নেত্রকোনার ডিঙাপোতা হাওড়ে স্থায়ী ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ

প্রকাশ | ২২ এপ্রিল ২০২১, ১৯:১৭

স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোনা

হাওড়পাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি অবশেষে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের ডিঙাপোতা হাওড়ের ফসল রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হচ্ছে ৫ দশমিক ৩ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধ। এতে করে অকাল বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে মোহনগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার বোরো ধান। 

 

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জেলার মোহনগঞ্জে ডিঙাপোতা হাওড়ের অস্থায়ী মাটির বাঁধ প্রায় প্রতি বছর উজান থেকে নেমে আসা ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাওড়পাড়ের হাটনাইয়া, ভাটিয়া, নারাইচ, মল্লিকপুর, নলজুরী, পালগাঁও, রানাহিজল, গাগলাজুর, পাবইসহ আশপাশের কমপক্ষে ১৫টি গ্রামের বোরো ফসলের। এতে করে একমাত্র বোরো ফসল হারিয়ে কপাল পোড়ে এলাকার হাজারো কৃষকের। এলাকার কৃষকরা সারাবছর অর্থকষ্টে ভোগেন। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিন দাবি ছিল ডিঙাপোতা হাওড়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ। গত ২০১৭ সালে ডিঙাপোতা হাওড়ে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে মোহনগঞ্জের কয়েক হাজার কৃষকের ১৫২ কোটি টাকার ধান সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হয়। এরপর হাওড়ের ফসল রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব ও বিমান বাংলাদেশ পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে উদ্যোগী হন। গত বছরের ২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহ সফরে এ প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করেন। ওই দাবির প্রেক্ষিতে নির্মিত হচ্ছে ব্লক বসিয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ। এবার বেড়িবাঁধে স্থায়ীকরণ উভয় পার্শ্বে উপরিভাগসহ সিসি ব্লক (পাথর, সিমেন্ট) বসিয়ে মোড়ানো হয়েছে। এতে করে হাওড়ের একমাত্র বোরো ফসল ডুবির আর শঙ্কা থাকবে না।

 

 ডিঙাপোতা হাওড়ের গাগলাজুর, মাঘান, সিয়াদার, হাইজদা বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকরা ব্লক বসিয়ে কাজ করছে। ফসলের মাঠ থেকে বাঁধ অনেকটা উঁচু। আবার অনেক জায়গায় হাওড়ের পানি নিষ্কাশনের জন্য কালভার্ট করে দেওয়া হয়েছে।

 

 মোহনগঞ্জের নলজুরী গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, এই বাঁধ হওয়ায় আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। এখন আর সহজে ফসল পানিতে ডুবে যাবে না। সরকার আমাদের দিকে চেয়ে আমাদের দাবি পূরণ করেছে। আমরা এলাকাবাসী সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। মাঘান গ্রামের কৃষক আবুল কাসেম বলেন, বাঁধ নির্মাণ হওয়ায় আমরা খুবই খুশি। এখন আর ফসল নষ্ট হবে না। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ হওয়ার কারণে অকাল বন্যার হাত থেকে আমাদের এলাকার ফসল রক্ষা পাবে। সারা বছর আমাদের সংসার চালাতে আর কোনো কষ্ট হবে না। মান্দারবাড়ি গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, হাওড়ের বাঁধ ভাঙার ফলে জীবন শেষ। এখন বাঁধ হওয়ায় আর ফসলহানির আশঙ্কা থাকবে না। তাই এ বাঁধ নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছি। এটাই এখন হাওড়ের কৃষকদের পরম পাওয়া।

  যাযাদি/এস