বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
করোনার বিস্তার

ব্যাংকে গ্রাহক উপস্থিতি কম লেনদেনে বাড়তি সতর্কতা

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ মার্চ ২০২০, ০০:০০
বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন -ফাইল ছবি

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাংকগুলোতে বিভিন্ন সতর্কতার মধ্যে চলছে লেনদেন। তবে গ্রাহক উপস্থিতি কম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ অধিকাংশ ব্যাংক বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে। ব্যাংকের শাখাগুলোর ঢুকতে প্রধান গেটে সংক্রমণনিধন হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়া হচ্ছে গ্রাহকদের। থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে নির্ণয় করা হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা। তবে ব্যাংকগুলোতে গ্রাহক উপস্থিতি অন্যান্য দিনের তুলনায় কম।

এদিকে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বেশ সতর্ক। মুখে মাস্ক ও হাতে গস্নাভস পরে অফিস করতে দেখা গেছে অনেককে। রোববার রাজধানীর মতিঝিল এলাকার সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

রাজধানীর মতিঝিল পূবালী ব্যাংকের করপোরেট শাখায় গিয়ে দেখা যায়, ব্যাংকের প্রবেশ গেটে নিরাপত্তাকর্মী হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। কেউ ব্যাংকে প্রবেশ করলেই তার হাতে স্প্রে করছেন। ভেতরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সবাই মুখে মাস্ক পরে আছেন, তবে গ্রাহক উপস্থিতি কম। একই অবস্থা দেখা যায় বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকে।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকও করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বেশ সতর্ক। থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে নির্ণয় করা হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা। এরপর গ্রাহকের হাতে দেয়া হচ্ছে জীবাণু প্রতিরোধকারী তরল পদার্থ।

লেনদেন সম্পর্কে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল প্রধান শাখার মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মুদ্দাসসির হাসান জানান, আমাদের ব্যাংকের লেনদেনে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি বরং অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে লেনদেন বেশি ছিল। সকাল থেকে ব্যাংকে গ্রাহকের দীর্ঘলাইন। তবে টাকা জমা দেয়ার চেয়ে উত্তোলনের পরিমাণ বেশি।

তিনি জানান, অনেক গ্রাহক মনে করছেন যদি লকডাউন হয়ে যায়। তখন নগদ টাকা কোথায় পাব। এই আতঙ্কে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও বিভিন্ন আমানত স্কিমের টাকা উত্তোলনে গ্রাহকদের চাপ বেশি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে উলেস্নখ্য করে এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি দরজাতেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও থার্মাল স্ক্যানার স্থাপন করা হয়েছে। আমরা সাধ্যমত গ্রাহকদের সুরক্ষা দিচ্ছি।

তবে সরকারি ব্যাংকের গ্রাহক সংখ্যা বেশি থাকলেও উল্টো চিত্র বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে। গ্রাহক উপস্থিতি কম, প্রয়োজন ছাড়া কেউ আসে না ব্যাংকে।

এ বিষয়ে বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের মতিঝিল শাখার ম্যানেজার মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় আমাদের শাখায় গ্রাহকদের উপস্থিতি কমেছে। পাশাপাশি কমেছে লেনদেনও। তবে এটি বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন নয়। অন্যান্য স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় আজকের লেনদেন সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কম।

এদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে এরই মধ্যে গ্রাহকদের বিভিন্ন সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ব্যাংকাররা জানান, কেভিড-১৯ আতঙ্কে ব্যাংকের শাখায় গ্রাহকপর্যায়ে লেনদেন কমেছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আমদানি-রপ্তানির এলসি খোলার হারও অনেক কমেছে। করোনা মোকাবিলায় ইতোমধ্যে অনেক ব্যাংক এরই মধ্যে হ্যান্ড গস্ন্যাভস পরে লেনদেন বাধ্যতামূলক করেছে। প্রধান কার্যালয়, আঞ্চলিক কার্যালয় ও শাখায় প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান স্থগিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আবার গ্রাহকদের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্বে থেকে কথা বলতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রবেশমুখে সতর্কতামূলক নানা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

২১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে এই ভাইরাসে দুইজনের মৃতু্য হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থায় উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় অনলাইন ব্যাংকিং, অ্যাপ, মোবাইল ও এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর জোর দিতে এরই মধ্যে আগাম সতর্কতা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া জানুয়ারি-জুন সময়ে কেউ যথাসময় ঋণের অর্থ ফেরত দিতে না পারলে তাকে খেলাপি না করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমদানি পণ্য ও রপ্তানি মূল্য দেশে আনার সময়সীমা ১২০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১৮০ দিন করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<93758 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1