শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জামালগঞ্জে রতনের গরু এবং মাছের খামারে বছরে আয় ১০ লাখ টাকা

নতুনধারা
  ২২ অক্টোবর ২০২১, ১৬:৫৯

শখের বসে জামালগঞ্জে তুফাজ্জল হোসেন রতন প্রথমে ১১টি গরু দিয়ে শুরু করলেও ৫ বছরের মাথায় তার খামারে গরুর সংখ্যা এখন ৬০টি। পাশাপাশি মাছ চাষ করেও বছরে আয় করেন ২ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর থেকে পেয়েছেন বেশ কিছু সম্মাননা এবং উপজেলার শ্রেষ্ঠ খামারী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তারই এই সফলতা দেখে উৎসাহী হয়ে আত্মকর্মী হয়ে উঠেছেন এলাকার অসংখ্য বেকার যুবক।

তুফাজ্জল হোসেন রতন জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কামলাবাজ গ্রামের মো. ফাইজুল মিয়ার ছেলে। বর্তমানে লেখাপড়া থাকা অবস্থায়ও কর্মজীবনে পৈতৃক বাড়িতে শখের বসে গরু পালন শুরু করেন। ধীরে ধীরে তার খামার বড় হতে থাকে। তিনি খামারের নাম দেন মায়ের দোয়া ডেইরি ফার্ম।

রতন দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে এক সঙ্গে গরু ও মাছ চাষ করে বছরে আয় করেন ১০ লাখ টাকার উপরে। তার খামারে তিনজন শ্রমিক কাজ করেন। তাদের পরিবারের ভরণপোষণ যোগান দেন খামারের পারিশ্রমিক পাওয়া অর্থ দিয়ে।

সরজমিনে দক্ষিণ কামলাবাজ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মায়ের দোয়া ডেইরি ফার্মে তার সফলতার চিত্র। গোয়াল ভরা গরু, পাশেই পুকুরে মাছের চাষ। মায়ের দোয়া ডেইরি ফার্মের মালিক তুফাজ্জল হোসেন রতন বলেন, বছর পাঁচেক আগে শখের বশে ১১টি গরু দিয়ে কামার শুরু করি। এর কয়েক মাস পরেই কোরবানীর ঈদে গরুগুলো বিক্রি করে দেই। এদে আমার লাভ হয় ১ লাখ টাকা। গরু পালনে লাভবান হওয়ায় পরবর্তী বছরে আবার গরু কিনে খামার তৈরি করি। এরপর ইউটিউভে দেখে কুমিল্লা থেকে উন্নত জাতের ৪টি দুধের গাভী কিনে আনি। গরুর খাবার ও রক্ষণাবেক্ষণে ৩ জন শ্রমিকসহ পরিবারের লোকজন সবসময় কাজ করে। প্রতি বছরে আমার খামারের গরুর দুধ বিক্রি করে যা লাভ হয় তা দিয়ে কাজের লোকের বেতন ও গরুর খাবারের খরচ হয়ে যায়।

রতন আরও বলেন, ডেইরি ফার্মের পাশাপাশি মাছের খামারের দেখাদেখি অনেকেই খামার ও মাছের পুকুর করেছেন। নতুন খামারীদের উদ্দেশ্যে রতন বলেন, একজন সফল খামারী হতে হলে আগে প্রশিক্ষণ এবং সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে। তাছাড়া শুরুতে গরু কিনতে সতর্ক থাকতে হবে। খামারের জায়গা করতে হবে খোলামেলা জায়গায়। প্রাণী সম্পদ অফিসের পরামর্শ মতে সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে হবে। এছাড়া সঠিক সময়ে গাভীকে ভ্যাক্সিন দিতে হবে। যারা ৫-১০ লাখ টাকা করচ করে বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে বিদেশে যাচ্ছেন এবং বিদেশে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা এই টাকা দিয়ে বেশি না হোক ৩-৪টি গরু দিয়ে খামার করেন। আশা করি দেশে বসেই বিদেশের চেয়ে বেশি টাকা উপার্জন করা সম্ভব হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবুল কাসেম বলেন, মায়ের দোয়া ডেইরি ফার্মের মালিক তুফাজ্জল হোসেন রতন গাভী এবং মাছ পালন করে উপজেলা সফল খামারী হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাকে অনুসরণ করে অনেকেই খামার করার কথা চিন্তা করছেন। এই খামারীদের আমরা বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে উৎসাহ যোগিয়ে যাচ্ছি। তার চেষ্টা আর উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে