শেয়ারবাজারের অব্যাহত দরপতন ঠেকাতে নতুন সার্কিট ব্রেকার চালু করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এতে কিছুটা হলেও ঠেকানো গেছে পতনের মাত্রা।
নতুন সার্কিট ব্রেকারের কারণে বেঁধে দেওয়া সীমার নিচে নামতে পারছে না কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম। ফলে দাম না বাড়লেও পতন হচ্ছে না বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের। যে কারণে লেনদেনে অংশ নেওয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম অপরিবর্তিত থাকছে।
সার্কিট ব্রেকারের নতুন এ নিয়মে লেনদেন হওয়ায় গত সপ্তাহে যে কয়কটি প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে, বেড়েছে তার থেকে বেশি। ফলে ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাতও (পিই) কিছুটা বেড়েছে। তবে এখনো ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত সাড়ে ১১-এর নিচে রয়েছে।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ২৬ পয়েন্টে, যা সপ্তাহের শুরুতে ছিল ১১ দশমিক ২১ পয়েন্ট। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর পিই বেড়েছে দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট।
তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ ঝুঁকি নির্ণয় করা হয় মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও দিয়ে। যে কোম্পানির পিই যত কম ওই কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগে ততো ঝুঁকি কম।
সাধারণত ১০-১৫ পিই থাকা কোম্পানির শেয়ারের বিনিয়োগ করা ঝুঁকি মুক্ত ধরা হয়। আর ১০-এর নিচে পিই থাকলে ওই কোম্পানির শেয়ার দাম অবমূল্যায়িত ধরা হয়।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত বর্তমানে ১১-এর ওপরে থাকলেও ব্যাংক, টেলিযোগাযোগ এবং বিদু্যৎ ও জ্বালানি খাতের পিই ১০-এর নিচে অবস্থান করছে। এছাড়া বীমা এবং সেবা ও আবাসনের পিই সার্বিক বাজার পরিস্থিতির থেকে নিচে রয়েছে।
সব থেকে কম পিই রয়েছে ব্যাংক খাতের। নানা সমস্যায় জর্জরিত ব্যাংকের পিই রয়েছে ৬ দশমিক ৫২ পয়েন্টে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬ দশমিক ৩১ পয়েন্ট। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যাংক খাতের পিই দশমিক ২১ পয়েন্ট বেড়েছে।
পিই ১০-এর নিচে থাকা বাকি দুই খাতের মধ্যে টেলিযোগাযোগের পিই ৯ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ৯ দশমিক ৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বিদু্যৎ ও জ্বালানি খাতের পিই অবস্থান ৯ দশমিক ৭১ পয়েন্ট থেকে কমে ৯ দশমিক ৬০ পয়েন্টে রয়েছে।
পিই ১৫-এর নিচে থাকা খাতগুলোর মধ্যে সেবা ও আবাসনের পিই আগের সপ্তাহের মতো ১০ দশমিক ৬৭ পয়েন্টই স্থির রয়েছে। বীমার ১০ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ১০ দশমিক ৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এছাড়া তথ্য প্রযুক্তির ১৭ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট থেকে কমে ১৩ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে, প্রকৌশলের ১৪ দশমিক ৭৫ পয়েন্টে থেকে কমে ১৪ দশমিক ৪০ পয়েন্টে, বস্ত্রের ১৪ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে থেকে কমে ১৪ দশমিক ২২ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়নের ১৫ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ১৫ দশমিক ১০ পয়েন্ট, খাদ্যের ১৬ দশমিক ৬৮ পয়েন্টে থেকে বেড়ে ১৭ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট এবং চামড়ার ১৯ দশমিক ৭৬ পয়েন্টে থেকে কমে ১৮ দশমিক ৭৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
পিই ২০-এর ওপরে থাকা খাতগুলোর মধ্যে- বিবিধের ২১ দশমকি ৫১ পয়েন্ট থেকে কমে ২১ দশমিক ৪৪ পয়েন্টে, সিরামিকের ২২ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট থেকে কমে ২২ দশমিক ৪৩ পয়েন্টে এবং সিমেন্টের ২৯ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ২৯ দশমিক ৮০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাকি খাতগুলোর পিই ৩০-এর ওপরে অবস্থান করছে। এর মধ্যে ভ্রমণ ও অবকাশের ৩১ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ৩১ দশমিক ৭১ পয়েন্টে, পাটের ৩৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট থেকে কমে ৩২ দশমিক ৯১ পয়েন্টে, কাগজের ৪৩ দশমিক ৪১ পয়েন্ট থেকে কমে ৪১ দশমিক ১৪ পয়েন্টে এবং আর্থিক খাতের ৪৩ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ৪৪ দশমিক ১৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।