আখাউড়ায় রামবুটান ফলে লাভবান প্রবাস ফেরত রাজু মোল্লা
প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২৫, ১৫:১০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় রামবুটান ফল গাছ রোপন করে লাভবান হয়েছেন মালয়েশিয়া ফেরত রাজু আহমেদ মোল্লা। শখের বসে মালয়েশিয়া থেকে একটি চারা এনে ফল বাগানে রোপন করেছিলেন।
সেই গাছ থেকে এখন বছরে ৩০/৩৫ হাজার টাকার রামবুটান বিক্রি করেন তিনি। রাজু মোল্লা আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী চাঁনপুর গ্রামের মরহুম নাছির মোল্লার ছেলে। প্রায় ১ একর ৮০ শতক জায়গা জুড়ে ফলের বাগান করেছেন তিনি। কাঁঠাল, লিচু, বড়ই, লেবুসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ রয়েছে রাজু মোল্লার বাগানে।
সরজমিনে রোববার সকালে রাজু মোল্লার ফুলকলি গার্ডেন হাউসে গিয়ে দেখা যায়, পাতার ফাঁকে চিকন ডালে থোকায় থোকায় রামবুটান ঝুলছে। রামবুটান দেখতে কদম ফুলের মতো। ফলটি কাঁচা অবস্থায় সবুজ ও পাকলে লাল বা গোলাপি রং ধারণ করে। ফলের ওপরের খোসা ছাড়িয়ে নিলে ভেতরের অংশ সাদা। অনেকটা লিচুর মতো। তবে আকারে লিচুর চেয়ে কিছুটা বড়। খেতে সুস্বাদু।
রাজু মোল্লা বলেন, আমি দীর্ঘদিন মালয়েশিয়া ছিলাম। ২০২২ সালে পরিবারের প্রয়োজনে দেশে ফিরে এসে কৃষি কাজটা মন থেকে বেছে নিলাম। হালাল পথে আয়-রোজগার করার এটা ভালো পথ। এটা করতে আমার ভালো লাগে। কৃষিকাজ-গাছের যতœ করে আমার সময় কেটে যায়। নিজে খাওয়ার পাশাপাশি ফল বিক্রি করে ভালো আয় হয়।
তিনি বলেন, ২০০২ সালে মালয়েশিয়া থেকে একটি রামবুটান ফলের চারা নিয়ে এসেছিলাম। বাবাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির আঙিনায় চারাটি রোপন করি। ৫/৬ বছর পর গাছে ফল আসতে শুরু করে। প্রথম কয়েক বছর অল্প পরিমাণে ফল আসতো। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। প্রতিবছর প্রায় ৩০/৪০ কেজি ফল আসে। ৩০/৩৫ হাজার টাকার ফল বিক্রি করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, কেউ চাইলে আমার কাছ থেকে রামবুটানের চারা কিনে রোপন করতে পারে। রামবুটান ফল চাষ করতে বাড়তি কোন পরিশ্রম করতে হয় না। লিচু গাছের মতই চারা রোপন করে দিলে আস্তে গাছ বড় হয়ে যায়। স্বাভাবিক যতœ নিলেই হয়। তবে এ গাছের শত্রæ বাদুড়, ইঁদুর ও পাখি। এ জন্য গাছে জাল দিয়ে পেঁচিয়ে দিতে হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই ফলটির জন্মস্থল মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া অঞ্চলে। এখন আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফলটি চাষ হচ্ছে। রামবুটান গাছে মার্চ মাসে ফুল ফোটা শুরু হয় এবং এপ্রিল মাসে কচি সবুজ রঙের ফল ধরতে আরম্ভ করে। ফুল ফোটার ৩-৪ মাস পর জুলাই-আগস্ট মাসে ফল পাকে। ফল পুষ্ট হলে সবুজ রঙের ফল হঠাৎ করে লাল, মেরুন রঙে রূপান্তর হতে থাকে।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাস্সুম বলেন, রামবুটান ফলটি লিচু পরিবারের। এটি মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় ও ভিয়েতনাম ইত্যাদি দেশে বেশি জন্মে। ফলটির খোসায় হালকা চুলের মতো আবরণে ঢাকা। ফলটির ভেতরে লিচুর মতো শ্বাস থাকে। খেতে সুস্বাদু ও মুখরোচক এবং রয়েছে ওষুধি গুণও। আখাউড়া উপজেলার পাহাড়ী এলাকা রামবুটান চাষের জন্য উপযোগি। চাষি রাজু মোল্লা চাইলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হবে।