শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৮২ কোটি ডলার বিক্রি, অর্ধেকই কিনেছে অগ্রণী ব্যাংক

যাযাদি রিপোর্ট
  ২২ মে ২০২০, ০০:০০

ডলার বিক্রি করেই চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঈদের ছুটির আগে শেষ কর্মদিবস বুধবারও ব্যাংকগুলোর কাছে এক কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে।

সব মিলিয়ে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১৯ মে পর্যন্ত (২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ১৯ মে) আন্তঃব্যাংক মুদ্রার বাজার দরে ৮২ কোটি ২০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের কাছেই প্রায় অর্ধেক; ৩৬ কোটি ডলারের মতো বিক্রি করা হয়েছে।

গত এপ্রিল মাসে বিক্রি করা হয়েছিল ২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক কিনেছিল অর্ধেকেরও বেশি; ১৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। চলতি মাসের ১৯ মে পর্যন্ত পাঁচ কোটি ৯০ লাখ ডলার ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরও অর্ধেকের বেশি কিনেছে অগ্রণী ব্যাংক।

বুধবার আন্তঃব্যাংক মুদ্রার বাজারে প্রতি ডলারের দর ছিল ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সা। গত কয়েক মাস ধরে এই একই জায়গায় 'স্থির' রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের দর। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমান এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, বাজারের চাহিদা মেটাতেই ডলার ছাড়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজই এটি।

যখন বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়বে তখন কিনবে। আর যখন প্রয়োজন হবে অর্থাৎ চাহিদা বাড়বে তখন বিক্রি করবে। বাজার স্বাভাবিক বা স্থিতিশীল রাখতে বরাবরই এই কাজটি করে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, মূলত জ্বালানি তেল এবং এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানির এলসি খুলতেই (ঋণপত্র) এখন বেশি ডলার ব্যয় হচ্ছে। আর এর সিংহভাগই করছে অগ্রণী ব্যাংক।

অথচ রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, ইসলামী ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি ব্যাংকের হাতে যথেষ্ট ডলার রয়েছে। জ্বালানি তেল ও এলএনজি আমদানির জন্য পেট্রোবাংলা এসব ব্যাংকে এলসি খুললে অগ্রণী ব্যাংকের ওপর চাপ কমবে; বাংলাদেশ ব্যাংকেরও এতো বেশি ডলার বিক্রি করতে হবে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, 'অগ্রণী ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রির ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক যে টাকা পাচ্ছে, সেই নগদ টাকাটা কিন্তু আটকে থাকছে। সে ক্ষেত্রে বাজারে তারল্য সরবরাহ কমে যাচ্ছে। যেটা এই সংকটময় মুহূর্তে মোটেই ভালো নয়।

'সোনালী বা ইসলামী ব্যাংকের কাছে থাকা ডলার দিয়ে যদি জ্বালানি তেল ও এলএনজির এলসি খোলা হতো তাহলে কিন্তু এই টাকাটা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আটকে থাকত না; বাজারে থাকত।'

এ বিষয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা।

১৯ দিনেই ১০৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স করোনাভাইরাস সংকটে আমদানি ও রপ্তানি তলানিতে নেমে আসলেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আশার আলো জাগিয়ে যাচ্ছে।

ঈদ সামনে রেখে সবাইকে অবাক করে দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। চলতি মে মাসের প্রথম ১৯ দিনে ১০৯ কোটি ১০ লাখ ডলার তারা দেশে পাঠিয়েছেন, যা গত এপ্রিল মাসের পুরো সময়ের চেয়েও বেশি। এপ্রিলে ১০৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। রেমিট্যান্সের এই উলস্নম্ফনে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ফের ৩৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

করোনাভাইরাস মহামারি গোটা বিশ্বকে সংকটে ফেলে দেয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের রেমিট্যান্সেও পড়েছে এর প্রভাব। আশঙ্কা করা হয়েছিল, আমদানি ও রপ্তানি আয়ের মতো অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক রেমিট্যান্সও তলানিতে নেমে আসবে।

কিন্তু তেমনটি হয়নি। ঈদের মাস মে'তে অতীতের যেকোনো ঈদের মাসের চেয়ে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, 'মহামারির কারণে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই সংকট চলছে। আমরা ভেবেছিলাম রেমিট্যান্সের পরিমাণ একেবারে তলানিতে নেমে আসবে। 'তবে তা হয়নি। প্রতিবারের মতো এবারও ঈদে পরিবার-পরিজনের জন্য বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<100317 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1