সমন্বিত সবজি চাষে বাম্পার ফনের আশাবাদী বালাগঞ্জের দুই যুবক

প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২১, ১৬:৩৬

বালাগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি

সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার পূর্বগৌরীপুর ইউনিয়নের নতুন সুনামপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম ছাখন ও নুরুল ইসলাম সমন্বয়ে চলিত মৌসুমে সমন্বিত সবজি চাষ করে আশানুরুপ বাম্পার ফলন হওয়ায় তাদের মনে আনন্দের জোয়ার বইছে ।

 

সরজমিনে তাঁদের মাশা'আল্লাহ সবজির প্রদর্শনীতে গিয়ে কাজের ফাকে কথা বলে জানা যায়, বিগত ২ বছর আগে অনকেটা সখ ও নিজেদের পরিবারের জন্য বিষমুক্ত সবজির চাহিদার পুরনে অল্প সমন্বিত সবজি চাষ করেন। কিন্ত প্রথম দিকে বিভিন্ন কারণে তেমন ভালো ফলন না হলেও পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে নিজেদের পরিজনদেরকেও সরবরাহ করেন।

এর পর থেকে ইন্টারনেট দেখে ও বিভিন্ন ব্যক্তির উৎসাহে গত ২ বছর থেকে বাণিজ্যিক ভাবে

তাদের বাড়ির পাশে প্রায় ৭০বিঘা জমিতে ১লক্ষ ৩০হাজার টাকা ব্যয় করে পনেরো প্রজাতির মৌসুমি ও আগত মৌসুমি সবজি চাষ করেন। এর মধ্যে গম ৫বিঘা, সূূর্যমুখী ১৭বিঘা, মিষ্টি কুমড়া ১৪বিঘা, ক্ষিরা (শসা) ৫ বিঘা, ধনিয়া ৭বিঘা, সরিষা ৫বিঘা, বাদাম ৭বিঘা, করলা ১বিঘা, কুমড়া ১বিঘা, ঢেঁড়স ও ডাটা ১বিঘা, তরমুজ (পরীক্ষা মূলক) ও ছিঁচিঙ্গা ১বিঘা, লাল শাক ১বিঘা, কচু ২বিঘা জমিতে চাষ করেছেন।

 

ইতিমধ্যে তাঁরা ৬২ হাজার টাকার ক্ষিরা (শসা) ১০ হাজার টাকার মিষ্টি কুমড়া, ২০ হাজার টাকার

সরিষা বিক্রি করেছেন।

এক দিকে  উৎপাদনে বাম্পার ফলন, অপরদিকে বাজারদর মোটামুটি ভালো থাকায় অল্প সময় ও পুঁজিতে অধিক মুনাফা পাবেন। দেখা যায়, স্থানীয় চাহিদার তুলনায় অধিক সবজির আবাদ ভালো হওয়ায় উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন এলাকায়ও সরবরাহ করছেন । চলতি সপ্তাহে কয়েক প্রজাতির উৎপাদন কৃত সবজি বিক্রির উপযুক্ত হয়ে যাবে। উৎপাদিত সবজি থেকে কত টাকা মুনাফা আসতে পারে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, কৃষি অফিসের বাজারমূল্যর মতে আগত ফসলীর ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।

 

মাশা'আল্লাহ প্রদর্শনীর পরিচারক নজরুল ইসলাম ছাখন জানান, বালাগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও আমাদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে  এই পর্যন্ত আশা। যদি প্রথম দিকে প্রয়োজনীয় পানির ব্যবস্তা থাকতো ও কৃষি অফিসের আরো তত্ত্বাবধান করা হত তাহলে আশাতীত ফলন হত।

তাদের এই চাষাবাদ দেখে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ খুশি এবং এগুলো দেখে অনেকই যুবক আগামীতে  এধরণের সবজি চাষ করতে আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।

 

বালাগঞ্জ উপজেলা কৃষিবিদ সুমন মিয়া বলেন, সৌরশক্তি ও পানি সাশ্রয়ী মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম 'মাশা-আল্লাহ' প্রদর্শনীতে যেস সবজি উৎপাদন করেছেন তাতে আমরা আনন্দিত। এগুলো দেখে আগামীতে উপজেলার অন্যান্য  চাষীরা আগ্রহের সাথে সবজি ক্ষেত করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সরকার কর্তৃক ভুর্তকি দিয়ে সূর্যমুখী তৈল নিষ্কাশন যন্ত্র আসলে এ সমিতির অগ্রাধিকার থাকবে এবং কৃষি অফিস তাঁদের কে সহযোগীতা প্রদান করা হবে।

 

উল্লেখ্য, বালাগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, লাউ, করলা, ঢেঁড়স, মুলা, লালশাক, পালং শাক, শিম ও ধনে পাতার চাষ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। চলতি মৌসুমে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১৮০৮০ হেক্টর।

 

যাযাদি/ এস