গাছে গাছে লিচুর মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ত লিচু চাষিরা

প্রকাশ | ১৭ মার্চ ২০২৪, ০৯:২৫

পাবনা প্রতিনিধি
ছবি-যায়যায়দিন

মৌমাছির আনাগোনো জানান দিচ্ছে গাছে গাছে মুকুলের সামরোহ। মুকুল পর্বেই লিচু চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক। পর্যাপ্ত মুকুল আসায় বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন লিচু চাষিরা। এ চিত্র লিচুর রাজধানী হিসেবে পরিচিত উত্তরের জেলা পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আওতাপাড়া গ্রামে লিচু বাগানের। এই জেলার সুস্বাদু আর রসালো লিচুর সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে।

সরেজমিনে পাবনা সদর ও ঈশ্বরদী উপজেলার বেশকিছু লিচু বাগান ঘুরে দেখা গেছে, চলতি মৌসুমে মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে লিচুর বাগান। মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়েছে। সেই গন্ধে পরাগায়নে ছুটে আসছে মৌমাছিরা। আশায় বুক বেঁধেছেন লিচু চাষীরা। জেলার সদর উপজেলা ছাড়াও ঈশ্বরদীর সিলিমপুর, সাহাপুর, রূপপুর, আওতাপাড়া, জয়নগর, চর রূপপুর, তিনগাছা, বাঁশেরবাদাসহ বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে লিচু আবাদ হয়ে আসছে। এখানকার উৎপাদিত লিচু চলে যায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে। 

অধিকাংশ বাগানে থোকায় থোকায় বের হয়েছে লিচুর মুকুল। বর্তমানে পানি, সার, কীটনাশক স্প্রেসহ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে লিচু চাষীদের। গতবছরের তুলনায় এবার মুকুল বেশি আশায় ভাল ফলন ও দাম পাওয়ার আশা তাদের। লিচুর বাগান পরিচর্যা করছিলেন আওতাপাড়া গ্রামের লিচু চাষী জসিম উদ্দিন। তিনি জানান, ‘গতবছর দেড় বিঘা জমির লিচু গাছ থেকে লিচু বিক্রি করেছিলাম ৩ লাখ টাকা। এবার যেমন মুকুল দেখছি তাতে ফলন বেশি হবে।’ 

আরেক চাষী ফয়েজ প্রামানিক বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এবছর অনেক বেশি মুকুল দেখতে পাচ্ছি গাছে গাছে। আমরাও খুব আশাবাদি যে এবার ফলন আরো ভাল হবে। গত বছরের শেষের দিকে খরায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছিল। এবার লাভবান হবো বলে আশা করছি।’

সাহাপুর গ্রামের লিচু চাষী শহিদ আলী বলেন, ‘লিচুর ফলন নির্ভর করে আবহাওয়ার উপর। এবার এখন পর্যন্ত যেমন আবহাওয়া দেখছি, তেমন যদি থাকে, বিরুপ না হয়, তাহলে বাম্পার ফলন হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে এখন বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি।’

এবার লিচুর ভাল ফলন আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগও। পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘সবজি বা পেঁয়াজ ছাড়াও পাবনা জেলা লিচুর জন্য সারাদেশে বিখ্যাত। এবার গাছে প্রচুর মুকুল দেখা যাচ্ছে। লিচু চাষিদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতায় কাজ করছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গতবছরের তুলনায় বেশি লাভবান হবেন চাষীরা।’

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছর পাবনায় ৪ হাজার ৭২১ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৭৮ মেট্রিকটন। টাকার অংকে প্রায় ছয়শ’ কোটি টাকার লিচু বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।

যাযাদি/ এস