শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ফিটনেস নিয়ে দারুণ সচেতন ফুটবলাররা

আমরা বর্তমানে আগের চেয়ে অনেক সচেতন। আমরা বুঝতে পারছি ক্যারিয়ার ঠিক রাখতে হলে ফিট থাকতে হবে। ফিটনেসে ঘাটতি নেই বলে ফুটবলাররা এখন পুরো ৯০ মিনিট মাঠ জুড়ে খেলতে পারে।- আশরাফুল ইসলাম
নতুনধারা
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাংলাদেশের ফুটবলাররা এখন ফিটনেস নিয়ে দারুণ সচেতন। নিয়মিত জিম আর পরিমিত আহার করেন তারা। খেলা না থাকলেও নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন করে ফিটনেস ধরে রাখার চেষ্টা করেন। জাতীয় দল তো বটেই, ক্লাব ফুটবলাররাও ফিটনেস নিয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নন তারা। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পেয়েছিলেন অ্যান্ড্রু ওর্ড। বছরখানেক বাংলাদেশে ছিলেন এই অস্ট্রেলিয়ান। ওর্ড এসেই ফুটবলারদের ফিটনেসের ওপরে সবচেয়ে জোর দিয়েছিলেন। তার উত্তরসূরি জেমি ডেও ধরে রেখেছেন সেই ধারাবাহিকতা।

আর তাইতো ম্যাচের ৯০ মিনিট সমান তালে দৌড়াতেও দেখা যাচ্ছে ফুটবলারদের। জিমে কঠোর পরিশ্রমই তার অন্যতম কারণ। পাশাপাশি খাদ্যাভাসে পরিবর্তনও ফিট করে তুলেছে খেলোয়াড়দের। আগে ভাত ছাড়া চলতোই না অনেকের। অথচ এখন ফুটবলারদের খাদ্য তালিকায় আছে পাস্তা, ওটস আর শাক-সব্জি। জাতীয় দলের ক্যাম্প চলার সময় শর্করা জাতীয় খাবার বলতে গেলে বাদই যায়। শরীরের ওজনও রাখতে হয় নিয়ন্ত্রণে। অতিরিক্ত ওজনের কারণে কয়েক দিন আগে গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকোকে ৫০ ডলার জরিমানা পর্যন্ত দিতে হয়েছে!

ফুটবলাররা হাসিমুখেই মেনে নিচ্ছেন সব অনুশাসন। গোলকিপার আশরাফুল ইসলাম রানা নিজের ফিটনেস নিয়ে সন্তুষ্ট। তিনি বললেন, 'আমরা বর্তমানে আগের চেয়ে অনেক সচেতন। আমরা বুঝতে পারছি ক্যারিয়ার ঠিক রাখতে হলে ফিট থাকতে হবে। ফিটনেসে ঘাটতি নেই বলে ফুটবলাররা এখন পুরো ৯০ মিনিট মাঠ জুড়ে খেলতে পারে। আগে আমরা অনেক কিছুই বুঝতাম না। কোন খাবারে ফ্যাট বেশি থাকে, কোন খাবার খেলে ফিট থাকা যায় সে সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না। তবে অ্যান্ড্রু ওর্ড আসার অনেক কিছু বুঝতে পেরেছি। আর জেমি ডে দায়িত্ব নেয়ার পর আমাদের জীবন-যাপনে পরিবর্তন এসেছে। নতুন জীবনধারার সঙ্গে আমরা মানিয়েও নিয়েছি।'

জাতীয় দলের ফুটবলারদের শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন-যাপন দেখে অন্যরাও সচেতন হয়ে উঠছে। রানা বললেন, 'জাতীয় দলে জায়গা পেতে হলে কঠোর নিয়ম মেনে চলতে হয়। আমাদের দেখে ক্লাব ফুটবলাররা শিখছে, ফিটনেস নিয়ে সচেতন হয়ে উঠছে। ক্লাবগুলোর খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আসছে। এটা দেশের ফুটবলের জন্য ইতিবাচক।'

আসলে জেমি ডে'র দলে জায়গা পেতে ফিটনেস ঠিক রাখার বিকল্প নেই। ছুটিতে স্বদেশ ইংল্যান্ডে যাওয়ার আগে ফুটবলারদের বেশ কিছু নিয়ম অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়ে যান কোচ। স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবন জানালেন, 'কোচ দেশে যাওয়ার আগে আমাদের ওজন মেপে রাখেন। ছুটি শেষে ক্যাম্প শুরুর আগে ওজন ঠিক আছে কি না চেক করেন। কারও ওজন বেশি হলে ৫০ থেকে ১০০ ডলার জরিমানা হয়। এমনকি বেশি ওজনের ফুটবলারকে দল থেকে বাদ দেয়ার হুমকিও দেন তিনি। আমরা তাই কোনও ঝুঁকিতে যাই না। ক্যাম্প বন্ধ থাকলেও কোচের নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়মিত অনুশীলন করি, নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন করি।'

রানা-জীবনের মতো সিনিয়রদের দেখে তরুণ ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ দারুণ অরূপ্রাণিত, 'আমি দেশসেরা ডিফেন্ডার হতে চাই। লক্ষপূরণে কঠোর পরিশ্রম করছি, কোচের নির্দেশনা অনুসরণ করে সকালে জিম আর বিকেলে উইথ দ্য বল অনুশীলন করছি। এমনকি খাবারও খাচ্ছি বুঝে-শুনে। ছুটির সময়ও ফিটনেসে কোনও ছাড় দিচ্ছি না। কারণ এখন প্রতিযোগিতা আগের চেয়ে বেশি। এক পজিশনে একাধিক খেলোয়াড়ের মধ্যে লড়াই হয়।'

ফিটনেস নিয়ে শিষ্যদের সচেতনতা দেখে কোচ জেমি ডে'ও সন্তুষ্ট। জাতীয় দলের মিডফিল্ডার মাশুক মিয়া জনি বললেন, 'আমাদের নিয়ে কোচ আগের চেয়ে অনেক নির্ভার থাকেন এখন। ছুটি চলার সময়ও আমরা তার দিক নির্দেশনা মেনে চলি। তাই কোচ ঢাকায় এসে আমাদের ফিটনেস নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এখন ক্যাম্পের শুরুতে আগের মতো ফিটনেস ঠিক করতে বাড়তি পরিশ্রমের খুব একটা দরকার হয় না।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<67860 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1