বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় আগাম জাতের আলু চাষে লাভবান চাষিরা

নওগাঁ প্রতিনিধি
নতুনধারা
  ০৬ জানুয়ারি ২০২১, ১৮:০৭

নওগাঁর বাজারে আগাম জাতের আলু উঠতে শুরু করেছে। নতুন আলুর ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। তবে শুরুতে আবহাওয়া অনুক‚লে না থাকায় যেমন দেরিতে রোপণ করতে হয়েছে বীজ তেমনি শীত ও কুয়াশার কারণে মড়কও দেখা দিয়েছে। এতে করে লাভের একটি অংশ কীটনাশক কিনতে খরচ হয়ে যাচ্ছে চাষিদের। গত দুই বছর থেকে আলুর দাম ভালো পাওয়ায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় প্রায় ২২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হয়েছে। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ লাখ আট হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে আগাম আলুর আবাদ হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। যেখানে সাদা পাপড়ি ৯৬০ হেক্টর, লাল পাপড়ি চার হাজার ৫২৫ হেক্টর এবং সাইটা জাতের আলু চার হাজার ১৬৫ হেক্টর। এছাড়া স্থানীয় জাতের আলুর আবাদও হয়েছে।

আলুর সবুজ পাতায় ছেয়ে আছে মাঠ। এমন দৃশ্য নওগাঁ সদর উপজেলার ছোট যমুনা নদীর চর শ্যামপুর গ্রামের মাঠে। চাষিরা কোথাও ক্ষেত থেকে আলু তুলছেন, আবার কোথাও মড়ক দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। আগাম আলু কার্তিক মাসে রোপণ করা হয়। প্রায় দুই মাসে এই আলু পরিপক্ব হলে তবেই বাজারজাত করা হয়। বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা জমিতে গিয়ে গাছসহ আলু কিনে শ্রমিকদের দিয়ে আলু উত্তোলন করছেন।

সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের কৃষক সাজেদুর রহমান বলেন, ভালো দাম পাওয়ার আশায় কার্তিক মাসে এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের পাপড়ি আলু রোপণ করেন। বীজ, হাল চাষ, সার, ওষুধ ও শ্রমিকসহ বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ১৫-১৮ হাজার টাকা। দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে আলু পরিপক্ব হয়ে উঠতে শুরু করেছে। তিনি প্রায় ৩৫ মণের মতো ফলন পেয়েছেন। শুরুতে ২ হাজার টাকা মণ হলেও বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। জমি থেকে আলু ওঠানোর পর সেই জমিতেই কপি ও পেঁয়াজ লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে খরচও কম পড়বে।

একই গ্রামের আলু চাষি আনিছুর রহমান বলেন, আড়াই বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। একদিকে ঘন বৃষ্টিপাতের কারণে আলু রোপণে বিলম্ব হয়েছে। অপরদিকে প্রচণ্ড শীতের কারণে আগাম জাতের আলুতে মড়ক দেখা দিয়েছে। মড়ক দমনে কীটনাশক দিচ্ছেন। এতে করে লাভের একটি অংশ কীটনাশক কিনতে খরচ হয়ে যাচ্ছে। তবে বাজারে ভালো দাম থাকায় লাভের আশা করছেন তিনি।

জেলার রানীনগর উপজেলার নান্দাইবাড়ী গ্রামের আলু চাষি ফজলু হোসেন জানান, কয়েক দফা বন্যায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি নামার পরপরই তিন বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছেন। ভালো ফলন এবং বাজারে ভালো দাম পেলে বন্যার ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শামছুল ওয়াদুদ বলেন, গত বছর আলুর দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর চাষিরা আরও বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। আগাম আলুর উৎপাদন কিছুটা কম হয়। তবে বাজারে ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন। এ বছর আলুর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে মনে করেন তিনি।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে