'টাইগার মুরগি'র খামার করে সফল খামারী শামীম

প্রকাশ | ০৮ মে ২০২৫, ১৬:১৫

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

শেরপুরের নকলা উপজেলার পৌরসভাধীন পশ্চিম লাভা গ্রামের হারেজ আলীর ছেলে শামীম। তার দুই ভাই করেন চাকরি। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে সরকারি চাকরীর পেছনে না ছুটে তিনি হতে চেয়েছেন একজন উদ্যেক্তা।

২০২০ সালে শামীম শুরু করেন টাইগার মুরগি পালন। তিনি গাজীপুর থেকে মাত্র ১০ হাজার টাকার পুঁজি নিয়ে ১৫০ পিস টাইগার মুরগির বাচ্চা কিনে এনে লালন-পালন শুরু করেন। বছর খানে পরেই শামীন ঘুরে দাড়ান এবং গড়ে তোলেন ‘বন্ধন এগ্রো’ নামের খামার। নিজের খামার থেকে তিনি প্রতি সপ্তাহে ৬০০-৭০০ ও মাসে প্রায় ৩ হাজার ডিম উৎপাদনের পর তা থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে বিক্রি করেন। প্রতিটি বাচ্চা ৭৫ টাকা করে বিক্রি করেন।

এছাড়া, জন্ম নেওয়া বাচ্চার কিছুটা ঝুঁকি থাকে। যদি তিনি মুরগির বাচ্চা ঝুঁকি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন করে দেন সেক্ষেত্রে প্রতিপিস মুরগির বাচ্চার দাম আরও ২০ টাকা বৃদ্ধি পায়। টাইগার জাতের মুরগির ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে তা অন্য খামারিদের কাছে বিক্রি করে এখন তিনি মাসে আয় করছেন লাখ টাকা। তার কাছ থেকে বাচ্চা ও পরামর্শ নিয়ে অনেকেই শুরু করেছেন মুরগি লালন-পালনের কাজ। একটি খামার থেকে শামীম ৩টি খামারের মালিক।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির পাশে খোলামেলা যায়গায় উচু করে শেড তৈরি করে টাইগার জাতের মুরগি পালন করছেন শামীম।

খামারের একপাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে পানির পাত্র। সারিবদ্ধভাবে রাখা রয়েছে কাঠের তৈরি খাবারপাত্র। অন্যপাশে রয়েছে ডিম পাড়ার জন্য আলাদা আলাদা খাঁচা। বিদ্যুৎ চলে গেলে রয়েছে জেনারেটরের ব্যবস্থা। শামীমের এই খামারে ৭ থেকে ৮কেজি ওজনেরও মুরগি রয়েছে।

শামীম বলেন, প্রথমে মাংসের জন্য মুরগি পালন শুরু করি। ওই মুরগি বিক্রি করে লাভবান হই। এরপর টাইগার মুরগি পালন করে ডিম উৎপাদন শুরু করি। নিজইে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার কারণে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্য আমি নিজেই তৈরি করি ইনকিউব্যাটর। মোট ২১ দিনের মধ্যেই ডিম থেকে পরিপূর্ণ বাচ্চা হয়। একটি মুরগি থেকে প্রায় দুই বছরের মতো ডিম পাওয়া যায়।

মুরগি ডিম দেওয়া বন্ধ করে দিলে তখন সেটিকে আমি মাংসের চাহিদা মেটাতে বাজারে বিক্রি করে দেই। যখন যেমন দাম দর থাকে সে অনুযায়ী মুরগি বাজারে বিক্রি করা হয়।

স্থানীয়রা বলেন, আমি এই খামার দেখে অভিভূত হয়েছি। আমি কিছু দিনের মধ্যেই একটি খামার করবো। আমি মাঝে মধ্যেই এখানে এসে মুরগি লালন-পালন পদ্ধতি শিখি। এই মুরগির রোগ কম হয় বিধায় ঝুঁকি কম। তাই আমি মুরগি পালনের সাহস করছি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মুরগির ডিম উৎপাদন থেকে শুরু করে বাচ্চা ফুটানো, পরিচর্যা, বিক্রি সবকিছুই শামীম নিজেই করেন। তিনি ভালো করেই সব কাজ রপ্ত করেছেন। আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে তাকে। তার এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়।