‘ক’ বর্ণ দিয়ে ২৭ হাজার শব্দের গল্পগ্রন্থ

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:৪১

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

 

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সৃজনশীল লেখক ও কথাশিল্পী ইকবাল সর্দার মোঃ নাজমুল কবিরকে আর্থিক সহায়তা প্রদান ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তার লিখিত কেষ্ট কবির কষ্টগুলো, কেষ্ট কবির কনফারেন্স এবং কেষ্ট কবি এই তিনটি বই প্রচারের ঘোষনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই ঘোষনা দেন।

 

পিতার দেয়া নাম ইকবাল সর্দার মোঃ নাজমুল কবির। নামের আদ্যাক্ষর  দিয়ে ইসমোনাক ছদ্মনামে তিনি সাহিত্য রচনা করেন। আর পাঁচজন সাহিত্যিকের মতো তিনি কথার পিঠে কথা জুড়ে দিয়ে গল্প লিখেন না । তার সৃষ্টির ব্যতিক্রম দিকটি  হচ্ছে তিনি “ক” বর্ণ দিয়ে শব্দের মালা গেঁথে এ পর্যন্ত তিনটি গল্প গ্রন্থ  রচনা করেছেন। যার শব্দ সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজার। প্রতিটি বাক্যের প্রতিটি শব্দের  প্রথম বর্ণ হচ্ছে ‘ক’।

 

নিভৃতচারী এই কথাশিল্পী ইসমোনাক এতদিন লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মোঃ হায়াত উদ-দৌলা খাঁন তাকে আকস্মিকভাবে সাংবাদিকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।

 

এর আগে জেলা প্রশাসক মোঃ হায়াত উদ-দৌলা খাঁন বুধবার স্থানীয় সাংবাদিকদের  নিজে টেলিফোনে বৃহস্পতিবার দুপুরে  তার কার্যালয়ে  চা এর দাওয়াত দেন। কিন্তু আমন্ত্রনের উপলক্ষ বলেননি।

 

বৃহস্পতিবার সাংবাদিকরা আমন্ত্রন পেয়ে তার কার্যালয়ে হাজির হলে তিনি তাদের নিয়ে তার  সম্মেলন কক্ষে গিয়ে যান। পরে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার  সরাইল উপজেলার  নোয়াগাঁও গ্রামের প্রতিভাধর কথাশিল্পী ইসমোনাককে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে পরিচয করিয়ে দেন। 

 

এ সময় তিনি বলেন, দেশের আনাচে কানাচে অনেক প্রতিভাবান কবি শিল্পী সাহিত্যিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন যারা প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশের শিল্পসাহিত্যাঙ্গন আরো সমদ্ধ হবে। এ ঘরোয়া অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক কথাশিল্পী ইসমোনাকের হাতে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক প্রণোদন তুলে দেন এবং  ভবিষ্যতে তার পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

 

কথা সাহিত্যিক ইসমোনাক আবেগ আপ্লুত কন্ঠে বলেন, তিনি “ক” দিয়ে গল্প রচনা করতে  গিয়ে দীর্ঘ আট বছর ঢাকা কেন্দ্রীয়  পাবলিক লাইব্রেরি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরিসহ ঢাকার বিভিন্ন  বড় বড় লাইব্রেরি থেকে “ক” আদ্যাক্ষরের আড়াই লাখ শব্দ সংগ্রহ করেন। দীর্ঘ ২৪ বছরের সাহিত্য সাধনায় তিনি “ক” বর্ণ দিয়ে তিনটি গল্পগ্রন্থ রচনা করেছেন।

 

কেষ্ট কবির কষ্টগুলো, কেষ্ট কবির কনফারেন্স এবং কেষ্ট কবি এই তিনটি গ্রন্থের প্রথম গ্রন্থে “ক” বর্ণ দিয়ে ৭ হাজার শব্দ, দ্বিতীয় গ্রন্থে ১০ হাজার এবং তৃতীয় গ্রন্থে প্রায় ১০ হাজার শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এ সময় তিনি সাহিত্য সাধনা করতে গিয়ে চরম সামাজিক গঞ্জনা বঞ্চনার কথাও তুলে ধরেন । এমনকি চরম অর্থ কষ্টে তার সহধর্মিনী তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথাও তিনি আবেগ জড়িত কন্ঠে বর্ণনা করেন।

 

কথা শিল্পী ইসমোনাকের জন্ম  ১৯৬৭ সালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক। নব্বই এর দশকের প্রথম দিকে কয়েক বছর শিক্ষকতা করলেও সাহিত্যের নেশায় এ পেশায় স্থায়ী  হয়নি।

 

জেলা প্রশাসকের অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজনসহ জেলার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। 

 

যাযাদি/এস