শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সোনালী আঁশ পাট মণিরামপুর কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটিয়েছে

জি এম ফারুক আলম, মণিরামপুর (যশোর)
  ০৩ আগস্ট ২০২১, ১৭:৫৪

সোনালী আঁশ পাট কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে যশোরের মণিরামপুরে। ভাদ্র মাসে মুশলধারা বৃষ্টির পানি পাওয়ায় সময় মতো পাট কাটা, জাগ দেওয়া, আইশ ছাড়ানো এবং তা শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন কৃষককূল। কৃষি অফিসের তথ্যমতে গত বছরের তুলনায় এ বছর ৫২’শ হেক্টর জমিতে পাট চাষ বেশি হয়েছে । বাজার মূল্যও সন্তোষজনক থাকায় পাট চাষিরা খুব খুশি।

কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার মশ্বিমনগর, ঝাঁপা, শ্যামকুড়, খেদাপাড়া, রোহিতা ইউনিয়নে উল্লেখযোগ্য পাট চাষ করা হয়েছে। স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতার কারণে উপজেলার পূর্বাঞ্চলে আপাতত পাট চাষ সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে পাকা রাস্তার পশ্চিমেই পাটের আবাদ করেছেন চাষিরা বেশি। তবে শ্রাবণ মাসের শেষ পর্যায়ে জমি খালি করতে পাট চাষিরা পাট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চাষিরা পাটের জমিতে আমন ধান লাগানোর জন্য পাট কাটা, পাট পঁচানো জন্য জাগ দেয়া, জাগ দেয়া পাটের আইশ ছাড়ানো এবং তা আঁশ শুকাতে ফুসরত নেই চাষিদের।

লাউড়ি গ্রামের চাষি মিজানুর রহমান বলেন, অন্যান্যবার যে ভাবে পাট চাষ করা হতো, বোরো আবাদের প্রভাবের কারণে এবার তা একটু কমে গেছে। তবে পাটের বাজার মূল্য ভালো যাচ্ছে এবার। পাট চাষিরা এবার বেশ লাভবান হবে। খেদাপাড়া গ্রামের চাষি মোজাহার আলী সরদার ৩৩ শতকে তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন এবার। পাট কাটা শুরু করেছেন তিনি।

চাষি মোজাহার আলী সরদার এ প্রতিবেদককে বলেন, পাট উঠিয়ে জমিতে আবার আমন ধান লাগানো হবে। এ কারণে শ্রবণ মাসের মধ্যেই জমিতে আবার আমনের চারা রোপন করতে জমির পাট উঠাতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বীজ রোপন থেকে শুরু করে পাট ঘরে তোলা এ পর্যন্ত প্রতি বিঘা জমিতে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচা হয়েছে।

এমনকি চৈত্র মাসে সেচ দিয়ে লাগানো পাট ৩৩ শতকের একবিঘা জমিতে ১৪ থেকে ১৫ মণ পাট উৎপাদন সম্ভব। যা চলতি বাজার মুল্য হিসেবে ২৫ থেকে সাড়ে ২৫ হাজার টাকা পাট বিক্রি করা সম্ভব। এর বাইরে ৪ থেকে সাড়ে ৪’শ আটি পাটখড়ি হবে যা ১০ থেকে ২০ টাকা মুল্য বিক্রি করলে ৩/৪ হাজার টাকা আসবে। সবমিলিয়ে এ বছর পাটে ভালো অর্থ আসবে।

একই ভাবে হিসাব দিলেন খড়িঞ্চী গ্রামের চাষি আমিনুর রহমান। তিনি বিগত দিনে মণিরামপুরে যেভাবে পাট চাষ হয়েছে তা বর্তমানে বোরোর প্রভাবে সে পাট চাষ কমে গেছে। ভালো দাম পাওয়ায় পাটের জমিতেও বোরো চাষ করায় পাট চাষের উপর প্রভাব পড়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, তুলনামূলক ভাবে এ বছর মণিরামপুরে পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। গত বছর এ উপজেলায় পাট চাষ করা হয়েছিল ৪ হাজার ৮’শ হেক্টর জমিতে। সে তুলনায় এ বছর বৃদ্ধি পেয়ে ৫২’শ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এ বছর পাটের বাজার যেভাবে পাচ্ছেন চাষিরা সে তুলনায় আগামীতে পাট চাষ হয়তো আরো বৃদ্ধি পাবে।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে