বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

​কটিয়াদীতে গরম বাতাসে ২৩শত হেক্টর জমি বোরো ধান জ্বলছে, কৃষকের মাতায় হাত

মাসুম পাঠান, কটিয়াদী ( কিশোরগঞ্জ)
  ০৭ এপ্রিল ২০২১, ১৮:৩৯

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে গরম বাতাসে ২৩শত হেক্টর বোরো ধানের জমি জ্বলছে যায়। নতুন ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন পূরণ হলো না কৃষকের। গত রোববার সন্ধ্যায় হঠাৎ দমকা বাতাসে কৃষকের বোরো ধানের পরাগরেনু ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় হতাশার ছাঁপ পড়েছে কৃষকের মুখে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ১২ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫১ হাজার ৪ শত মে. টন। এদিকে দমকা গরম বাতাসে কৃষকের ফসলের প্রায় ২৩'শ হেক্টর জমির পরাগরেনু আক্রান্ত হয়েছে। যার ২৫ শতাংশের ৫৭৫ হেক্টর জমির কৃষক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ফলে এবছর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রোববার দমকা গরম বাতাসে উপজেলার আচমিতা, মুমুরদিয়া, করগাঁও, চান্দপুর, বনগ্রাম, মসূয়া ও সহশ্রাম ধূলদিয়া হাওর এলাকার কৃষকের ফসর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ অঞ্চলের কৃষক বোরো ফসলের উপর নির্ভরশীল। এ ফসলের ওপর ভিত্তি করেই তাদের সংসার চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ধান বিক্রি করেন। কিন্তু দমকা গরম হাওয়ায় এবার কৃষকদের সোনালী স্বপ্ন ভেঙে গেছে।

কৃষকরা বলছেন, চলতি মৌসুমে বোরো আবাদে সোনালী স্বপ্ন দেখছিলেন তারা। এজন্য বিগত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ জমিতে বোরো আবাদ করেন কৃষকরা। কিন্তু, হঠাৎ দমকা গরম বাতাস তাদের সোনালী স্বপ্নে বাধা হয়ে দাড়ালো।

নাগেরগ্রামের কৃষক মোহাম্মদ হাফিজ মিয়া ৭ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। বোরো আবাদ করতে গিয়ে এই পর্যন্ত তারর খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। তিনি জানান, 'প্রতি বিঘা জমিতে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। জমির প্রায় ৮০ শতাংশ ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ফলে এ বছর উৎপাদন খরচ আর উঠবে কি না জানেন না এ কৃষক।'

মুমুরদিয়া গ্রামের হিরণ মিয়াও পাঁচ বিঘা জমির প্রায় ৮০ ভাগ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি জানান, 'তার বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রত্যাশার অর্ধেক ফসলও ঘরে উঠবে না।'

আচমিতা গ্রামের রমজান মিয়া জানান, গরম বাতাসে তার জমির অর্ধেকের বেশী পরাগরেনু সাদা হয়ে গেছে। চান্দপুর ইউপির চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন বলেন, 'তার ইউনিয়নের কৃষকদের জমিতেও এমন চিত্র দেখা গেছে। বেশীর ভাগ জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। তবে কিছু কিছু ধান ভালো রয়েছে।'

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মুকশেদুল হক জানান, 'গরম বাতাসে বিভিন্ন ইউনিয়নের ২ হাজার ৩ শত হেক্টর ফসলী জমি আক্রান্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক জরিপে ধারনা করা হচ্ছে। আক্রান্ত জমির ২৫ ভাগ ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।'

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে