বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফের শিরোপা-উৎসবের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

ফাইনালে আজ প্রতিপক্ষ ভারত
ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১৮ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৮ আগস্ট ২০১৮, ০০:১৭
সাফ অনূধ্বর্-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আজ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। তাতে কী? বঙ্গকন্যারা ভয় পায় না কাউকেই। শিরোপা নিধার্রণী লড়াইয়ে নামার আগে শুক্রবার অনুশীলনে এমন দৃঢ় চেহারাতেই দেখা গেল তাদের Ñবাফুফে

খড়কুটোর মতো ভেসে গেছে পাকিস্তান, পাত্তা পায়নি নেপালও। যে ভুটানকে নিয়ে এত আলোচনা সেই ভুটানকেও সেমিফাইনালে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। সাফ অনূধ্বর্-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে যেভাবে খেলে চলেছে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা, তাদের সামনে আজকের ফাইনালে কি প্রতিরোধ করে দঁাড়াতে পারবে ভারত? মারিয়া মান্দার দল কিন্তু আত্মবিশ্বাসী, নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে তাদের সামনে বাধা হতে পারবে না কেউ। বঙ্গকন্যারা এখন আরও একবার শিরোপার উৎসবে মেতে উঠার অপেক্ষায়। আসরের বতর্মান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়েই ভুটানে পা রেখেছিল মারিয়া-অঁাখি-আনুচিংদের দল। সেই লক্ষ্য পূরণের একেবারে দ্বারপ্রান্তে দঁাড়িয়ে তারা। মঞ্চটাও প্রস্তুত। সেই মঞ্চে বিজয়কেতন উড়ানোর অপেক্ষা। আজ সন্ধ্যা সাতটায় ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের লড়াইয়ে নামবে বঙ্গকন্যারা। প্রতিপক্ষ সেই ভারত, আট মাস আগে ঘরের মাঠে যে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবার আয়োজিত সাফ অনূধ্বর্-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের উৎসব করেছিল বাংলাদেশ। কিশোরী মেয়েরা লিখেছে নতুন ইতিহাস। আজ তারা সেই ইতিহাসের পাতায় আরও একটি উপাখ্যান যোগ করার স্বপ্নে বিভোর। তবে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা পা রাখছে মাটিতেই। বেশ সতকর্ তারা। প্রতিপক্ষ ভারত তো ফেলনা কোনো দল নয়। আজ তারা মাঠে নামবে প্রতিশোধস্পৃহা বুকে নিয়ে। তাছাড়া বাংলাদেশের মতো সব ম্যাচ জিতেই ফাইনালে উঠে এসেছে দলটি। যদিও গ্রæপপবের্ ভুটান আর সেমিফাইনালে নেপালের বিপক্ষে ভারতের মেয়েদের জয় ততটা দাপুটে ছিল না। ভুটানকে তারা হারিয়েছিল ১-০ গোলে, বৃহস্পতিবার সেমিফাইনালে নেপালকে ২-১ গোলে। গ্রæপের শেষ ম্যাচে নেপালকে বাংলাদেশ হারিয়েছিল ৩-০ গোলে, সেমিফাইনালে ভুটানকে মারিয়ার দল গুঁড়িয়ে দিয়েছে ৫-০ গোলে। এই স্কোরলাইনগুলোই বলে দিচ্ছে আসরে কতটা দুবার্র বাংলাদেশ। পারফরম্যান্সের বিচারে ভারতের থেকেও যোজন যোজন এগিয়ে তারা। ফাইনালের আগে নিজের দলকে তাই ফেভারিট বলে দিতে সামান্যও কুণ্ঠাবোধ করেননি কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। দলীয় অধিনায়ক মারিয়া মান্দা থেকে শুরু করে তহুরা-শামসুন্নাহার-আনাইদের কণ্ঠে একটাই কথা- ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেই ঘরে ফিরবেন তারা। অধিক আত্মবিশ্বাসী না হলেও দলের কোচ ছোটন মনে করছেন, শিরোপা ধরে রাখা বাংলাদেশ দলের জন্য অসম্ভব নয়, ‘বৃহস্পতিবার আমরা দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচ খেলেছি। এর আগে প্রথম সেমির ম্যাচটিও মাঠে বসে দেখেছি। দেখলাম ভারতের খেলার ধরন। এর আগেও অবশ্য তাদের খেলা দেখেছি। আগামীকাল (আজ) ফাইনালে তারাই আমাদের প্রতিপক্ষ। সেখানে তাদের হারাতে পারব কি না, এ ব্যাপারে শুধু একটা কথাই বলতে চাই- আমাদের মেয়েরা যদি তাদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলে, তাহলে জয় পেতে আমাদের কোনো অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।’ গত তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ২২ বার বল পাঠিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। স্কোরশিটে নাম তুলেছেন ১০জন। অন্যদিকে, একটি গোলও হজম করেনি বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে ছোটন বলেছেন, ‘আমি খুব খুশি যে আমার দলের ১০ খেলোয়াড় গোল করেছে। এখন পযর্ন্ত টুনাের্মন্টের সবচেয়ে বেশি গোল আমরাই করেছি এবং একমাত্র দল হিসেবে একটি গোলও খাইনি। এ পরিসংখ্যান এটাই প্রমাণ করে- আমরা গোল করার জন্য নিদির্ষ্ট কারো ওপর নিভর্রশীল নই এবং আমাদের ডিফেন্স ঠিকমতোই খেলছে। তবে এই আত্মতৃপ্তি নিয়ে ফাইনালে খেললে সেটা হিতে বিপরীত হতে পারে।’ ফাইনালকে সামনে রেখে শুক্রবার সকালে হালকা অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ। এর পেছনে কারণ একটাই, লাগাতার খেলার মধ্যে থাকা দল যেন পযার্প্ত বিশ্রাম পায় এবং ফাইনালে চাঙ্গা হয়ে মাঠে নামতে পারে। ফাইনালের কথা মাথায় রেখেই কোচ ছোটন সেমিফাইনালে দলের ভরসামান স্ট্রাইকার তহুরাকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নিয়েছিলেন। ছোটন জানিয়েছেন, সব শিষ্যের দিকেই বিশেষ দৃষ্টি রাখছেন, ‘দলের সবাই ফিজিক্যালি-মেন্টালি ঠিক আছে। তবে মনিকার পায়ে সামান্য ব্যথা। ও কিছু না। আশা করি সে ফাইনালে খেলতে পারবে। ফাইনালের আগে মেয়েরা যেন পুরোপুরি চাঙ্গা ও সতেজ থাকে, সেদিকে বিশেষ নজর দিচ্ছি।’ প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত হলেও বাংলাদেশ দলের মতো ভারতের দলটিতেও বেশ পরিবতর্ন এসেছে এবারের টুনাের্মন্টে। তবে এসব নিয়ে মোটেই মাথা ঘামাচ্ছেন না কোচ। নিজের দলের উপর আস্থা রেখে তিনি বলেছেন, ‘গত ডিসেম্বরে ঢাকায় যে ভারতকে হারিয়ে আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম, সেই দলে অনেক নতুন খেলোয়াড় এসেছে। আগের নারী কোচ মায়মল রকিও আর নেই। তবে এগুলো নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। আমরা শুধু নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলেই চলবে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে