বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মেহেরপুরে সূর্যমুখির বাম্পার ফলনের আশা চাষীদের

গোলাম মোস্তফা, মেহেরপুর প্রতিনিধি
  ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:১১

মেহেরপুর জেলায় সূর্যমুখি ফুলের হাসিতে ভরে উঠেছে মাঠগুলো। অধিক লাভের আশায় গত কয়েক বছর জেলায় কৃষি বিভাগের সহায়তায় প্রদর্শনী প্লট ও ব্যক্তি উদ্যোগে সুর্যমুখির আবাদ করছে চাষীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা সূর্যমুখী ফুলের ভাল ফলনের আশা করছেন। সুর্যমুখি শুধু একটি ফসলই নয় জমিতে এসে অনেক মানুষ এর ফুলে সৌন্দর্য্যে বিনোদনও নিচ্ছে। আবার অনেকে পরিবার সদস্যদের নিয়ে সূর্যমুখি ফুলের জমিতে গিয়ে ছবি তুলে আনন্দ উপভোগ করছেন।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কৃষি অফিসসহ ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন মাঠে প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখি ফুলের চাষ হয়েছে। কৃষি অফিসের আওতায় চাষ করা চাষীদের অফিস থেকে সার ও বীজ প্রণোদনা দিয়ে সূর্যমুখি ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। প্রদর্শনী প্রকল্পের আওতায় ধানসহ অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এই সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন চাষীরা।

সূর্যমুখি ফুল চাষী উপজেলার সদরের পৌরসভার চাষী বাবু মিয়া যায়যায়দিনকে বলেন, কৃষি অফিস থেকে বীজ পেয়ে ও তাদের সহযোগীতায় ১ বিঘা জমিতে সূর্যমুখি ফুলের চাষ করেছি। খরচ পড়েছে বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকা করে। বর্তমানে অধিকাংশ গাছেই ফুল ফুটেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকালে সুর্যমুখির বাম্পার ফলনের আশা করছি।

ব্যক্তি উদ্যোগে আবাদ করা চাষী সদর উপজেলার সামসুজ্জোহা যায়যায়দিনকে জানান, আমি ২০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখি ফুলের চাষ করেছি। গাছে ভালোই ফুল ফুটেছে। খরচ হয়েছে ৮ হাজার টাকা। ১০-১২ মন ফলন পাওয়ার আশা করছি। সেখানে বর্তমান বাজার দামে ২০-২২ হাজার টাকার বীজ বিক্রির আশা করছি। তিনি আরো জানান, জমিতে এসে অনেক মানুষ ফুলের সৌরভে বিনোদনও নিচ্ছে। আবার অনেকে পরিবার সদস্যদের নিয়ে সূর্যমুখি ফুলের সাথে ছবি ও সেলফি তুলে আনন্দ উপভোগ করছেন।

কৃষিবিদ রকিব উদ্দিন যায়যায়দিনকে জানান, সূর্যমুখী ফুলের চাষ করলে বীজ থেকে তেল, খৈল ও জ্বালানি পাওয়া যায়। ৪ কেজি বীজ থেকে কমপক্ষে ১ লিটার তৈল উৎপাদন সম্ভব। প্রতি বিঘা জমিতে ১৪-১৫ মণ বীজ উৎপাদন হয়ে থাকে। তেল উৎপাদন হবে প্রতি বিঘায় ১৫০ লিটার থেকে ১৮০ লিটার পর্যন্ত। প্রতি লিটার তেলের বাজার সর্বনিম্ন মূল্য ২৫০ টাকা। সূর্যমুখি ফুল চাষে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা। এছাড়া সূর্যমুখি বীজের তেল অধিক পুষ্টিগুন সম্পন্ন। তাই ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের জন্য এই তেল অন্যান্য তেলের চেয়ে অনেক উপকারী ও স্বাস্থ্য সম্মত।

কৃষি সম্প্রসাবরন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শংকর কুমার মজুমদার য়ায়যায়দিনকে জানান, সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে তেল উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্পন্ন। আমরা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বীজ ও সার প্রণোদনা দিয়ে সূর্যমুখি ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ করছি ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এটি একটি অধিক লাভজনক ফসল। কৃষকরা ধানসহ অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এই সূর্যমুখি ফুলের চাষ করলে অধিক লাভবান হবেন বলে মনে করছেন তিনি।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে