বাদামের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা তিস্তার চরাঞ্চলে

প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০২ | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৬

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার অন্তর্ভুক্ত তিস্তা নদীর বুকে জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে এবার বাদামের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

 

সবুজে মোড়ানো চরজুড়ে এখন কৃষাণ কৃষাণীদের নিবিড় পরিচর্যায় বেড়ে উঠছে নয়ন জুড়ানো বাদামের ক্ষেত। স্থানীয় কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা আশা করছেন, এ বছর চাষকৃত প্রায় ১৭৫ হেক্টর জমি থেকে আনুমানিক ৩৩২ মেট্রিক টন বাদাম উৎপাদিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। 

 

চরাঞ্চলের কৃষকেরা শীতকালীন ফসল- আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও কুমড়া  ইতিমধ্যেই ঘরে তুলে নেওয়ার পর সে জমিতেই বাদামের চাষ করেছেন।

বর্তমানে বেড়ে ওঠা বাদাম গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তিস্তা অববাহিকার চাষীরা।

 

উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াশম গ্রামের কৃষক তহির উদ্দিন জানান, ‘আমি ১ একর জমিতে এবার বাদাম চাষ করেছি। এতে আনুমানিক খরচ হবে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে প্রতি একরে প্রায় ৪০ মন বাদাম পাওয়া যাবে। বাজারে দাম ভালো থাকলে ভালো লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।’

 

একই গ্রামের আরেক কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি মৌসুমে আমি ৪ একর জমিতে বাদাম চাষ করেছি। বীজ কিনেছি প্রতি কেজি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায়। বীজ বপন, কীটনাশক স্প্রে ও শ্রমিকের খরচসহ একর প্রতি খরচ হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে প্রত্যাশিতভাবে ৪০ মন বাদাম পাওয়া যাবে। তবে বাজারে যদি প্রতিমন ৩ হাজার ৫'শ থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়, তাহলে লাভবান হব। কিন্তু যদি দাম নিম্নগামী হয়ে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকায় নেমে আসে তবে লোকসানের মুখ দেখতে হবে।’

 

তিনি আরও জানান, বাজারে ভালো দাম না পাওয়ায় গত বছরে উৎপাদিত বাদাম  এখনও অনেকেই বিক্রি করতে পারেননি। বর্তমানে সেগুলো মাত্র আড়াই হাজার টাকা মনপ্রতি বাজার দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

 

তাছাড়া বাদাম ক্ষেতের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো পোকার আক্রমণ। যতই ওষুধ ব্যবহার করছে, ততই যেন পোকার আক্রমণ বাড়ছে, পোকারা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

 

বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের কৃষক হাসেন আলী জানান, ‘উচ্চমূল্যে বীজ কিনে আড়াই একর জমিতে বাদাম চাষ করেছি। ফলন ভালো হলে এবং বাজার দর অনুকূলে থাকলে ভালো লাভের আশা করছি।’

 

এ ব্যাপারে রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুন্নাহার জানান, চরাঞ্চলে এবার ১৭৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। শীতকালীন ফসল ঘরে তোলার পর কৃষকরা ওই জমিতে বাদাম চাষ করায় উৎপাদন খরচ কিছুটা কম হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং আগাম বন্যা না হলে এ বছর চরাঞ্চলে প্রায় ৩৩২ মেট্রিক টন পর্যন্ত বাদাম উৎপাদন হতে পারে।