মহেশখালীতে ভারী বর্ষণের কবলে পানচাষিরা দিশেহারা

প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০২১, ২১:৩৫

কক্সবাজার প্রতিনিধি

টানা পাঁচ দিনের ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের মহেশখালীতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রধান সড়কসহ গ্রামীণ অভ্যন্তরীণ ৪৫ কিলোমিটার রাস্তার  বেহাল দশা ফুটে উঠেছে। বিশেষ করে পাহাড় ধসে কয়েক শ পানের বরজ নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা কয়েক হাজার পানচাষি।

 

উপজেলার ইউনিয়নে পাহাড় ধস ও ঢলের পানিতে পানের বরজ নষ্ট হওয়ায় জীবিকা হারিয়ে চরম অর্থসংকটে কয়েক হাজার পানচাষি। বেশির ভাগ পানচাষিই এনজিও থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে নতুন বরজ রোপণ করেছিলেন। এতে চাষিরা কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।

 

হোয়ানক রাজুয়ার ঘোনার পানচাষি মো হারুন (৩৫) বলেন, ২৫ শতক জমিতে নতুন বরজ রোপণ করেছিলাম।  পাহাড় ধসে প্রায় ৪০ হাজার টাকার ক্ষতি হলো। কিস্তিতে ঋণ নিয়েছিলাম। এখন দুই মেয়ে এক ছেলের সংসার নিয়ে কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।

 

শামসুল আলম (৫৫) আরেক চাষি বলেন, ‘৫০ শতক জমিতে আড়াই লাখ টাকা খরচে নতুন পান বরজ রোপণ করেছিলাম। পাহাড় চাপায় ৩৫ শতক জমির বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। মোটামুটি ১৫ শতক জমির বরজ ভালো আছে। ঋণের টাকায় বরজ করে নিঃস্ব হয়েছি। খুবই কষ্টে আছি পরিবার নিয়ে। উপকরণের দাম বেশি হওয়ায় এ ক্ষতি আমরা পুষিয়ে উঠতে পারব না।

 

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা বিতরণ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে শনিবার থেকে মাতারবাড়ি, হোয়ানক, ছোট মহেশখালী, বড় মহেশখালী, কুতুবজোম ইউনিয়নে এ সহায়তা বিতরণ করা হয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহফুজুর রহমান।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত আট ইউনিয়ন ও এক পৌরসভার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ৪৭ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ১০ হাজার টাকা নগদ অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাহাড় ধসে নিহত দুই পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। মাতারবাড়ি, হোয়ানক, ছোট মহেশখালী, বড় মহেশখালী, কুতুবজোম ইউনিয়নে বানভাসি পরিবারের মাঝে ২৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

 

এদিকে উপজেলা প্রশাসন সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে প্রতিবেদন তৈরি করেছে, মহেশখালীতে রাস্তার ক্ষতি হয়েছে ৪৫ কিলোমিটার। এছাড়া পাহাড় ধস, ঢল ও জোয়ারের পানিতে ১ হাজার ২০০ বাড়ি ও ৮০টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। অতি বৃষ্টিতে ৪ ইউনিয়নের ৮৮ গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৪ হাজার ৫শ পরিবার এখনো পানিবন্দি রয়েছে।

 

মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক জানান , ‘টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। যাদের ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে তাদের ঢেউটিন বিতরণ করেছি। তাছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা দ্রুত সংস্কারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে ।

 

যাযাদি/ এস