বানিয়াচংয়ে তলিয়ে গেছে আউশ ও রোপা আমন
প্রকাশ | ২১ জুন ২০২২, ১৫:১৩
উজানের ঢল ও কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি এবং বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় দেখা দিয়েছে বন্যা। এই বন্যার ফলে মানুষ যেমন পানিবন্দী হচ্ছে সেই সাথে ডুবে যাচ্ছে কৃষকের রোপণ করা আউশ ও রোপা আমনের ফসলি জমি ও বীজ তলা।
এ বন্যায় কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে মনে করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নে প্রায় ৫ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ও ১ হাজার ৬শ ৪০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান লাগানো হয়েছে । সরকারী হিসেবে অনুয়ায়ী ইতিমধ্যে বানের পানিতে তলিয়ে গেছে ১ হাজার ৬শ ৪০ হেক্টর আউশ ও ৫ হাজার ৬শ হেক্টর রোপা আমন ধানের জমি। সরকারী হিসেব অনুযায়ী টাকার অংকে ক্ষতির পরিমান দাঁড়ায় প্রায় ৬১ কোটি টাকা।
উপজেলার কামালখানী গ্রামের কৃষক আলফু মিয়া এবার ১০ বিঘা জমিতে প্রায় ৪০হাজার টাকা খরচ করে রোপা-আমন ধানের আবাদ করেছেন। তিনি জানান, এবার বন্যা হবে না মনে করে আমি রোপা-আমন ধান লাগিয়ে ছিলাম। হঠাৎ বৃষ্টিপাতে আর নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার পুরো ১০ বিঘা জমি ৪ দিন ধরে বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে তলিয়ে যাওয়ার জমির লাগানো ধানের চারা পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলার দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নের কালিকাপাড়া এলাকার চাষী আমিনুল ইসলাম জানান, এ বছর ৬০ একর জমিতে ধান নিজে রোপণ করেছেন। পুরো প্রজেক্ট জুড়ে পানি আর পানি। নদীর পানি এভাবে বাড়তে থাকলে ধানের চারা নষ্ট হয়ে অপূরণীয় ক্ষতি হবে বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এনামুল হক বলেন, চলতি বন্যায় ১ হাজার ৬শ ৪০ হেক্টর আউশ ও ৫ হাজার ৬শ হেক্টর রোপা আমন ধানের জমিসহ বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের চারা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। টানা বৃষ্টি আর বন্যার কারণে কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। এছাড়াও বন্যার পর ক্ষতি নিরূপণ করে তালিকা তৈরি করা হবে। সেই হিসেবে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে যদি বন্যার পানি দিন দিন বাড়তে থাকে তাহলে কৃষিতে ব্যপক ক্ষতি হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে বানিয়াচং উপজেলায় বন্যার কারনে বিভিন্ন উপজেলার প্রায় কয়েত হাজার মানুষ পানি বন্দী অবস্থায় রয়েছেন। তন্মধ্য দৌলতপুর ইউনিয়নের হাওরপাড়ের প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
মঙ্গলবার ওই সব আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মলয় কুমার দাস। এসময় বেশ কিছু পরিবারের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেন ইউএনও পদ্মাসর সিংহ।
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বানিয়াচং উপজেলা সকল প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্টানের প্রধানদের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ প্রদান করেন ইউএনও পদ্মাসন সিংহ।
যাযাদি/এস