​স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের পুকুরে ‘সুবর্ণ রুই’

প্রকাশ | ১০ জুন ২০২১, ২১:০৪

যাযাদি ডেস্ক

দেশের পুকুরে প্রথমবারের মত অবমুক্ত করা হয়েছে চতুর্থ প্রজন্মের ‘সুবর্ণ রুই’। বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহে ভার্চুয়ালি রুই মাছের জাতটি মৎস্য অধিদপ্তর ও কয়েকজন হ্যাচারির মালিকদের কাছে অবমুক্ত করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ।

 

বিএফআরআই’র ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত ভার্চুয়াল ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ইনস্টিটিউিটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ।

 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ। ‘সুবর্ণ রুই’ নামকরণের ফলে চাষী, হ্যাচারি মালিক ও উদ্যোক্তাদের কাছে নতুন এ জাতটি বিশেষ গুরুত্ব পাবে এবং মাঠ পর্যায়ে দ্রুত সম্প্রসারিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

বিএফআরআই’র মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই এমন নামকরণ। রুই মাছের নতুন ওই জাতটি দ্রুত বর্ধনশীল, স্থানীয় জাতের চেয়ে ২০.১২ শতাংশ বেশি উৎপাদনশীল, খেতে সুস্বাদু এবং দেখতে লালচে ও আকর্ষণীয়। উন্নত জাতের নতুন উদ্ভাবিত রুই মাছ মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা হলে দেশে প্রায় আট টন মাছ বেশি উৎপাদন হবে।

 

তিনি আরও জানান, অধিক উৎপাদনশীল ও অন্তঃপ্রজনন সমস্যামুক্ত উন্নতজাতের চতুর্থ প্রজন্মের ‘সুবর্ণ রুই’ মাছ স্বাদুপানি ও আধা-লবণাক্ত পানির পুকুর, বিল, বাওড় এবং হাওরে চাষ করা যাবে। এতে সামগ্রিকভাবে দেশে প্রায় ৮০ হাজার কেজি বেশি মাছ উৎপাদন সম্ভব হবে। যার বাজার মূল্য দুই কোটি ৪০ লাখ টাকায় দাঁড়াবে। তাছাড়া, উন্নত এ জাতের রেণু পোনা হ্যাচারি থেকে সংগ্রহ করে নার্সারী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অনেকেই লাভবান হতে পারবে বলেও জানান ইয়াহিয়া মাহমুদ।

 

ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, হালদা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র উৎসের রুই মাছের মধ্যে দ্বৈত এ্যালিল ক্রসিং (di-allele crossing) এর মাধ্যমে ৯টি গ্রুপ থেকে প্রথমে বেইজ পপুলেশন (base population) তৈরি করা হয়। পরে বেইজ পপুলেশন থেকে সিলেকটিভ ব্রিডিং (mass selection) এর মাধ্যমে ২০০৯ সালে রুই মাছের উন্নত জাতের ১ম প্রজন্মের (F1) মাছ উদ্ভাবন করা হয়। যা বেইজ পপুলেশন থেকে ৭.৫ ভাগ বেশি উৎপাদনশীল। পরবর্তীতে সিলেকটিভ ব্রিডিং এর মাধ্যমে রুই মাছের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের ১২.৩৮ ও ১৬.৮৩ ভাগ বেশি উৎপাদনশীল জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।

 

সবশেষ ২০২০ সালে উন্নত জাতের চতুর্থ প্রজন্মের জাত তৈরি করা হয়েছে, যা স্থানীয় জাতের চেয়ে ২০.১২ ভাগ বেশি উৎপাদনশীল। এমনকি এই জাতের কৌলিতাত্ত্বিক অবদান স্থানীয় জাতের চাইতে বেশি বিশুদ্ধ বলে প্রমাণিত হয়েছে। মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে এ জাত অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।

 

যাযাদি/এসআই