পটলের দামে খুশি চাষীরা

প্রকাশ | ৩০ আগস্ট ২০২১, ১৯:৩৫

রুহুল আমিন, নওগাঁ প্রতিনিধি

 

কিছুদিন আগেও যেখানে পটলের দাম না পেয়ে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ চাষীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছিল। কিন্তু কয়েক দিনের ব্যবধানে সেই পটলের দাম পেয়ে খুশি তারা। বর্ষা মৌসুমে ক্ষেতে পটলের উৎপাদন যেমন বেশি হয় তেমনি দাম বাড়তির দিকে থাকে বলে জানিয়েছেন চাষীরা।

 

নওগাঁ সদর উপজেলার বর্ষাইল, র্কীত্তিপুর, হাপানিয়া ও বক্তারপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে এখন পটলের মাচার সমারোহ। চাষীরা পটলের ভাল দাম পাওয়ায় ব্যস্ত পরিচর্চায়।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় এ বছর জেলায় এক হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে পটলের আবাদ হয়েছে।

 

জানা গেছে, জমি প্রস্তুত করে চৈত্র মাসে পটলের চারা রোপনের পর বৈশাখ মাসে ফুল আসা শুরু হয়। এরপর পটল ধরতে শুরু করে। প্রায় পাঁচ মাসের এ সবজি বিঘা প্রতি লক্ষাধিক টাকার মতো বিক্রি হয়ে থাকে। এরমধ্যে প্রতি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার করে রোগবালাই ও পোকাদমনে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। যেখানে প্রতিসপ্তাহে ৬০০ টাক থেকে ৭০০ টাকার মতো কীটনাশকের পেছনে খরচ হয়। আশ্বিন মাসে পটল শেষ হওয়ার পর ওই জমিতে আলু রোপনের জন্য প্রস্তুত করা হয়।

 

প্রায় একমাস আগে প্রকার ভেদে প্রতিমণ পটল ৩৫০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এরপর ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা মণ। বর্তমানে প্রকারভেদে প্রতিমণ পটল ১২শ’ থেকে ১৩শ’ টাকা মণ পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি পেয়ে বেজায় খুশি চাষীরা।

 

সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের চকগোয়ালি গ্রামের পটলচাষী আব্দুর রহমান বলেন, তিনি এ বছর পাঁচ কাঠা জমিতে পটলের আবাদ করেছেন। জমি চাষ, সার, ঔষধ, শ্রমিক ও মাচা তৈরীতে প্রায় পাঁচ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। ২০-২৫দিন আগে যে পটল ৪০০-৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন সেখানে এখন ১২শ’ থেকে ১৩শ’ টাকা মণ পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে ক্ষেতে পটল ভাল হয় এবং দামও পাওয়া যায়। খরা হলে পটলের গাছ শুকিয়ে হলুদ হয়ে মারা যায়। ক্ষেতে প্রায় পানি দিতে হয়। এতে খরচটাও বেশি হয়। এই পাঁচ কাঠা জমি থেকে ২০-২৫ হাজার টাকার পটল বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদী।

 

একই গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন বলেন, সামান্য একটু জমিতে পটল করেছিলাম। কয়েকবার ক্ষেত থেকে পটল উঠানো হয়েছিল। কিন্তু গাছ হলুদ হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বাজারে পটলের দাম ভাল। দাম ভাল হয়ে আর কি হবে আমার তো আর ক্ষেতে পটল নাই।

 

চকআতিতা গ্রামের কৃষক জামাল বলেন, তিনি ১০ কাঠা জমিতে পটলের আবাদ করেছেন। পটলের ক্ষেত খুব সুন্দর হয়েছে। রোগাবালাই তেমন একটা না থাকায় উৎপাদনও ভাল হচ্ছে। বাজারে দামও বেশ ভাল। মাস খানেক এ দাম থাকলে বেশ ভাল লাভবান হতে পারবো।

 

নওগাঁ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মো: আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় ২১০ হেক্টর জমিতে পটলের উৎপাদন হয়েছে। পটলের খুব একটা রোগ বালাই হয়না। তারপরও কৃষকদের খরচ কমাতে কীটনাশকের পরিবর্তে সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এতে কীটনাশক মুক্ত সবজি পাওয়া যায়।

 

যাযাদি/ৎএস