বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেননি বিনিয়োগকারীরা

যাযাদি রিপোর্ট
  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

চীনা বিনিয়োগ প্রাপ্তিসহ কিছু উদ্যোগে আবার ফিরতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলশ্রম্নতিতে জানুয়ারিতে কিছুটা উত্থানে ফিরেছিল সূচক। তবে হঠাৎ অদৃশ্য কারণে কিছুটা টালমাটাল পুঁজিবাজার। যদিও সপ্তাহের শেষদিন পর্যন্ত কিছুটা ভিন্ন চিত্র রয়েছে। অর্থাৎ সূচক ও লেনদেন বেড়েছে। কিন্তু পতনের ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি বিনিয়োগকারীরা। আর বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতিকে খুব একটা স্থিতিশীল বলা যায় না। কেননা লেনদেন কমে আসছে ৬০০ কোটি টাকার ঘরে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত উদ্যোক্তাদের শেয়ার ব্যবসা বন্ধ করা না যাবে, ততক্ষণ বাজার ভালো হওয়ার আশা করা যায় না। তাদের কারসাজি চলতে থাকলে তা ভালো ফল বয়ে আনবে না। এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার কথা ছিল। কিন্তু তারাও নির্লিপ্ত। পাশাপাশি কারসাজি ছাড়াও পুঁজিবাজারে কিছু জেড ক্যাটেগরির কোম্পানি ও প্রভাবশালীদের পরিচিতি রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় এদের দৌরাত্ম্য দূর করার বিকল্প নেই। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফেরানোর ও তাদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার পথ তৈরি হবে। কাজেই বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় বিএসইসি দ্রম্নত আরও উদ্যোগী হবে বলে আশা করছেন তারা।

কেউ কেউ বলছেন, বর্তমান সরকার গঠিত হওয়ার পর এ প্রথম অর্থমন্ত্রী ও বিভিন্ন খাতের বেসরকারি উপদেষ্টার সমন্বয়ে দেশের সব খাতের ব্যবসায়ীকে নিয়ে বসেছিলেন। এটা একটা ইতিবাচক উদ্যোগ। তবে আরও যেসব নিয়ন্ত্রক সংস্থা রয়েছে, তাদেরও আমন্ত্রণ জানানো উচিত ছিল। বিশেষ করে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, আইসিএবি ও আইসিএমএ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান। আর এ বৈঠক বছরে একবার না করে আরও কয়েকবার করা যেতে পারে। এতে করে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বেরিয়ে আসবে এবং দ্রম্নত সমাধান হবে। যদিও আগে বিএসইসি, ইন্সু্যরেন্স ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ আরও যেসব নিয়ন্ত্রক সংস্থা রয়েছে, এদের সমন্বয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে সভা হতো। কিন্তু গত তিন থেকে চার বছরে এ ধরনের সভা হয়নি। যদি এটি চালু হয়, তাহলে বিএসইসি, বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে, সেটি দূর হবে। যা পুঁজিবাজারের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।

এদিকে, গত বুধবারের বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানে শেষ হয় লেনদেন। এদিন শুরুতে উত্থান-পতন থাকলেও শেষ দিকে ক্রয় চাপে উত্থানে ফিরে সূচক। বুধবার লেনদেন শেষে সূচক কিছুটা বাড়লেও কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। তবে টাকার অংকে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫৭৪৫ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৩১২ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২০০২ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৪৫টি কোম্পানি ও মিউচু্যয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২৩টির, কমেছে ১৭০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫২টির। আর দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৬৮৪ কোটি ৪৮ লাখ ৯১ হাজার টাকা।

এর আগের কার্যদিবস দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ১১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৫৭৩৫ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৩০৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৯৯৫ পয়েন্টে। আর ওইদিন লেনদেন হয়েছিল ৬১১ কোটি ৭৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৭২ কোটি ৭২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, গত বুধবার দিন শেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১০ হাজার ৬৪২ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৬৫টি কোম্পানির ও মিউচু্যয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেঙেছে ৮৮টির, কমেছে ১৩১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার টাকা। বাজার সংশ্লিষ্ট-ব্যক্তিরা বলছেন, ২০১০ সালের বিপর্যয়ে বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পতিত হয় দেশের পুঁজিবাজার। কারসাজি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাজার থেকে সরিয়ে ফেলায় পথে বসেন অসংখ্য বিনিয়োগকারী। যার রেশ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি তারা। অবশ্য বাজারে আস্থা ফেরানোর জন্য সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। তারপরও এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি পুঁজিবাজার। এর মধ্যেও কারসাজি কিংবা অনিয়ম কিন্তু থেমে নেই। নানাভাবে পুঁজিবাজারে ঠকছেন বিনিয়োগকারীরা। উদ্যোক্তা-পরিচালকরাও এতে বড় ভূমিকা রাখছেন। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের এভাবে ধারাবাহিক ক্ষতির শিকার হওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় বিএসইসির আরও জোরালো ভূমিকা নেয়া উচিত বলেও মনে করছেন ওই বিশ্লেষকরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<37694 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1