বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

লকডাউন-পরবর্তী সময়ে জার্মানির রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় পতন

যাযাদি ডেস্ক
  ১২ জুলাই ২০২০, ০০:০০

মধ্যাহ্নভোজের সময় বার্লিনের জেন কিচেনে আগের মতো আর ভিড় দেখা যায় না। বর্তমানে অল্প কয়েকজন গ্রাহক তার টেরাসে পা ফেলছেন। নভেল করোনাভাইরাস মহামারির ভয় এখনো বহাল থাকায় ছোট্ট ছোট্ট এশীয় রেস্টুরেন্টও গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণে হিমশিম খাচ্ছে। বার্লিনের ব্যস্ততম আন্টার ডেন লিন্ডেন অ্যাভিনিউতে অবস্থিত জেন কিচেনের স্বত্বাধিকারী ভিউ বলেন, লকডাউন নীতিমালা শিথিলের পর রেস্টুরেন্ট চালু করে আমরা আমাদের মাত্র ২০ থেকে ৩০ শতাংশ গ্রাহককে পাচ্ছি।

প্রতিবেশী অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশ ভালোভাবে মহামারি মোকাবিলা করায় অর্থনীতি ফের চালু করা প্রথম দেশগুলোর একটি জার্মানি। মহাদেশের অন্যান্য দেশও জার্মানির পথ গভীরভাবে অনুসরণ করেছে। রেস্টুরেন্ট, বার ও হোটেলগুলো পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ফেস মাস্ক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করছে। একই সঙ্গে গ্রাহকদের বলছে তারা যেন তাদের বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করে, যাতে নতুন সংক্রমণে সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এ রকম বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ সত্ত্বেও জার্মানির আতিথেয়তা খাত এখনো গতি পাচ্ছে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তীতে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতিটি যে গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এতে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

নভেল করোনাভাইরাসের ধাক্কা প্রশমনের লক্ষ্যে ১ ট্রিলিয়ন ইউরোর প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের সরকার। ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী পিটার অল্টমায়া জার্মান দৈনিক বিড আম সনতাগকে বলেন, গ্রীষ্মের অবকাশের পর আমরা অর্থনৈতিক মন্দার রাশ টেনে ধরতে পারব বলে আশাবাদী। অক্টোবরের মধ্যেই অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে ফিরবে বলে মনে করছি। তবে বেকারত্ব হার কিছুটা বেড়ে নভেম্বর থেকে কমতে শুরু করবে বলে মনে করেন অল্টমায়া।

রেস্টুরেন্ট, আতিথেয়তা ও অবকাশ খাত অতটা আশাবাদী নয়। জার্মান হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (ডিইএইচওজিএ) বলছে, জুনে তাদের আয় গত বছরের একই মাসের তুলনায় ৬০ শতাংশ কমেছে।

বার্লিনের ফ্রেডরিশাইন জেলায় অবস্থিত জিউস পিজারিয়ার স্বত্বাধিকারী সাহিতন কিফতসি বলেন, গ্রাহকরা অবশ্যই আসছেন কিন্তু খুবই অল্পসংখ্যক। তারা এসে ভেতরে বসতে এখনো ভয় পাচ্ছেন।

নতুন পরিচ্ছন্নতা নীতি অনুসরণ করতে গিয়ে রেস্টুরেন্টগুলোর ব্যয় আরও বেড়ে যাচ্ছে এবং এ খাতে দেউলিয়া হওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ছে।

ডিইএইচওজিএ বলছে, সরকার থেকে আরও অধিক সহায়তা না এলে ৭০ হাজারেরও বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।

মহামারিতে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত ছোট ছোট রেস্টুরেন্টকে সহায়তায় গত মাসে তিন মাসের জন্য দেড় লাখ ইউরো করে দিয়েছে মেরকেলের সরকার। একই সঙ্গে জুলাই থেকে আগামী ছয় মাসের জন্য বিক্রয় কর গ্রহণ বন্ধ রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্ট পাড়ায় ক্রেতারা উদারহস্তে খাওয়া-দাওয়া করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে ডিইএইচওজিএ প্রেসিডেন্ট গিদো জোয়েলিক বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, সব রেস্টুরেন্টে যেন সহায়তা পৌঁছায় সেজন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে সহায়তা করা উচিত। আগামী গ্রীষ্মে বিদেশি পর্যটকদের আগমনে ব্যবসা চাঙ্গা হবে এই আশায় বসে আছে কিছু রেস্টুরেন্ট।

ইইউর বেশিরভাগ দেশসহ আরও কয়েকটি দেশের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছে জার্মানি। নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কী রূপ ধারণ করে, তার ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে আরও কিছু দেশের জন্য সীমান্ত খুলে দেবে তারা।

বার্লিনের ফাইভ স্টার অ্যাডলন হোটেলে ধীরে ধীরে অতিথিদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। হোটেলটির বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের পরিচালক সেবাস্টিয়ান রিউই বলেন, ধীরে হলেও ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করেছে।

হেলথ ফুড ক্যাফে জার অলতেন জিকের স্বত্বাধিকারী বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, খুব শিগগিরই পর্যটকরা ফিরে আসবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<105590 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1