শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সবজি চাষে পাল্টে যাচ্ছে হালদা পাড়ের চিত্র

মো. রবিউল হোসেন, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
  ২৬ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:৪৯

কয়েক বছর আগেও খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঠ জুড়ে ছিল তামাকের দাপট। সম্প্রতি তামাকের আগ্রাসন থেকে বেরিয়ে এসে চাষিরা সবজি ও ফল-ফলাদি’র চাষাবাদ শুরু করেছে। এতে পাল্টে যাচ্ছে হালদা পাড়ের চিত্র।

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র সংরক্ষণ ও উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। হালদা নদীর গবেষকদের গবেষণায় এ নদীর বেহাল দশায় উঠে আসা কারন গুলোর মধ্যে অন্যতম কারন হালদার পাড়ে তামাক চাষ। তামাক হতে নির্গত হওয়া বিষাক্ত পদার্থ হালদার পানিতে মিশে দূষিত হতো পানি। এতে ব্যাহত হতো মাছের অবাধ চলাচল ও প্রজনন কার্যক্রম। ফলে হালদার পাড়ে তামাক চাষ বিকল্প জীবিকায়ণে বেসরকারী সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আইডিএফ) এর অর্থায়ণে কাজ করছে পল্লী কর্ম-সহায়তা ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। ইতোমধ্যে হালদা চর এলাকা উপজেলার যোগ্যাছোলা, গোরখানা, ছদুরখীল, তুলাবিলের শতাধিক তামাক চাষীদের বিকল্প জীবিকায়ন সৃষ্টিতে উন্নত জাতের ফল-ফলাদির চারা সরবরাহ ও শাক-সবজি’র বীজ, সার-ওষুধ এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ নানা বিষয়ে কাজ করছে কৃষি, মৎস্য, প্রাণী সম্পাদ বিভাগ, আইডিএফ ও পিকেএসএফ।

এতে করে সম্প্রতিকালে পাল্টে গেছে হালদাপাড়ের পরিবেশ। দৃশ্যমান হচ্ছে সবুজ শাক-সবজি ক্ষেতে কৃষকের গড়াগড়ি ও ফসলের সমারোহ। এভাবেই প্রতিনিয়ত পাল্টে যাচ্ছে হালদার পরিবেশ। ধীরে ধীরে হালদায় ফিরে আসবে মৎস্য প্রাণীর অভয়ারণ্য এমনটাই প্রত্যাশা মৎস্য বিশেষজ্ঞদের।

উপজেলার আছাদতলী এলাকার কৃষক মো. মছা মিয়া জানান, আছাদতলী ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় হালদার পাড়ের বিস্তীর্ণ জমিতে দীর্ঘদিন ধরে শুধু তামাকের চাষ হতো। তামাক ছাড়া ওই জমিতে অন্য কোনো ফসল হবে না বলে সবার ধারণা ছিল। তাই সারা বছর জমিতে তামাক দেখা যেত। তামাক চাষে লাভ বেশি ভাবা হলেও, এটি নিজের এবং পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বিশেষ করে হালদা নদীর ঐতিহ্য রক্ষায় আমরা তামাক ছেড়ে সবজি চাষ করছি।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার যোগ্যাছোলা, গোরখানা, ছদুরখীল, তুলাবিল এলাকায় তামাকের বিকল্প হিসেবে কৃষকরা আলু, টমেটো, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুন, ঢেঁড়স, শসা ইত্যাদি চাষ শুরু করেন। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখে সাফল্যের হাসি ফুটেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম মজুমদার বলেন, তামাক চাষের জমিতে এখানে সবজি চাষের বিপ্লব ঘটেছে। ফসলের বৈচিত্র্য আনার লক্ষ্যে শাকসবজির পাশাপাশি উন্নত ফল ও মাছ চাষেও সহযোগিতা করা হচ্ছে। ক্ষতিকর তামাক চাষে কৃষক যেন নিরুৎসাহিত থাকে, সে বিষয়ে পরামর্শ দিতে আমাদের মাঠকর্মীরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে