শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
রক্ষা পাচ্ছে না শিশুরাও

যৌন নির্যাতন

নতুনধারা
  ২১ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

সামাজিক অবক্ষয় দিনে দিনে চরম আকার ধারণ করছে। হেন কোনো অপরাধ নেই, যা সমাজে সংঘটিত হচ্ছে না। সমাজে নারীদের নিরাপত্তা বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। একদিকে যেমন নারীদের ওপর যৌন নিপীড়ন বেড়ে গেছে তেমনি বেড়ে গেছে সহিংসতা। নারীদের নিষ্ঠুরভাবে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, এর থেকে রক্ষা পাচ্ছে না কোমলমতি ছাত্রীরা। এমনকি ধর্ষণের শিকার হচ্ছে শিশুরাও। সামাজিক অবক্ষয় কোন পর্যায়ে গিয়েছে ভাবতেও অবাক লাগে। প্রশ্ন জাগে, সমাজ ঠিক না হলে, সমাজের মানুষ ঠিক না হলে দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন রয়েছে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় কী করে?

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, দেশে গত ১৫ দিনেই ৪৭ শিশু যৌন নির্যাতন অথবা ধর্ষণ চেষ্টা কিংবা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৩৯ ছিল ধর্ষণের ঘটনা। উন্নয়ন সংস্থা মানুষের জন্য ফাইন্ডেশন এই তথ্য দিয়েছে। শিশুদের প্রতি এমন নির্যাতনের সংখ্যা হঠাৎ বেড়েছে বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। চার পাশে যা ঘটছে তা রীতিমতো ভীতিকর। আমাদের কোমলমতি শিশুদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, এমনকি ধর্ষণের পর হত্যাও করা হচ্ছে। এর ফলে চাকরিজীবী মহিলারা তাদের শিশু-সন্তানদের নিয়ে সবসময় উদ্বিগ্ন থাকেন, কখন কী ঘটে যায়। অনলাইনেও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে শিশুরা। সমাজের একশ্রেণির বর্বর পাষন্ড মানুষের হাতে শিশুর জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ছে, অবলীলায় জীবন চলে যাচ্ছে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

আসামিরা ধরা পড়লেও তারা তাৎক্ষণিক কোনো শাস্তির সম্মুখীন হয় না। আইনি দীর্ঘসূত্রতার কবলে পড়ে অনেক মামলার ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যায়। দেশে শিশু ও নারী নির্যাতন রোধে একাধিক আইন রয়েছে। কিন্তু সেসব আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। ফলে বেশির ভাগ সময়েই অপরাধীরা পার পেয়ে যায় এবং আবার অপরাধ সংঘটিত করে। তবে আশার এর মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশু হত্যার বিচার হয়েছে। এটা ইতিবাচক দিক। কিন্তু শিশু অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যা তো থামছে না। এর প্রতিকার কী। আমাদের প্রশ্ন আর কত শিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হবে, শিকার হবে অপহরণ ও হত্যার। যদি শিশুর যৌন হয়রানি, নির্যাতন ও হত্যা রোধ করা না যায় তা হলে সমাজ ও রাষ্ট্রে এটা এক ভয়ঙ্কর বিপদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা কোনোভাবেই প্রত্যাশা করি না, আর কোনো শিশু এভাবে যৌন হয়রানি কিংবা নিষ্ঠুর হত্যার শিকার হোক। এটা রোধ করা না গেলে একদিকে যেমন সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে অন্যদিকে আমাদের শিশুরাও থাকবে নিরাপত্তাহীন। তাই যে কোনো মূল্যে এটাকে রোধ করে সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারকে দায় এড়িয়ে গেলে চলবে না। শিশু অধিকার সংরক্ষণ করা এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। শিশুর সঠিকভাবে বেড়ে ওঠা, তার বিকাশের ক্ষেত্রেও সমাজ ও রাষ্ট্রীয় উদাসীনতা একেবারে কম নয়। শিশু বিকাশেও কোনো শর্ত মানা হচ্ছে না।

মনে রাখতে হবে আজকের শিশুরাই আগামী দিনে দেশের কর্ণধার, ভবিষ্যৎ কান্ডারী। তাদের নিরাপত্তা যদি নিশ্চিত করা না যায় এবং রাষ্ট্র যদি তাদের মেধা বিকাশে ও নিরাপত্তা দানে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয় তবে তা কেবল দুর্ভাগ্যজনকই নয়, দেশের ভবিষ্যতের জন্যও হুমকিস্বরূপ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<46199 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1