​​​​​​​ভাঙ্গুড়ায় নদীর পানি বৃদ্ধিতে ফসল তলিয়ে যাবার আশঙ্কা

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২২, ১৯:৫৮

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি

 

 

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বড়াল ও গুমানী নদীর পানি আকস্মিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গুমানী নদীর উত্তর অংশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুঁইবিল অবস্থিত বিকল প্রায় সুইচ গেট দিয়ে বিল অঞ্চলে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে।

 

এমতবস্থায় উপজেলার ধান অধ্যাষিত তিনটি ইউনিয়ন খানমরিচ, দিলপাশার ও অষ্টমনিষার প্রায় চার হাজার হেক্টর অধিক জমির পাকা ধান তলিয়ে যাবার আশঙ্কা করা হচ্ছে। উঠতি কাচা-পাকা ধানের জমিতে পানি ঢুকে পড়ায় কৃষকরা ধান কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কিছু সংখ্যক কৃষক কোমর পানিতে নেমে ধান কাটছেন। পানির মধ্যে পলিথিনের নৌকায় বোরো ধান পরিবহন করছেন কেউ কেউ। এলাকার কৃষকেরা অভিযোগ করেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুইচ গেটটি দীর্ঘদিন যাবত প্রায় বিকল অবস্থায় রয়েছে। গেইটে কর্মরত গেইটম্যান না থাকা এবং তা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দিন দিন সুইচ গেইটটি অনেকটা ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পুঁইবিল বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে নতুন করে সুইচ গেট নির্মাণের জন্য তারা দাবি জানিয়েছেন তারা।

 

ভাঙ্গুড়া উপজেলার পুঁইবিল- লক্ষীকোল-বাসুরিয়া মাঠের পাকা বোরো স্কীমের মালিক মোঃ বকুল সরকার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় গুমানি নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় সুইচ গেটের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে বোরো ধান প্রকল্পের ভিতরে পানি যাচ্ছে।

 

তিনি জানান, গত এক দিনে প্রায় তিন শতাধিক বিঘা জমির পাকা ধান তলিয়ে গেছে। সোমবার সকালে পানির গতি আরও বেড়ে গেছে। পুঁইবিল গ্রামের কৃষক আব্দুল আলিম বলেন, একদিনে গুমানি নদীর পানি প্রায় দুই হাত বৃদ্ধি পেয়েছে। রাতের মধ্যে সুইচ গেটের পুরানো দরজা ভেঙ্গে গেলে ইরি-বোরো প্রকল্প সয়লাব হয়ে যাবে। উপজেলার তারাপুর গ্রামের কৃষক সোহরাব হোসেন বলেন, খাওয়াসহ একজন শ্রমিককে ৮০০/১০০০ টাকা দিন দিয়েও ধান কাটার প্রয়োজনীয় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।

 

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে , এই ইরি-বোরো প্রকল্পের অভ্যন্তরে ভাঙ্গুড়া উপজেলার বিল অঞ্চলের দিলপাশার,অষ্টমনিষা ও খানমরিচ ইউনিয়নের প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান পেকে রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ এনামুল হক বলেন, ৩টি ইউনিয়নে ইরি-বোরো প্রকল্পের শতকরা ৩০ভাগ ধান কাটা হয়েছে। অবশিষ্ট জমির ধানও প্রায় ৯০ভাগ পেঁকে গেছে। তাই আকষ্মিক এ বন্যার পানি বৃদ্ধিতে আমরাও ফসল হানির আশংকা করছি। তিনি বলেন,পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঔই  সুইচ  গেটের দরজা বন্ধ ছিল, তাই আমরা আকস্মিক বন্যার বৃদ্ধি নিয়ে ভাবিনি। এখন দেখছি সুইচ গেইট বিনষ্ট, যার তলদেশ দিয়ে ইরি-বোরো এলাকায় পানি প্রবেশ করায় সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে।

 

পাবনা পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আল আমিন বলেন, গত বৃহস্পতিবার ১৯ মে উল্লেখিত সুইচ গেটের দরজা বন্ধ করা হয়েছে। তবে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে থাকলে পানি ঢুকতে পারে। ২১মে শনিবার পুনরায় চেক করার কথা থাকলে তাকে সুইচ গেইট এলাকায় পাওয়া যায়নি বলে এলাকার কৃষকেরা জানিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন,ঘটনাটি শুনেই সুইচ গেইট এলাকায় রওনা দিয়েছি। এছাড়া দ্রæত ব্যবস্থা নিতে কৃষি বিভাগ ও পাউবোকে জরুরী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

যাযাদি/এসএস