বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিজিএমইর হুমকির পর বকেয়া নিয়ে 'দেনদরবারে' ইডবিস্নউএম

নতুনধারা
  ০৪ জুন ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

বকেয়া পরিশোধ নিয়ে টালবাহানা করায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ থেকে মামলা ও কালো তালিভুক্তির হুমকির পর সরবরাহকারীদের সঙ্গে দেনদরবার শুরু করেছে ব্রিটিশ ক্রেতা এডিনবরা উলেন মিলকে (ইডবিস্নউএম)।

এ বিষয়ে চিঠির জবাবে ইডবিস্নউএম যে দাবি করেছে তা 'সন্তোষজনক' না হওয়ায় সুনির্দিষ্ট প্রমাণ চেয়ে ১০ দিনের মাথায় দ্বিতীয় দফায় আরেকটি চিঠি দিয়েছে বিজিএমইএ। তবে পাওনা পরিশোধ নিয়ে রপ্তানিকারকদের সঙ্গে ইডবিস্নউএমের আলোচনা শুরুর খবরে সুর কিছুটা নরম করেছে সংগঠনটি।

চলতি বছরের শুরুতে বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর সংকটে পড়ে বিপর্যস্ত হয়েছে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানিখাত তৈরি পোশাক শিল্প। নতুন ক্রয়াদেশ ব্যাপক হারে কমে যাওয়ার মধ্যে পশ্চিমা ক্রেতাদের বিরুদ্ধে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে পণ্য হাতে পাওয়ার পর অর্থ পরিশোধ না করা, ক্রয়াদেশ দেওয়ার পর তৈরি পণ্য নিতে অস্বীকার করা ও নিয়মভঙ্গ করে ক্রয়াদেশ বাতিল করা এমনকি চুক্তিমূল্যের চেয়ে পণ্যের দাম অস্বাভাবিক কমিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবনার অভিযোগ আনে বিজিএমইএ।

গত ২১ মে ইডবিস্নউএমকে লেনদেন সংক্রান্ত কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের উত্তর পেতে চিঠি দেয় বিজিএমইএ। ২৫ মার্চের আগে রপ্তানি করা পণ্যের মূল্য পরিশোধের জন্য ২৯ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এর মধ্যে টাকা না পেলে মামলা করার হুমকির পাশাপাশি কালো তালিকাভুক্ত করার হুমকি দেওয়া হয়।

ইডবিস্নউএমের যোগাযোগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিজিএমইএর আরএসসি কমিটির চেয়ারম্যান নাফিজ উদ দৌলা বলেন, 'ওরা নির্ধারিত সময়ের একদিন আগেই একটা উত্তর দিয়েছে যেটা গ্রহণযোগ্য নয়। ওরা সব সাপস্নাইয়ারের সঙ্গে নেগোশিয়েট করে ফেলেছে বলে দাবি করেছে। কিন্তু আমাদের কাছে যে তথ্য আছে সেটা একটু ভিন্ন।

'আমরা যেটা দাবি করছি যে ওরা ঠিকমতো পেমেন্ট করছে না, অর্ডার ক্যানসেল করেছে কিংবা অনেক বেশি ডিসকাউন্ট চাচ্ছে। চিঠিতে তারা বলতে চেয়েছে যে, আমাদের এসব দাবি ভিত্তিহীন। ওরা ফিরতি চিঠিতে অনেক রকম মিথ্যা কথা বলেছে। এইটার একটা প্রতিউত্তর আমরা গত শনিবার পাঠিয়ে দিয়েছি।'

ওই চিঠিতে কোনো কোনো রপ্তানিকারকের সঙ্গে দেনদরবার হয়েছে তার তালিকা চাওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২৯ জনের কাছে ৬০ লাখ ডলার বকেয়ার মধ্যে ২২ জনের সঙ্গে পরিশোধের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে ইডবিস্নউএম দাবি করেছে। তবে বিজিএমইএর হিসাবে এই কোম্পানির বাংলাদেশি সরবরাহকারীর সংখ্যা ৪০ জনের কাছাকাছি। এর মধ্যে ১৮ জন মোট দুই কোটি ৫০ লাখ ডলারের কাছাকাছি পাওনা রয়েছে অভিযোগ করেছে।

নাফিজ বলেন, ক্রেতারা যদি এগিয়ে এসে সমস্যার সমাধান করে ভালো। এক্ষেত্রে বিজিএমই সহযোগিতা করবে।

তারা ইতোমধ্যেই কিছু কিছু সাপস্নাইয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেনা-পাওনার বিষয়ে জানতে চাচ্ছে বলে আমরা শুনেছি। এই কাজটি তারা আগে করেনি। এখন কি করে সেটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছি।

বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, দ্বিতীয় দফা চিঠির উত্তর এখনও তাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। উত্তরের উপর ভিত্তি করে তারা করণীয় ঠিক করবেন।

বিজিএমইএর হিসাবে, কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর বাংলাদেশের ১১৫০টি কারখানার ৩১৮ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়েছে। নতুন ক্রয়াদেশ আসা দুই মাস ধরে প্রায় বন্ধ রয়েছে। এতে প্রায় ২৮ লাখ শ্রমিকের জীবনে আর্থিক অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

বিভিন্ন ক্রেতা কোম্পানির বিল বকেয়া থাকলেও তারা প্রথম নোটিসটি ইডবিস্নউএমকে পাঠিয়েছে বিজিএমইএ। কারণ সংকটের মধ্যে কোম্পানিটি বকেয়ার উপর মোটা অংকের ডিসকাউন্ট দাবি করছে, যা আইন ও নৈতিকতার লঙ্ঘন।

পাওনা পরিশোধে কেবল একটি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হলেও তা অন্য প্রতিষ্ঠানকে একটি বার্তা দেবে মন্তব্য করে নাফিজ বলেন, ইডবিস্নউএম বাংলাদেশ থেকে বছরে হয়তো সর্বোচ্চ ১০ কোটি ডলারের পোশাক কিনে। এই কোম্পানি চলে গেলে বাংলাদেশের তেমন কিছুই হবে না।

'কিন্তু আমরা চাই এসব অসাধু ব্যবসার বিরুদ্ধে একটা কঠোর বার্তা যাক। শেষ পর্যায়ে আমরা আদালতেও যেতে পারি। কিন্তু আমরা চাই এর আগেই সমস্যার সমাধান হোক।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<101161 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1