গবাদিপশু খাদ্যের উচ্চমূল্যে বিপাকে প্রান্তিক খামারীরা

প্রকাশ | ২২ মে ২০২২, ২১:২১

আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর(গাজীপুর)প্রতিনিধি

যুদ্ধের কারনে আমদানি বন্ধ এমন অজুহাতে গাজীপুরের শ্রীপুরে গবাদিপশুর খাদ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে এতে মাথায় হাত পড়েছে প্রান্তিক খামার মালিকদের এদিকে, দাম বৃদ্ধির জন্য মিলারদের দায়ী করে ক্রেতাদের বুঝাতে রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন দোকানীরা দুই মাস আগেও পশুখাদ্যের দাম সহনীয় মাত্রায় ছিল সম্প্রতি সেই দাম চরম পর্যায়ে ঠেকেছে ফলে খামারিরা খামার টিকিয়ে রাখা নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা খাদ্য ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের এখনই লাগাম টেনে ধরা দরকার বলেও মনে করেন তারা

 

শুক্রবার (২০ মে) সরেজমিনে বাজারে গিয়ে জানা যায়, দুই মাস আগে এক কেজি গমের ভুসির দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, তা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায় ভুসির বস্তা প্রতি বেড়েছে ৭৫০ টাকা প্রতি কেজি খৈল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় দুই মাস আগে যে পালিশ-কুড়ো ২৫ থেকে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হতো, এখন তার দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা মরগীর খাবার তৈরির প্রধান উপকরন ভুট্টার দাম প্রতি বস্তায় ৮০০ টাকা বেড়েছে আরেক উপকরণ সোয়াবিন কিছুদিন আগেও বিক্রি হতো ৩০ টাকায় তা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি গত সপ্তাহে ৩০ টাকা কেজিতে গরুর ক্যাডল ফিড বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি এতে খাদ্যের জোগান দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও তারা বলছেন, কাস্টমার আমাদের কাছে দাম বাড়ানোর কারন জানতে চায় শ্রীপুর মধ্য বাজারের গবাদী পশুখাদ্য বিক্রেতা শামীম মিয়া বলেন, গবাদিপশুর খাদ্যের দাম ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের সাথে প্রতিনিয়ত ঝগড়া-বিবাদ হচ্ছে খামারিরা খাদ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছেন এমন থাকলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে আমাদের

 

গবাদিপশু খাদ্যের দাম বাড়ার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রান্তিক খামারিরা পৌর এলাকার লোহাগাছ গ্রামের জাকির হোসেন, কফিল উদ্দিন সরকারউপজেলার বরমী ইউনিয়নের ডালেশ্বহর গ্রামের গরুর খামারি বাবলু মিয়া, সাতখামাইর গ্রামের বিল্লাল, মাইজ উদ্দিন, গোসিংগা ইউনিয়নে পটকা গ্রামের হাসমত আলী, রমজান মিয়াসহ বেশ কয়েকজন বলেন, কৃষিকাজ বা অন্য পেশার পাশাপাশি বাড়িতে দু-একটি গরু মোটাতাজা করে বাড়তি উপার্জনের চেষ্টা করি তবে সম্প্রতি খৈল, ভুসি অন্যান খাদ্যের দাম এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে গরু পালন করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে

 

লোহাগাছ এলাকার রাফিন পোল্ট্রি ফিডের স্বত্বাধিকারী মোস্তাফিজুর রহমান ভুট্টো বলেন, পশুখাদ্যের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় ছোট-বড় সব ধরনের খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেক খামারী পোল্ট্রি শেড বিক্রি করে দেনা শোধ করছেন অনেকে আবার ভিটেমাটি বিক্রি করছেন খামারের অবস্থার জন্য বহুজাতিক কোম্পানি গুলোর আধিপত্য বিস্তারকে দায়ী করছেন তিনি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রুকুনুজ্জামান পলাশ যায়যায়দিনকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে এদেশেও বেড়েছে গবাদি পশুখাদ্যের দাম এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে প্রান্তিক খামারিদের ওপর তাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে খামারিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে বেশি বেশি উন্নত জাতের ঘাস চাষ পারিবারিক প্রক্রিয়ায় গবাদিপশু মোটাতাজা  করতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে

যাযাদি/এস