মেলবোর্ন স্টেডিয়ামের পেটের মধ্যে তিনটি লর্ডস অনায়াসে ঢুকিয়ে ফেলা যাবে। দর্শক ধারণক্ষমতার দিক থেকে অঙ্কের হিসাব তো সেই কথাই বলছে। সিডনির পেটের মধ্যেও প্রায় তিনটি ওভাল ঢুকিয়ে ফেলা যাবে। অস্ট্রেলিয়ার ভেনু্যগুলো এতই বড় যে, ২০১৫ বিশ্বকাপে দর্শক উপস্থিতির সংখ্যায় রেকর্ডটা হয়ে গেছে। কিন্তু সে তুলনায় এবারের বিশ্বকাপে ততটা দর্শক হয়নি। যেটা হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দলগুলোর জন্য। আর তাই দক্ষিণ এশিয়ার দর্শকদের ধন্যবাদ জানাতে ভুল করেনি ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি।
২০১৫ সালের মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচে দর্শক সংখ্যা কত ছিল জানেন? ৯৩ হাজার ১৩ জন। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওই বিশ্বকাপে টিকিট কেটে খেলা দেখেছেন ১০ লাখ ১৬ হাজার ৪২০ জন। গড়ে ম্যাচপ্রতি দর্শক উপস্থিতির সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ১৭৫ জন। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলশ বিশ্বকাপ ২০১৯-এ দর্শক উপস্থিতি ছাড়িয়ে যেতে পারেনি সেই রেকর্ড ইংল্যান্ডের ভেনু্যগুলো আকারে ততটা বড় নয় বলে তা সম্ভবও নয়। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং উইম্বলডন উত্তেজনায় বিশ্বকাপ ক্রেজও ইংল্যান্ডে খুব একটা চোখে পড়েনি।
স্বাগতিক দর্শকদের চেয়েও বিশ্বকাপে দর্শক উপস্থিতি ছিল বেশি উপমহাদেশের। সেই হিসাবটা শনিবার দিয়েছে আইসিসি। দক্ষিণ এশিয়ার কমিউনিটি ৩ লাখ ২৪ হাজার টিকিট কিনেছে, যা মোট টিকিটের ৫০ শতাংশ। স্বাগতিক দেশের বাইরে থেকে এত দর্শকের খেলা দেখা বিশ্বকাপ ইতিহাসে রেকর্ড বলে আইসিসির ওয়েবসাইট জানিয়েছে। ৪৮টি ম্যাচের মোট টিকিটের ৯৫ শতাংশই বিক্রি করে স্বস্তি প্রকাশ করছে আইসিসি। বিক্রিত টিকিটের মধ্যে ৩৫ শতাংশ ক্রেতা ইংল্যান্ড এবং ওয়েলশের। ১৫৭ দেশের আগ্রহী আবেদনকারীদের মধ্যে মোট টিকিটের ১৮ শতাংশ বিক্রি করে ক্রিকেটের বিশ্বায়ন করেছে বলে জানিয়েছে আইসিসি।
আর তাই ধন্যবাদটা বেশিই পাচ্ছে উপমহাদেশের ক্রিকেট ফ্যান। কারণ, যে মাঠে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকার খেলা- সেই স্টেডিয়াম উপচে পড়েছে তাদের সমর্থক। আইসিসি বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট ডিরেক্টর স্টিভ এলওয়ার্দি তাই ফেলেছেন স্বস্তির নিঃশ্বাস-? ২০১৪ সালে যখন ২০১৯ বিশ্বকাপ নিয়ে পরিকল্পনা করি, তখন এই বিশ্বকাপের ব্যাপকভাবে আয়োজন করার জন্য আমাদের উচ্চাভিলাস ছিল। শেষ পর্যন্ত তা আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।'
২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দর্শকদের ক্রেজ অবাক করেছে আইসিসিকে। ওভালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে স্টেডিয়াম ভর্তি বাংলাদেশ সমর্থক দেখে কিউই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান রস টেলর বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, 'মনে হয়েছে আমরা ঢাকা অথবা চট্টগ্রামে খেলছি।' আইসিসির ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ দর্শক ক্রেজের ছবি তাই প্রকাশও করেছিল।