যাযাদি রিপোর্ট
পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের অন্যতম উদ্যোক্তা ড. মনোয়ার হোসেন পূর্ব ঘোষণা ছাড়া কোম্পানিটির ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩২টি শেয়ার বিক্রি করেছেন। ফলে ২০১০ সালের ১০ জুলাই ইসু্য করা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) একটি নোটিফিকেশনের শর্ত ভঙ্গ হয়েছে। শর্ত লঙ্ঘনের কারণে ড. মনোয়ার হোসেনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
এছাড়া ড. মনোয়ার হোসেন কর্তৃক ই-সিকিউরিটিজ লিমিটেডে পরিচালিত একটি বিও হিসাব ফ্রিজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ওই শেয়ার বিক্রি সংক্রান্ত কর পরিশোধের নির্দেশনা প্রদানের বিষয়েও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিএসইসি।
প্রসঙ্গত, ক্রমাগত লোকসানের মুখে থাকা পিপলস লিজিংকে অবসায়নের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক। মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর কোম্পানিটিকে অবসায়নের জন্য উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অবসায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে একজন অবসায়কও নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পিপলস লিজিংয়ের পুঞ্জিভূত লোকসান ২ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটির মূলধন ঘাটতির পরিমাণ। ২৮৫ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির বিতরণকৃত ঋণের ৬৬ শতাংশই খেলাপি হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় কোম্পানিটি কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতা হারিয়েছে।
নিরীক্ষক পিনাকী অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস তাদের কোয়ালিফায়েড অপিনিয়নেও পিপলস লিজিংয়ের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছে। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সাবসিডিয়ারি কোম্পানি পিএলএফএস ইনভেস্টমেন্টসহ ২০১৮ হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান হয়েছে ১৫৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আর তাদের পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩২৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানটির চলতি সম্পদের তুলনায় দায়ের পরিমাণ ৩ দশমিক ১১ গুণ বেশি।
সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরে পিপলস লিজিংয়ের সম্মিলিতভাবে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫ টাকা ৫২ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২৬ টাকা ৬৮ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। এককভাবে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫ টাকা ২৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২৭ টাকা ৭ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। ৩১ ডিসেম্বর সম্মিলিতভাবে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট দায় দাঁড়িয়েছে ৬৫ টাকা ৫৯ পয়সা, এককভাবে যা ৬৫ টাকা ২৬ পয়সা। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর সম্মিলিত ও এককভাবে শেয়ারপ্রতি নিট দায় ছিল যথাক্রমে ৬০ টাকা ৭ পয়সা ও ৬০ টাকা ২ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)।