তবে বোলারদের চরম দৈন্যদশার মাঝেও দ্বিতীয় টেস্টে কিছুটা আলো ছড়িয়েছেন আবু জায়েদ রাহী। তৃতীয় টেস্ট শুরু হওয়ার আগে সেই আবু জায়েদ বলছেন, নিজের প্রতি আস্তে আস্তে বিশ্বাস বাড়ছে তারা।
ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের ব্যাট করা এক ইনিংসে তিন উইকেট নেন রাহী। আট রানে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে ম্যাচের তৃতীয় দিন কিউইদের বেশ ভালো ধাক্কাই দিয়েছিলেন তিনি। রাহী মনে করেন, ওয়েলিংটন টেস্টে নিজের পারফরম্যান্স তাকে দিয়েছে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার রসদ।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, 'এখনো একটি ম্যাচ বাকি আছে। আমাদের উন্নতি নিজের প্রতি বিশ্বাস জন্মেছে- আমি সুইং করাতে পারি; আন্তর্জাতিক ব্যাটসম্যানরা এই বল খেলতে কষ্ট করতে হচ্ছে। নিজের প্রতি বিশ্বাস ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে।'
মাত্র আড়াই দিন খেলেই ওয়েলিংটন টেস্ট হেরে যাওয়ার পেছনে দোষ দেয়া হয় স্বাগতিকদের ম্যাচ জেতানো রস টেলরের দুটি ক্যাচ বাংলাদেশি ফিল্ডাররা হাতছাড়া করাকে। রাহীর বলেই সেই দুটি ক্যাচ ছেড়েছিলেন মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ ও সাদমান ইসলাম, যার অন্তত একটি ধরতে পারলে রাহীর বোলিং ফিগার আরও ভালো হতো। আর ম্যাচটাও হয়তো বাঁচাতে পারত বাংলাদেশ।
তবে ক্যাচ মিসের বিষয়টিকে স্বাভাবিক ভাবেই নিচ্ছেন ২৫ বছর বয়সি ডানহাতি পেসার, 'ক্যাচ যে কারোরই মিস হতে পারে। এটা স্বাভাবিক। হয়তো এভাবেই দুটা ক্যাচ মিস হয়ে গেছে, যেটা কপালে ছিল না। ব্যাপারটাকে এরকমই নিই।'
একজন পেসার হিসেবে রাহী যে একজন পেসারকেই অনুসরণ করবেন এটা স্বাভাবিক। তবে কে সেই অনুসরণীয় পেসার? কথার ফাঁকে তার নামও জানিয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ তারকা। জানান, ইংলিশ পেসার জেমস অ্যান্ডারসনের বোলিং কিংবা বোলিং অ্যাকশন অনুসরণ করেন তিনি। বলেন, 'ছোটবেলা থেকেই, যখন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট শুরু করি, তখন থেকেই জেমস অ্যান্ডারসনের বোলিং অ্যাকশন অনুসরণ করি। তার বোলিংই আমার সবচেয়ে বেশি পছন্দ।'
নিজের একটু ভালো করলেও দল ব্যর্থ হচ্ছে। এ জন্য অবশ্য খারাপ লাগছে রাহীরও, 'নিজের পারফরম্যান্স থেকে ভালো ফল আসাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দল ভালো করলে আরও বেশি ভালো লাগত।'
দুই টেস্ট মিলিয়ে দুটি ইনিংসে ব্যাট করার প্রয়োজন হয়নি নিউজিল্যান্ডের। যে কারণে টাইগার শিবিরে বেড়েছে হতাশা। তবে আবু জায়েদ বিষয়টিকে ভিন্ন চোখে দেখছেন। বেশি বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে তো অভিজ্ঞতা হবে, আর টেস্টে অভিজ্ঞতা অমূল্য, 'আমরা যে কজন পেসার খেলছি, তাদের মধ্যে মুস্তাফিজ শুধু ১১ (১৩টি) ম্যাচ খেলছে। তাই আমার কাছে মনে হয়, আরও টেস্ট খেলা উচিত। আরও খেলার সুযোগ দেয়া উচিত। অন্যান্য দেশের বোলারদের দেখেন অনেক টেস্ট খেলছে। টেস্ট হলো অভিজ্ঞতার ক্রিকেট। যত বেশি টেস্ট খেলবেন, তত অভিজ্ঞ হবেন এবং বুঝতে পারবেন টেস্ট ক্রিকেট কেমন।'