বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন
প্রকাশ | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:১৫
বাংলা একাডেমির সভাপতি পদে নিয়োগ পেয়েছেন কথাসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক সেলিনা হোসেন।
বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা গেছে একুশে পদকপ্রাপ্ত এই কথাসাহিত্যিককে ৩ বছরের জন্য এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সেলিনা হোসেন প্রথম জীবনে কবিতা দিয়ে সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘উৎস থেকে নিরন্তর’। এ বছর প্রবন্ধের জন্য তিনি ডক্টর এনামুল হক স্বর্ণপদক পান। তিনি বাংলা সাহিত্যে যে বিপুল ও সমৃদ্ধ লেখা উপহার দিয়েছেন তা আমাদের সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। তাঁর লেখা সমাজ মনস্কতা ও বৈচিত্র্য নির্দেশ করে।
রাইজিংবিডিতে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে সেলিনা হোসেন বলেছেন: ‘যে আদর্শগত দিক শিক্ষাজীবনে গ্রহণ করেছিলাম তার প্রয়োগ ঘটিয়েছি লেখায়। তবে সরাসরি নয়। সৃষ্টি কাহিনি, চরিত্র, ঘটনা ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে। মানুষের ভালোমন্দের বোধ রাষ্ট্রীয় সম্পর্কের জায়গায় রেখে আমি রাজনীতির নানাদিকের প্রতিফলন ঘটাতে চাই। সবচেয়ে বড় কথা জনসাধারণের জীবন রাজনীতি বিচ্ছিন্ন নয়। রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করে মানুষ– এটাই আমার গভীর বিশ্বাস।’
১৯৭৩ সালে প্রকাশিত হয় সেলিনা হোসেনের প্রথম উপন্যাস ‘জলোচ্ছ্বাস’। তার ‘কালকেতু ও ফুল্লরা’ উপন্যাসে সামরিক শাসনের প্রসঙ্গ এসেছে। তিনি জীবনে বিরূপ অভিজ্ঞতাকেও নান্দনিক উপন্যাসে রূপান্তর করেছেন। ‘গায়ত্রী সন্ধ্যা’ সেলিনা হোসেনের একমাত্র উপন্যাস ত্রয়ী। ১৯৯৪ সাল থেকে যথাক্রমে পরপর এর খণ্ডগুলো প্রকাশিত হতে থাকে। উপন্যাসটির জন্য তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশন ফেলোশিপ পেয়েছেন। ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত তার গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস ‘যাপিত জীবন’।পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিভূক্ত উপন্যাসগুলোর মধ্যে এটি একটি।
সেলিনা হোসেন ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমির গবেষণা সহকারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে বাংলা একাডেমির প্রথম মহিলা পরিচালক নিযুক্ত হন। তিনি দীর্ঘ সময় উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, শিশু-কিশোর সাহিত্য, সম্পাদনাসহ সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অবদান রেখে চলেছেন। তাঁর উপন্যাস ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সেলিনা হোসেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, ফিলিপস্ সাহিত্য পুরস্কার, ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন।
উল্লেখ্য গত বছর ৩০ নভেম্বর বাংলা একাডেমির সভাপতি শিক্ষাবিদ, গবেষক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম মারা যান। সেই শূন্য পদে সেলিনা হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হলো।
যাযাদি/ এস