শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
অথর্বছরের প্রথম ৫ মাস

চাল-চিনির আমদানি কমেছে বেড়েছে ডাল-দুধ-মসলার

যাযাদি রিপোটর্
  ২৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
অথর্বছরের প্রথম ৫ মাসে দেশে চাল আমদানি কমেছে -ফাইল ছবি

বিদেশ থেকে চাল-গমসহ অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের আমদানি অনেকটা কমে এসেছে। আমদানি কমার তালিকায় চিনি ও ভোজ্যতেলও রয়েছে। তবে গুঁড়াদুধ, মসলা ও ডালের আমদানি বেড়েছে বেশ খানিকটা এবং আগামী ইরি মৌসুমের চাষাবাদের জন্য সার আমদানিও বেড়েছে। আবহাওয়া ও অন্যান্য পরিস্থিতি অনুক‚লে থাকলে তা চাল ও অন্যান্য খাদ্যপণ্যের আমদানি কমাতে সহায়ক হবে।

কাস্টমসের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের করা প্রতিবেদনের তথ্যমতে, চলতি ২০১৮-১৯ অথর্বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) চাল আমদানির পেছনে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ৬০ কোটি ডলার, যা গত অথর্বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫৯ শতাংশ কম। ২০১৭-১৮ অথর্বছরের শেষ দিকে বন্যা ও রোগের আক্রমণে ফসলহানি ঘটায় চালের আমদানি বেড়েছিল। তবে চলতি অথর্বছরে আমন মৌসুমে ভালো ফলন হওয়ায় চালের উৎপাদন বেড়েছে, যে কারণে আমদানি কমে এসেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

একই সময়ে গম আমদানিও কমেছে। চলতি অথর্বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ছয় কোটি ৫০ লাখ ডলারের গম আমদানি হয়েছে, যা এর আগের অথর্বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯২ শতাংশ কম। এ ছাড়া ভোগ্যপণ্যের মধ্যে চিনি ও ভোজ্যতেল আমদানি কমেছে। আলোচ্য পাঁচ মাসে চিনি আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৫৬ লাখ ডলার, যা এর আগের অথর্বছরের একই সময়ে ছিল ৫৬ কোটি ২৫ লাখ ডলার। সে হিসেবে আমদানি কমেছে ৫৮ শতাংশেরও বেশি। ভোজ্যতেলের আমদানি কমেছে দুই দশমিক ২৯ শতাংশ। অথর্বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৭৫ কোটি ডলারের ভোজ্যতেল আমদানি করেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। গত অথর্বছরের একই সময়ে ভোজ্যতেল আমদানির আথির্ক পরিমাণ ছিল ৭৭ কোটি ডলার।

তবে ডালের আমদানি বেড়েছে ১৪ শতাংশ। ডাল আমদানিতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ১২ কোটি ডলার। মসলা আমদানিতে ব্যয় হয়েছে আরও বেশি, ১৪ কোটি ডলার। আমদানি বৃদ্ধির হার ১৬ শতাংশ। গুঁড়াদুধ ও মাখনজাতীয় পণ্য আমদানি বেড়েছে ১২ শতাংশ। সার আমদানি বেড়েছে ৪৩ শতাংশ। চলতি অথর্বছরের প্রথম পাঁচ মাসে সার আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৭০ কোটি ডলার। আগের অথর্বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৪৯ কোটি ডলার। সম্প্রতি বাংলাদেশ কেমিক্যাল করপোরেশনের চাহিদা অনুযায়ী আরও দেড় লাখ টন সার আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হয়েছে ব্যাংকগুলোতে।

অন্যান্য শিল্প কাঁচামালের আমদানিও বেড়েছে। দেশে পদ্মা সেতু, অষ্টম চীন মৈত্রী সেতু, মেট্রোরেলসহ বেশকিছু প্রকল্পের কাজ পুরোদমে শুরু হওয়ায় সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল ‘ক্লিংকার’ আমদানি বেড়েছে প্রায় ৫৬ শতাংশ। জ্বালানি আমদানি বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। রাসায়নিক আমদানি বেড়েছে ১১ শতাংশ।

কাপড়, জুতার রংসহ অন্যান্য কাঁচামালের আমদানি বেড়েছে ১৮ শতাংশ। প্লাস্টিক ও রাবারজাত পণ্যের কাঁচামালের আমদানি বেড়েছে ১৬ শতাংশ। সুতা আমদানি বেড়েছে ২২ শতাংশ। স্ট্যাপল ফাইবারের আমদানি বেড়েছে ১৬ শতাংশ। লোহা, ইস্পাত ও অন্যান্য মৌলধাতুর আমদানি বেড়েছে ১৫ শতাংশ। বস্ত্র উৎপাদনের কাঁচামালের আমদানি বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। কাঁচা তুলার আমদানি বেড়েছে প্রায় ৯ শতাংশ।

মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি সেভাবে বাড়েনি। গত বছর এই সময়ে যেখানে ২৬ শতাংশের বেশি আমদানি প্রবৃদ্ধি ছিল, এবার সেখানে আমদানি প্রবৃদ্ধি ১১ শতাংশের কিছু বেশি। তবে ওষুধ শিল্পের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ায় কাঁচামাল আমদানি কমেছে প্রায় সাত শতাংশ। এছাড়া বিবিধ আমদানি প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে। ব্যাংক কমর্কতার্রা বলছেন, বিবিধ আমদানি কমা ভালো। এমন পণ্যের কেন আমদানি বাড়বে, যা কোনো নিদির্ষ্ট খাতের নয়। এ নিয়ে সংশয় থেকে যায়। বিগত কোনো কোনো বছরে বিভিন্ন শ্রেণিভিত্তিক পণ্যের তুলনায় বিবিধ পণ্যের আমদানি বেশি হয়েছে বলে জানা গেছে।

অথের্র দিক দিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে শিল্প কাঁচামালের আমদানিতে। এ খাতের আমদানির পেছনে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৪৪৫ কোটি ডলার। মূলধনী পণ্য আমদানির পেছনে ব্যয় হয়েছে ৭০০ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে চলতি অথর্বছরের প্রথম পাঁচ মাসে আমদানির পেছনে দেশের ব্যয় হয়েছে দুই হাজার ৫৩৩ কোটি ডলার, যা এর আগের অথর্বছরের একই সময়ের তুলনায় ছয় দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<33868 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1