পাইকগাছায় ইটালিয়ান স্কোয়াশ সবজি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষক অহিদুজ্জামান লিটন। এ ধরণের বিদেশী সবজি অত্র অঞ্চলের মধ্যে এবারই প্রথম চাষ করেছেন কৃষক লিটন। ১ বিঘা জমি থেকে উৎপাদন খরচ বাদে নূন্যতম ১ লক্ষ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন কৃষক অহিদুজ্জামান।
অহিদুজ্জামান উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের বিরাশী গ্রামের বিল্লাল হোসেন মোড়লের ছেলে। অহিদুজ্জামান মূলত গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে কাজ করতো। করোনার কারণে সে বাড়ীতে চলে এসে কৃষি কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এক পর্যায়ে কৃষি বিভাগের পরামর্শে রাজবাড়ী এলাকা থেকে ইটালিয়ান হাই ব্রীড এফ-১ জাতের স্কোয়াশ সবজির বীজ সংগ্রহ করে বাড়ীর পাশে আগড়ঘাটা ব্লকে ১ বিঘা জমি লীজ নিয়ে বিদেশী এ সবজি চাষ শুরু করেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, স্কোয়াশ মূলত একটি বিদেশী সবজি। আমাদের দেশে ফরিদপুর এবং রাজবাড়ী এলাকায় এ সবজি কিছু কিছু চাষ হয়। এটি দেখতে অনেকটাই বাঙ্গীর মতো। এর গাছ সোজা উচু হয় কিন্তু উচ্চতা বেশি নয়। নভেম্বরের প্রথম দিকে এর চাষ করতে হয়। এটি মূলত শীতকালীন সবজি। বেলে দোয়াশ মাটিতে এর উৎপাদন ভালো হয়। পলেথিন সেড দিয়ে চাষ করতে হয়। ২/৩টি সেচ লাগে। বীজ বপনের ৫০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। এর জীবনকাল ৭৫ থেকে ৮০ দিন। স্কোয়াশের স্বাদ মিষ্টি কুমড়া ও লাউয়ের মতো। এতে প্রচুর ভিটামিন এ রয়েছে। ভাজি এবং তরকারি হিসেবে এটি খেতে হয়। প্রতিটি গাছে ১০ থেকে ১২টি ফল ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন ১ থেকে ২ কেজি হয়। বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ হয় ৫০ হাজার। বিক্রি হয় দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ তোফায়েল আহম্মেদ তুহিন জানান, কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের জিকেবিএসপি প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট কৃষককে প্রশিক্ষণ সহ সব ধরণের সহযোগিতা করা হয়। জৈব কৃষি ও জৈবিক বালাই ব্যবস্থাপনা প্রদশনী ক্ষেত হিসেবে স্কোয়াশ চাষের ক্ষেতটি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। কৃষক অহিদুজ্জামান জানান, বর্তমানে স্কোয়াশের প্রতিটি গাছ ফলে ফলে ভরে গেছে। প্রতিদিন যে ফল সংগ্রহ করা হয় তা স্থানীয় বাজারে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। আশা করছি খরচ বাদে ১ বিঘা জমিতে আমার ১ লক্ষ টাকা লাভ হবে। কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, এটিই অত্র অঞ্চলের প্রথম স্কোয়াশ সবজির চাষ। স্থানীয় বাজারে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। অহিদুজ্জামানের ভাল ফলন দেখে এলাকার অনেক কৃষক স্কোয়াশ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা কৃষি বিভাগ থেকেও স্কোয়াশ চাষের অনেক সম্ভাবনা দেখছি।
যাযাদি/এস