শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষিঋণের আদায় বেড়েছে কমেছে খেলাপি

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

নানা সুযোগ-সুবিধার পরও ব্যাংক খাতে বাড়ছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। তবে কৃষি খাতে বিতরণকৃত ঋণে খেলাপি কমেছে। চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) কৃষি খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরে একই সময় ছিল চার হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে বছরের ব্যবধানে ৬০৫ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ও পলিস্নঋণ বিষয়ক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বড় ঋণের তুলনায় কৃষিঋণের আদায় বেশি হয়। কারণ কৃষক ঋণ নিয়ে যথাসময়ে ফেরত দেয়ার চেষ্টা করেন। বাস্তবিক কারণ ছাড়া তারা খেলাপি হন না। তাই বিতরণ করা কৃষিঋণের আদায় বাড়ছে। ফলে এ খাতে কমছে খেলাপির পরিমাণ।

চলতি অর্থবছরে ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে জুলাই-জানুয়ারি প্রথম সাত মাসে বিতরণ হয়েছে ১৩ হাজার ১০৪ কোটি টাকা, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৫৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে চেয়ে এক হাজার তিন কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছরে একই সময় ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছিল ১২ হাজার ১০১ কোটি টাকা। প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, অর্থবছরের জানুয়ারি শেষে কৃষি খাতে মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঋণখেলাপি হয়েছে চার হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ। আলোচ্য সময় পর্যন্ত সরকারি ব্যাংকগুলোর ৩২ হাজার ৫৫ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপি রয়েছে চার হাজার ১০০ কোটি টাকা। বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর মোট ১১ হাজার ২৬২ কোটি টাকা কৃষিঋণের বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ২৮৭ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত অর্থবছরে কৃষি খাতে বিতরণকৃত ঋণ থেকে সাত মাসে আদায় হয়েছে ২০ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের তুলনায় বেশি। আগের বছরে একই সময়ে আদায় হয় ১৯ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। আদায় বেশি হওয়ায় কৃষি খাতে খেলাপি ঋণ কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি করা সেপ্টেম্বর '১৯ প্রান্তিকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকগুলোয় সেপ্টেম্বর শেষে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাড়িয়েছে ৯ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে অবলোপন বাদে খেলাপি ঋণ প্রায় এক লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশ। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা।

সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা ও পলিস্ন অঞ্চলের অর্থ প্রেরণের লক্ষ্যের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ২০১০ সালে কৃষিঋণ নীতিমালা তৈরি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতিমালা অনুযায়ী, সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিতরণ করা মোট ঋণের ২ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণ পলস্নী অঞ্চলে বিতরণ করতে হবে। পলস্নী অঞ্চলে অর্থ সরবরাহের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা ও খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টিতে সরকারের লক্ষ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক এ নির্দেশনা জারি করে। বেসরকারি ব্যাংকগুলো নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলে অনর্জিত লক্ষ্যমাত্রার সমপরিমাণ অথবা বিকল্পভাবে অনর্জিত লক্ষ্যমাত্রার ৩ শতাংশ হারে হিসাবায়নকৃত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হবে।

বিগত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো মোট ২৩ হাজার ৬১৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা কৃষি ও পলস্নীঋণ বিতরণ করেছে। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১০৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। বিগত অর্থবছরে মোট ৩৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪২৪ জন কৃষক কৃষি ও পলিস্নঋণ পেয়েছেন। যার মধ্যে নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশনের (এমএফআই) মাধ্যমে ১৬ লাখ এক হাজার ৮৫৬ জন নারী প্রায় সাত হাজার ১৯০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন।

ওই অর্থবছরে ২৯ লাখ ৮৯ হাজার ২৩৭ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষী বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৬ হাজার ৩২২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন। চর ও হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৯ হাজার ৯৫০ জন কৃষক প্রায় ৩১ কোটি ৬১ লাখ টাকা কৃষি ও পলিস্নঋণ নিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<89015 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1