বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকের নগদ লভ্যাংশের প্রবণতা বেড়েছে

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৯ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

বছরের পর বছর ধরে লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার দেওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার প্রবণতা কিছুটা বেড়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর ২০১৯ সালের ঘোষণা করা লভ্যাংশের চিত্র পর্যালোচনা করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে ২০১৯ সালের সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ৬টি ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ৫টিই ২০১৮ সালের থেকে বেশি নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ব্যাংকগুলোর নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ বাড়াকে শেয়ারবাজারের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক সময় ব্যাংকের ওপরই শেয়ারবাজারের উত্থান-পতন নির্ভর করত। এখন শেয়ারবাজারে ব্যাংকের দাপট কিছুটা কমেছে। এরপরও অন্য যে কোনো খাতের থেকে এখনো ব্যাংকের ভূমিকা শেয়ারবাজারে সব থেকে বেশি। সুতরাং ব্যাংক কোম্পানিগুলোর নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ বাড়ালে তা সার্বিক শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

তাদের মতে, ২০১০ সালের মহাধসের পর শেয়ারবাজার আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এর প্রধান কারণ ব্যাংক খাতের দুরবস্থা। একের পর এক ব্যাংকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। এর সঙ্গে ব্যাংকগুলো লভ্যাংশ হিসেবে মাত্রাতিরিক্ত বোনাস শেয়ার দিয়েছে। এতে একদিকে ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা বেড়েছে, অন্যদিকে নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা কমেছে। যে কারণে কয়েক বছর ধরে বেশিরভাগ ব্যাংক লভ্যাংশের ক্ষেত্রে অনেকটাই বোনাস শেয়ার নির্ভর হয়ে পড়ে।

তারা বলছেন, ব্যাংকগুলো লভ্যাংশের ক্ষেত্রে বোনাস শেয়ার নির্ভর হয়ে পড়ায় বিনিয়োগকারীরা বাস্তবে খুব একটা লাভবান হননি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শেয়ারের মূল্যে। ফলে অনেক ব্যাংকের শেয়ার এখন নামমাত্র দামে বিক্রি হচ্ছে। তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে ৮টির শেয়ার দাম ফেস ভ্যালু বা ১০ টাকার নিচে অবস্থান করছে। আরও ৯টি ব্যাংকের শেয়ার দাম ফেস ভ্যালুর কাছাকাছি অবস্থান করছে। শেয়ারের দাম ২০ টাকা বা তার বেশি আছে মাত্র ৯টির। ব্যাংকের শেয়ারের এই চিত্র শেয়ারবাজারের দুরবস্থা আরও বাড়িয়েছে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৯ সালের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করা ব্যাংকগুলোর মধ্যে সব থেকে বেশি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক। এ প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারহোল্ডারদের ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে ১৫০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয় ব্যাংকটি। তার আগে ২০১৭ ও ২০১৬ সালে ৩০ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন ব্যাংক ২০১৯ সালের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি প্রতিষ্ঠানটির শেষ পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ নগদ লভ্যাংশ এটি। ২০১৮ সালে ব্যাংকটি শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দিয়েছিল। তার আগে ২০১৭ সালে ২০ শতাংশ নগদ, ২০১৬ সালে ২০ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার এবং ২০১৫ সালে ২০ শতাংশ নগদ ও ১৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয় ব্যাংকটি।

১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক। ব্যাংকটি নগদ লভ্যংশের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ারও দেবে। আগের বছর কোম্পানিটি শুধু ১৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দিয়েছিল। অবশ্য ২০১৮ সালের তুলনায় ব্যাংকটির নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ বাড়লেও তার আগের তিন বছরের তুলনায় কমেছে। কোম্পানিটি ২০১৭ সালে ১৭ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার, ২০১৬ সালে ১৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার এবং ২০১৫ সালে ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<95756 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1