বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

​ বাম্পার ফলন হলেও মুখে হাঁসি নেই চন্দনাইশের পেয়ারা ( গোঁয়াছি) চাষীর

মোহাম্মদ কমরুদ্দিন, চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ২৪ আগস্ট ২০২১, ২০:০৮

বৈশ্বিক মহামারী করোনা কেড়ে নিয়েছে পেয়ারা চাষীদের মনের আনন্দও। গত বছর ধরে লোকসান গুনছেন চন্দনাইশের পেয়ারা চাষীরা। স্বাদে- পুষ্টিতে ভরপুর চন্দনাইশের কাঞ্চন পেয়ারার কদর রয়েছে দেশব্যাপি। চন্দনাইশের পেয়ারা বাংলার আপেল নামে ও খ্যাত। দেশের গন্ডি পেরিয়ে চন্দনাইশের পেয়ারা যাচ্ছে এখন বিদেশে। চন্দনাইশের কাঞ্চন পেয়ারা খুবই সু-স্বাদু, চাহিদাও প্রচুর। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় পেয়ারাকে বলা হয় ‘গোঁয়াছি’। দেশের সুমিষ্ট পেয়ারা বলতে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চন নগরের পেয়ারাকেই বুঝায়। এখন চলছে এই পেয়ারার ভরা মৌসুম।

প্রতি মৌসুমে দক্ষিণ চট্টগ্রামে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বাগানে উৎপাদিত হয় ২০-৩০ কোটি টাকার পেয়ারা। চট্টগ্রাম শহর এবং জেলার সর্বত্র এখন দক্ষিণ চট্টগ্রামের পেয়ারায় সয়লাব। বাগানের মালিকরা প্রতিদিন ভোরে বাগান থেকে পেয়ারা সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার ১৬টি হাট ও খোলা জায়গায় বিক্রি করছেন। তবে সবচেয়ে বেশি পেয়ারা বেচাকেনা হয় চন্দনাইশ উপজেলার রওশন হাট এবং খাঁনহাট রেল ষ্টেশন মার্কেটে। তাছাড়াও , প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে পটিয়া কমলমুন্সির হাট , চন্দনাইশ বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা, বাদামতল এবং বাগিচাহাট ও দোহাজারীতে।

পেয়ারাচাষিদের সাথে আলাপকালে তারা যায়যায়দিন প্রতিনিধিকে জানান, খাঁনহাট রেল ষ্টেশন বাজারে প্রতিদিন ১ হাজার ভারের বেশি পেয়ারা বিক্রি হয়। এছাড়া উপজেলার বাদমতল, রওশন হাট বাগিচা হাট দোহাজারীর পেয়ারা চাষিরা পাহাড়ি অঞ্চলে উৎপাদিত পেয়ারা নিয়ে আসে লাল সালু কাপড়ে মোড়ানো ভারে করে। সেখান থেকে সংগ্রহ করে বেপারিদের হাত ঘুরে এ পেয়ারা চলে যায় দেশের প্রত‍্যন্ত অঞ্চলে । বংশ পরম্পরায় পেয়ারা চাষ ও বিক্রিতে নিয়োজিত এ অঞ্চলের সহস্রাধিক পেয়ারা চাষী।

লাল সালু কাপড়ে মোড়ানো দুটি বোঝা ( ১ ভাড়) বিশিষ্ট প্রতি ভাড় পেয়ারা বিক্রি হয় ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায়। কোনো কোনো ভাড় ১৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কমপক্ষে ১৫টি স্থানে দৈনিক কমপক্ষে ২০ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি হয়।

আলাপকালে একাধিক চাষিরা জানান গত বছর থেকে করোনা (কোভিড ১৯) এর কারণে লগডাউন থাকাতে তারা লাভের আশা তো দুরের কথা বাগানে কাজ করা শ্রমিকের মজুরিও আশা করতে পারছেন না তারা। গুনতে হচ্ছে এনজিও সহ বিভিন্ন ভাবে নেওয়া ঋনের লম্বা হিসাব। এছাড়া দক্ষিণ চট্টগ্রামে পেয়ারা সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ পেয়ারা নষ্ট হচ্ছে বলেও জানান তারা। এই এলাকায় একটি পেয়ারা সংরক্ষণের জন‍্য একটি হিমাগার স্হাপন হলে কিছুটা হলে ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারতেন বলে জানান একাধিক পেয়ারা চাষী।

চন্দনাইশ কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রায় সাড়ে ২ হাজার একর জমিতে পেয়ারা চাষ হচ্ছে। ছোট-বড় পেয়ারার বাগান আছে প্রায় সাড়ে ২ হাজার। এ সবের বেশিরভাগ বাগান গড়ে উঠেছে পাহাড়ি অঞ্চলে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে