শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পুঁজিবাজারে ১০ হাজার কোটি টাকার ফান্ড দিচ্ছে না সরকার

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৪ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

পুঁজিবাজারের চলমান সংকট দূর করতে বিশেষ কোনো ফান্ড দিচ্ছে না সরকার। আস্থা ও তারল্য সংকটে 'মৃতপ্রায়' পুঁজিবাজারের লেনদেনকে চাঙ্গা করতে সরকারের কাছে স্বল্প সুদে ১০ হাজার কোটি টাকার ফান্ডের দাবি করেছিল মার্চেন্ট ব্যাংক এবং ব্রোকার হাউসের একটি অংশ। তাদের এই চাওয়া পূরণ হচ্ছে না। তবে আস্থা ও তারল্য সংকট কাটাতে পলিসিগত বেশ সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। সরকারের পদক্ষেপগুলো যৌক্তিক বলে মনে করেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, ২০১০ সালের ধসের পর সরকারের পক্ষ থেকে সহজ শর্তে ৯০০ কোটি টাকার একটি ফান্ড দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু সেই ফান্ড বাজারের জন্য কাজে আসেনি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারের জন্য প্রয়োজন সুশাসন। ভালো কোম্পানির আইপিওর অনুমোদন আর কারসাজি বন্ধ করা। এগুলো হলেই বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে বিনিয়োগকারীরা বাজারে ফিরবে। কখনোই ফান্ড দিয়ে পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করা যায় না।

নাম না প্রকাশের শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের একটি গ্রম্নপ আমাদের কাছে সহজ শর্তে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগের জন্য ফান্ড চেয়েছে। আমারা তাদেরকে বলেছি বিষয়টি দেখবো। যৌক্তিক হলে বিবেচনা করবো।

তিনি বলেন, প্রকৃত পক্ষে পুঁজিবাজারে ফান্ডের কোনো 'ক্রাইসিসি নেই'। বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে আস্থা পাচ্ছে না। তারা যে দাম দিয়েই শেয়ার কিনছে, তারপরের দিন সেই শেয়ারের দামই কমছে। ফলে আস্থা ফেরাতে যা করণীয় তার জন্য কাজ করছি। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের কাউকে কোনো ফান্ড দেওয়ার এখতিয়ারও নেই বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপিত ছায়েদুর রহমান বলেন, গত এক বছর ধরে চলা দরপতনে বিনিয়োগকারী, ব্রোকারেজ হাউজ এবং মার্চেন্ট ব্যাংক, কারও হাতে টাকা নেই। তাই নতুন করে বিনিয়োগ করতে পারছে না। ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন ২শ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। কারও কাছে টাকা নেই।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিন্টেমের অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে তারল্য সংকট রয়েছে। গত এক বছর ধরে বাজার খারাপ থাকায় তাদের পুঁজি অনেক কমেছে। কিন্তু তাই বলে বিশেষ কোনো ফান্ড পেলে বাজার ভালো হয়ে যাবে তা না।

তার জন্য ব্যাংক ও আর্থিক খাতের অব্যস্থাপনা এবং তারল্য সংকট দূর করতে হবে। পুঁজিবাজারের দুর্বল কোম্পানির আইপিও এবং পেস্নসমেন্টের অনৈতিক বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। সেকেন্ডারি বাজারের কারসাজি বন্ধ করতে হবে। তবেই পুঁজি হারিয়ে চলে যাওয়া বিনিয়োগকারী বাজারে ফিরবে। পুঁজিবাজারও চাঙ্গা হবে।

এদিকে একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজারে লক্ষ্যে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে অনাদায়ী ক্ষতির বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণে আরও দুই বছর সময় বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন(বিএসইসি)। ফলে মার্চেন্ট ব্যাংকের নিজস্ব ও গ্রাহকের পোর্টফোলিওতে পুনঃমূল্যায়নজনিত অনাদায়ী ক্ষতির বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারবে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে। ফলে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের সক্ষমতা আরও বাড়ানো হয়েছে।

অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। ব্যাংকগুলোও শেয়ার কিনে মার্কেট সার্পোট দিচ্ছে।

এছাড়া বিএসইসি পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বাড়ানো, মার্চেন্ট ব্যাংকার ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য কতিপয় সহজ শর্তে ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা করা, আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়ানো, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও দেশীয় বাজারে আস্থা সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া এবং বাজারে মানসম্পন্ন আইপিও বাড়াতে বহুজাতিকও সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তকরণের উদ্যোগ নিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<85641 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1