​বীজহীন লেবু চাষে সফল বিজ্ঞানীরা

প্রকাশ | ২৭ মে ২০২১, ২০:২৫

যাযাদি ডেস্ক

 

 

ভিয়েতনামের একটি স্থানীয় জাত থেকে জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করে দীর্ঘ সময় গবেষণার পর মেলে সফলতা। আশানুরূপ ফলন হওয়ায় ২০১৮ সালে ‘বিনালেবু-১’ কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য নিবন্ধিত করে জাতীয় বীজ বোর্ড।

 

ময়মনসিংহের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় ঘেঁষে গৌরীপুর উপজেলার কাশিয়ারচর এলাকায় পাঁচ একর জমি লিজ নিয়ে এ লেবু চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন বিনার বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে ময়মনসিংহসহ দেশের কয়েকটি অঞ্চলে চাষ হচ্ছে এ লেবু।

 

বিনালেবু-১ এর উদ্ভাবক ও বিনার উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, লেবু বাংলাদেশে জনপ্রিয় একটি টক জাতীয় ফল। আমরা ভিয়েতনাম থেকে এ লেবুর কৌলিক সারি সংগ্রহ করেছিলাম। পরবর্তীতে সারিটি লেবু চাষ উপযোগী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। এর ফলন ভালো হওয়ায় সরকার এটিকে একটি উচ্চ ফলনশীল লেবুর জাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

 

তিনি আরও বলেন, এ লেবুর বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে বারোমাসই ফলন দেয়। এটি সুগন্ধিযুক্ত ও বীজবিহীন। এটিতে রসের পরিমাণও বেশি এবং ভিটামিন-সি এর পরিমাণও বেশি। প্রতি গাছে প্রতি মৌসুমে ২৫০-৩০০ টি লেবু ধরে। এ লেবু চাষ অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় এর কদর দিনদিনই বাড়ছে।

 

প্রচলিত জাতের তুলনায় বিনালেবু-১’র ফলন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি। তাই এ লেবু চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। সেইসঙ্গে তৈরি হচ্ছে কর্মসংস্থানের সুযোগও। অন্যদিকে লেবু চাষের জন্য পতিত জমি লিজ দিয়ে উপকৃত হচ্ছেন জমির মালিকরাও।

 

গৌরীপুর উপজেলার কাশিয়ারচর এলাকার কৃষক ফজলুল হক বলেন, যে জমিটি লিজ নেওয়া হয়েছে এগুলো পতিত অবস্থায় ছিল। এই জায়গায় যে লেবুর এতো ভালো ফলন হবে তা কল্পনাতীত ছিল। এটি দেখে এলাকার যুবকরাও লেবু চাষে আগ্রহী হচ্ছে।

 

সারাদেশে চাষিদের মাঝে সুস্বাদু এই লেবুর জাত ছড়িয়ে দিতে উদ্যোক্তা তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম।

 

তিনি বলেন, বিনার উদ্ভাবিত লেবু চাষের মাধ্যমে এক বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ করেই বছরে লক্ষাধিক টাকা আয় করা সম্ভব। সেজন্য আমরা উদ্যোক্তাও তৈরি করছি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাধ্যমে আমরা এই লেবুর চারা কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিচ্ছি।

 

যাযাদি/এসআই