বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাজেটে খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতে জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দের দাবি

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৫ মে ২০২০, ০০:০০

নভেল করোনাভাইরাস মহামারিতে চিকিৎসা সংকটের পাশাপাশি অতিদরিদ্র, দরিদ্র এবং নিম্নবিত্তসহ মধ্যবিত্তের একাংশ প্রচন্ডভাবে জীবিকা সংকটে পড়েছে। এদিকে এক মাস পরেই জাতীয় সংসদে আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপিত হবে। আগামী বাজেটে করোনা মোকাবিলা, দরিদ্র মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে আসন্ন বাজেটে জিডিপির অন্তত ৬ শতাংশ বরাদ্দ করা প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ' আয়োজিত 'আসন্ন বাজেট ও সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো, ড. নাজনীন আহমেদ, আইসিসিও কোঅপারেশন বাংলাদেশের কর্মসূচি প্রধান আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। আলোচনাপত্র উপস্থাপন ও অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবন রক্ষা দুটিই জরুরি। সরকার যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, তার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। আসন্ন বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতেই হবে। পাশাপাশি দরিদ্র ও অসহায় মানুষ যে মানবেতর অবস্থায় পতিত হচ্ছে, তাতে করে খাদ্য ও কাজের ব্যবস্থা করার উপর নজর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির বরাদ্দ বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রকৃত উপকারভোগীর কাছে যেন সে বরাদ্দ ঠিকভাবে পৌঁছায় সেজন্য এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ সেজন্যই বরাবরের মতো কাজ করে যাচ্ছে।

অধ্যাপক ড. এমএম আকাশ বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে আসন্ন বাজেটে বরাদ্দের ধরন তো অবশ্যই বদলে যাবে। স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা খাত এতে প্রাধান্য পাবে নিশ্চয়ই। স্বাস্থ্য বাজেট বর্তমানের ২৫ হাজার কোটি থেকে দ্বিগুণ করা দরকার। করোনা মোকাবিলায় হার্ড ইমিউনিটি কৌশলে এগোতে হলে ব্যাপক চেকআপের প্রয়োজন হবে, সেজন্যই এ বরাদ্দ দরকার। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির জন্যও প্রস্তাবনার চেয়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকা দরকার। তবে সেটার যথাযথ বাস্তবায়নটাই আমাদের দেশে বরাবরের সমস্যা। এখন কিছু মানুষ নতুন করে দারিদ্র্য পতিত হচ্ছে, ফলে সরকারের কাছে যে দরিদ্র মানুষের তালিকা রয়েছে, সেখানে নতুন মানুষকে যুক্ত করতে হবে।

ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, সরকারের প্রণোদনা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্যও রয়েছে, সেটা যেন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করতে হলে সাধারণ মানুষের, বিশেষত গ্রামের দরিদ্র উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থান সচল রাখতে হবে। এখানে ছাড় দিলে খাদ্য অধিকার ভয়াবহ সংকটের মধ্যে পড়বে। এছাড়া নারীদের পুষ্টিও কিন্তু বরাবরের মতো এ সময়ে আরও ঝুঁকির মুখে রয়েছে, সে ব্যাপারেও বিশেষ নজর দিতে হবে।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দের ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে, যা এ রকম মহামারি বা দুর্যোগকালে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। কর্মসংস্থানের জন্য কৃষি ও এসএমই খাতে অবশ্যই আসন্ন বাজেটে বিশেষ নজর দিতে হবে।

আলোচনাপত্র উপস্থাপনকালে মহসিন আলী বলেন, 'খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ' ২০১৫ সাল থেকে সকল মানুষের বিশেষ করে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টির অধিকার নিশ্চিত করতে, খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের দাবিতে এডভোকেসি ও ক্যাম্পেইন করে আসছে।

করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য 'খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ'-এর পক্ষে আসন্ন বাজেটে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে সরকারের উদ্যোগে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তিনি করোনা মহামারি মোকাবিলা, সকল দরিদ্রসহ উপার্জনহীন মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬ শতাংশ বরাদ্দ করার দাবি জানান।

এছাড়া বিবিএসের খানা জরিপের ভিত্তিতে দরিদ্র এবং কর্মহীন প্রতিটি পরিবারকে আগামী সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত প্রতি মাসে নগদ ৬ হাজার টাকা ভাতা প্রদান করাসহ আরও বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<99544 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1