শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

লো সালফার যুক্ত জ্বালানি তেল আমদানির ঘোষণা বিপিসির

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৬ মে ২০২০, ০০:০০

বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপথে চলাচলকারী জাহাজের ব্যবহারের জন্য পরিবেশবান্ধব 'লো সালফার' যুক্ত জ্বালানি তেল আমদানির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের শুরুতে অর্থাৎ জুলাই মাস থেকে এসব জ্বালানি তেলের আমদানি শুরু করা হবে। ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) নির্দেশনা অনুযায়ী এই 'লো সালফারযুক্ত' জ্বালানি ব্যবহারের জন্য ৫ বছর আগে নির্দেশনা ছিল। তবে বাংলাদেশে এখনো এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা যায়নি। কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি পরিবেশবান্ধব জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য আগামী সপ্তাহে বিপিসির শীর্ষ কর্মকর্তাদের জ্বালানি তেল সরবরাহকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।

বিপিসির তথ্যমতে, আগামী জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য ৮ লাখ ৭০ হাজার টন ডিজেল, ১ লাখ ২০ হাজার টন জেড ফুয়েল, ২০ হাজার টন ফার্নেস অয়েল, ৬০ হাজার টন অকটেন আমদানি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বিপিসি। এ লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করার পাশাপাশি জিটুজির ভিত্তিতে জ্বালানি তেল আমদানির প্রক্রিয়া চলছে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. সামছুর রহমান এ বিষয়ে জানান, সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহণে জাহাজগুলো বিভিন্ন দেশের বন্দরে অবস্থান করে। এ জাহাজগুলো তাদের চলাচলের জন্য জ্বালানি সে দেশ থেকেই সংগ্রহ করে। বাংলাদেশ থেকেও বিদেশি জাহাজগুলো ফার্নেস তেল সংগ্রহ করে। কিন্তু বাংলাদেশে যে তেল আমদানি করা হয়, সেগুলোতে বেশি পরিমাণ সালফারযুক্ত। যার কারণে বাংলাদেশ থেকে বিদেশি জাহাজগুলো কয়েক বছর জ্বালানি তেল সংগ্রহ করতে পারত না। সেজন্য আন্তর্জাতিকভাবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে 'লো সালফারযুক্ত' জ্বালানি তেল ব্যবহারের কথা থাকলেও আমাদের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমরা এই জ্বালানি আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেজন্য আমরা দরপত্র আহ্বান করেছি। এই জ্বালানি তেল আমদানি হলে পরিবেশদূষণের মাত্রা কমে যাবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে বিদেশি জাহাজে তেল সরবরাহে সমস্যা হবে না।

বিপিসির কর্মকর্তারা জানান, বিপিসি আগামী জুলাই থেকে সাড়ে ৩ শতাংশ সালফার জ্বালানি তেলের পরিবর্তে দশমিক ৫ শতাংশ সালফারযুক্ত জ্বালানি (অকটেন, ডিজেল) আমদানি করবে। বিপিসি জুলাই-ডিসেম্বরের মেয়াদে প্রায় ১০ লাখ ৭০ হাজার টনের বেশি লো সালফারযুক্ত জ্বালানি তেল আমদানি করবে।

\হএ ব্যাপারে এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে বিপিসি। এতদিন দেশের সামুদ্রিক জাহাজে সাড়ে ৩ শতাংশ সালফারযুক্ত জ্বালানি বা ফার্নেস অয়েল ব্যবহার হতো। আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার (আইএমও) নির্দেশনা অনুসারে, বিপিসি জুলাই থেকে সাড়ে ৩ শতাংশের তেল আমদানি বন্ধ করে দশমিক ৫ শতাংশ সালফারযুক্ত সামুদ্রিক জ্বালানি বা ১৮০ সিএসটির জ্বালানি তেল আমদানি শুরু করবে। এসব জ্বালানি আমদানি করার ব্যাপারে অবশ্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ও দীর্ঘদিন ধরে বিপিসিকে পরামর্শ দিয়ে আসছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) আমদানি করে ৫০০ পিপিএম মাত্রার জ্বালানি তেল। নতুন দরপত্রের মাধ্যমে এখন আমদানি করা হবে ৫০ পিপিএম মাত্রার জ্বালানি। এই মাত্রার জ্বালানি তেল পরিবেশবান্ধব বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এই লো সালফারযুক্ত জ্বালানি তেল ব্যবহারে কম মাত্রার কার্বন নিঃসরণ হয়, যা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং পরিবেশ দূষণ কম হয়। গুণগত মান ভালো হওয়ার কারণে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জ্বালানি তেলের প্রিমিয়াম (পরিবহণে জাহাজ ভাড়া ও ইন্সু্যরেন্স) বেশি নির্ধারণ করছে। সেক্ষেত্রে জাহাজ ভাড়াও বেড়েছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশে কম সালফারের তেল সরবরাহ না থাকায় অনেক বিদেশি জাহাজ তেলের সংকটে পড়েছে বলে বিপিসি সূত্রে জানা গেছে।

জ্বালানি তেলসংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম কমলেও পরিবহণ ভাড়া বেড়েছে। কারণ বিভিন্ন দেশ জ্বালানি তেলের দরপতনের সুবিধা নেওয়ার জন্য বড় বড় ট্যাংকার (মাদার ভ্যাসেল) ভাড়া নিয়ে তেল মজুত করে রেখেছে। এতে জ্বালানি তেল পরিবহণে জাহাজ সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহতা বাড়ার কারণে এবং তেল মজুতের কারণে জাহাজ ভাড়াও বেড়ে গেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<99652 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1